সংবাদ প্রতিদিন ডিডিটাল ব্যুরো: শনিবার বুলবুলের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরদ্বীপ ও পাথরপ্রতিমার বিভিন্ন এলাকা। প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও হাজার-হাজার মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে। একাধিক এলাকায় ছিঁড়ে পড়েছে বিদ্যুতের তার। উপড়ে গিয়েছে খুঁটি। ফলে সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত ওই দুই বিধানসভা এলাকা। রবিবার সকালে সাগর ও পাথরপ্রতিমার বিধায়ক, গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি ও প্রশাসনের আধিকারিকরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে পড়ে থাকা গাছ কাটিয়ে রাস্তা পরিস্কার করান সিপিএম নেতা কান্তি গাঙ্গুলি। অন্যদিকে, পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করলেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের হাতে সাহায্যও তুলে দেন তিনি।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মূলত দাপট দেখিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগর এবং পাথরপ্রতিমা এলাকায়। সাগরে বুলবুল আছড়ে পড়েছিল ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে। সাগর ব্লকের রুদ্রনগর, ধবলাট ও গঙ্গাসাগর এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয় নামখানা ব্লকের মৌসুনি, বকখালির ফ্রেজারগঞ্জ ও নামখানা এলাকায়। রুদ্রনগর, গঙ্গাসাগর, মৌসুনি ও ফ্রেজারগঞ্জ এলাকায় দশ হাজারেরও বেশি মাটির বাড়ি ভেঙে পড়ে। প্রচুর বড় বড় গাছ উপড়ে পড়ে। সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত সাগর ও নামখানা ব্লকে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে সাগরের ঘোড়ামারাতে এই ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাপক প্রভাব পড়ার যে আশঙ্কা করা হয়েছিল ততটা হয়নি। কারণ, ঘোড়ামারা থেকে আগেভাগেই ২৩০০ বাসিন্দাকে আশ্রয় শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
বিধায়ক জানান, সাউঘেরির কাছে নদীর জল পাড় ভেঙে গ্রামে ঢুকে পড়ে। পাথরপ্রতিমার জি-প্লট গ্রাম পঞ্চায়েতের গোবর্ধনপুর, ইন্দ্রপুর, দাসপুর, কৃষ্ণদাসপুর, সীতারামপুর ও দক্ষিণ সুরেন্দ্রগঞ্জ এলাকায় ব্যাপক প্রভাব ফেলে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর জানা জানান, সীতারামপুর ঘাট থেকে ছ’শো মিটার দক্ষিণে ব্রজবল্লভপুর, শ্রীধরনগর, গোপালনগর, রামগঙ্গা ও লক্ষ্মীজনার্দনপুর এলাকার বেশ কিছু জায়গায় নদী বাঁধের অবস্থা বিপজ্জনক। দ্রুতই সেগুলি মেরামতের জন্য সেচদপ্তরকে জানানো হয়েছে। একই অবস্থা পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি, খেজুরির বিস্তীর্ণ এলাকা। ভেঙে পড়েছে একাধিক বাড়ি ও গাছ। রাস্তায় গাছ পড়ে বিপর্যস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা। শনিবার রাতেই বুলবুলের জেরে মৃত্যু হয়েছে ১ মহিলার। রবিবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি মৃতার ছেলের চিকিৎসার ভার নিলেন পরিবহণমন্ত্রী।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার বৈভব তেওয়ারি জানান, বুলবুলের ধ্বংসলীলা থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতে প্রায় আড়াইশো জন পুলিশ কর্মী এবং বারোশো সিভিক ভলান্টিয়ার সাগর, নামখানা, বকখালি, জি-প্লট, পাথরপ্রতিমা ও ফ্রেজারগঞ্জ এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছিল। দুর্যোগ সম্পূর্ণ না কাটা পর্যন্ত এবং আশ্রয় শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষজনের ঘরে না ফেরা পর্যন্ত পুলিশ এবং উদ্ধারকারী দলের প্রতিনিধিদের এলাকায় মোতায়েন রাখা হবে।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.