শেখর চন্দ্র, আসানসোল: শিল্পাঞ্চলে হাজির ডুবডুবি পাখি। এই প্রথম শীতের দেশ থেকে দক্ষিণবঙ্গে হাজির হয়েছে অতি সুদৃশ্য কমন মার্গেনসার বা ডুবডুবি পাখি। বার্নপুরের দামোদরের ভুতাবুড়িতে দেখা মিলছে তাদের। পক্ষী বিশেষজ্ঞরা জানান, এতদিন খুব বেশি হলে ৫-৬ টি ডুবডুবি শীতের সময় দেখা যেত তিস্তার আপার গাজোলডোবা অঞ্চলে। বেশি সংখ্যায় এদের উপস্থিতি পাওয়া যায় অরুণাচল প্রদেশ, অসমে। কিন্তু বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বর্ধমান, বীরভূম, মেদিনীপুরে কখনই এই পাখির উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
প্রতিবছরই জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি মাসে দুর্গাপুর বনবিভাগ এবং একটি সংগঠনের পর্যবেক্ষকেরা জেলার গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমি গুলিতে পরিযায়ী পাখি ও স্থায়ীভাবে বসবাসকারী পাখিদের সংখ্যা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি বিষয় খুঁটিয়ে দেখেন। বার্ষিক এই পর্যবেক্ষণ জলাশয়গুলির পরিবেশগত অবস্থা এবং বাস্তুতন্ত্র সম্বন্ধে একটি ধারণা পেতে সাহায্য করে। এ বছরও সেই পর্যবেক্ষণ চলাকালীন বিভিন্ন পরিযায়ী পাখি যেগুলি দশকের পর দশক ধরে এইসব অঞ্চলে আসছে তাদের সন্ধান মিলেছে। কিন্তু সেসব ছাপিয়ে এবার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সন্ধান মিলেছে বার্নপুর এলাকায় ডুবডুবি পাখির উপস্থিতি।
পক্ষী বিশেষজ্ঞরা জানান, এই পাখিটি বাংলায় এতটাই বিরল যে ইংরেজি থেকে বাংলায় এর নাম খুব একটা প্রচলিতই হয়নি। তবে আনন্দের এই সংবাদের সঙ্গেই অশনি সংকেত রয়েছে চিত্তরঞ্জনের জলাশয় গুলিতে পরিযায়ী পাখির ক্রমশ কমতে থাকা সংখ্যায়। চিত্তরঞ্জন রেল শহরের জলাশয় গুলির মধ্যে সবচেয়ে করুণ অবস্থা কর্নেল সিং পার্ক জলাশয়ের। প্রতিবছরই তার আগের বছরের তুলনায় এখানে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কম হচ্ছে। পরিযায়ী পাখিরা সাধারণত তাদের পূর্ববর্তীদের পথ অনুসরণ করে শীতের দেশ থেকে পাড়ি দেয়। বেশ কয়েক বছর পরিযায়ী পাখিরা চিত্তরঞ্জনমুখী না হওয়ায় তাদের পরবর্তী বংশধরেরা এই জলাশয়ে আর আসছে না। যা উদ্বেগজনক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.