নিজস্ব সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: শীতের সময় পিকনিকের দাপট। যখন তখন জলাশয় থেকে জেলেদের মাছ ধরে নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা। এছাড়াও জলাশয়ের রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পরিযায়ী পাখিদের খাবারে টান পড়ছে। ফলে শীতের অথিতিদের আগমন কমে যাচ্ছে আলিপুরদুয়ারে। অন্যান্য বারের তুলনায় এবার শীতে তুলনামূলকভাবে কম সংখ্যায় এসেছে পরিযায়ী পাখিরা। এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পক্ষী প্রেমীরা।
[আইনি সহায়তার আশ্বাসে সুর নরম, টালিগঞ্জ-গড়িয়া রুটে ফের চালু অটো]
সম্প্রতি ‘ওয়েট ল্যান্ড ইন্টারন্যাশনালের’ উদ্যোগে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জলাশয়ে পরিযায়ী পাখি নিয়ে সমীক্ষা করা হয়। হিমালয়ান ‘নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন’ এই সমীক্ষার কাজ করে। উত্তরবঙ্গের চারটি জলাশয়ে এই সমীক্ষার কাজ করেছে তারা। শিলিগুড়ির ফুলবাড়ি, জলপাইগুড়ির গজলডোবা, আলিপুরদুয়ারের নারার থলি ও কোচবিহার জেলার রসিক বিলে এই সমীক্ষার কাজ করে ন্যাফ ( হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন) সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে উত্তরবঙ্গের অন্য তিন জলাশয়ে গতবছরের তুলনায় বেশি সংখ্যায় পরিযায়ী পাখি এলেও আলিপুরদুয়ারের নারার থলি জলাশয়ে গত বছরের তুলনায় এবার কম সংখ্যায় পরিযায়ী পাখি এসেছে। তবে অন্যান্য জলাশয়গুলোতে পাখির সংখ্যা বাড়লেও গত দশ বছরের তুলনায় পাখি কম পরিমাণে আসছে বলে জানিয়েছেন ন্যাফের কো-অর্ডিনেটর অনিমেশ বোস।
তিনি বলেন, “কোচবিহারের রসিক বিল গোটা রাজ্যে পরিযায়ী পাখিদের অন্যতম আস্তানা ছিল। গত ১০ বছরের তুলনায় এখন অনেক কম প্রজাতির পাখি আসছে এই বিলে। যা উদ্বেগজনক। উল্টো ছবি বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলের নারার থলি জলাশয়ের। এ বছর এই জলাশয়ে কিছু কম পাখি এলেও দশবছর আগের তুলনায় এই জলাশয়ে পাখিদের আগমন বেড়েছে। এই বছর বিশেষ কারণে এই নারার থলিতে জলাশয়ে পাখিদের আগমন কমেছে।”
সাম্প্রতিক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, রসিকবিলে এবছর ৪৯টি প্রজাতির ৩৮৯৮টি পাখি এসেছে। গত বছর এই বিলে ৫০টি প্রজাতির ৩৩৯৮টি পাখি এসেছিল। আলিপুরদুয়ারের বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলের নারারথলি জলাশয়ে ২৮টি প্রজাতির ১১২৮টি পাখি এসেছে। গতবছর এই জলাশয়ে ৩০টি প্রজাতির ১৩০৪টি পাখি এসেছিল। জলপাইগুড়ির গজলডোবা জলাশয়ে এ বছর ৬৭টি প্রজাতির ৯০০০ পাখি এসেছে।
[খাস শিলিগুড়িতে দাপাল হাতি ও চিতাবাঘ, ঘুম ছুটল শহরবাসীর]
গত বছর এই জলাশয়ে ৬৮টি প্রজাতির ৭০০০টি পাখি এসেছিল। শিলিগুড়ির ফুলবাড়ি জলাশয়ে এই বছর ৬৩টি প্রজাতির ৭০২০টি পাখি এসেছে। গত বছর এই জলাশয়ে ৬২টি প্রজাতির ৫৩৮৭টি পাখি এসেছিল। পরিবেশপ্রেমী সংগঠন ন্যাফের কো-অর্ডিনেটর অনিমেশ বসু বলেন, “উত্তরবঙ্গের জলাশয়গুলোকে পরিযায়ী পাখি আসার উত্তম পরিবেশ রয়েছে। শুধু এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি। জলাশয় রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গে আশপাশের পরিবেশ পাখিদের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.