দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: ভোটপ্রচার, নাগরিকদের সমস্যার কথা শুনতে দেখা গিয়েছে বিধায়ককে। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মায়েদের সঙ্গে ফুচকা খেতে দেখেছেন বিধায়ককে। এ দৃশ্যের সাক্ষী থাকার সৌভাগ্য আপনার হয়নি তাই তো? কিন্তু এমনই ঘটনা ঘটল চুঁচুড়ার একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে। সেখানে একেবারে অন্য মেজাজে ধরা দিলেন বিধায়ক অসিত মজুমদার। পড়ুয়াদের মায়েদের আবদার রাখতে দেদার ফুচকা খাওয়ালেন তিনি। খেলেন নিজেও।
মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সুবিধায় বিভিন্ন ব্যবস্থা করা হয়েছে। পড়ুয়াদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও যাতে কোনো দুর্ভোগের শিকার হতে না হয় তার জন্য নানা ব্যবস্থা করেছেন চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার। পরীক্ষাকেন্দ্রের কাছে বসার টেন্ট, পর্যাপ্ত পানীয় জল ও শৌচালয়ের ব্যবস্থা করেছেন তিনি। পরীক্ষার প্রথম দিনই চুঁচুড়ার একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে অভিভাবকদের ফুচকাও খাইয়েছিলেন বিধায়ক। কিন্তু সে খবর চাপা থাকেনি। অন্যান্য পরীক্ষাকেন্দ্রের বাবা-মায়েদের কানেও সে কথা পৌঁছে গিয়েছিল। পরীক্ষার দিনগুলিতে নিজের বিধানসভা এলাকার পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে বিধায়ক নিজে ঘুরে পরীক্ষার্থী ও তাদের বাবা-মায়েদের খোঁজখবর নেন তিনি।
বৃহস্পতিবার চুঁচুড়ার ২ নং কাপাসডাঙায় সতীন সেন বিদ্যাপীঠে পৌঁছনো মাত্রই পরীক্ষার্থীদের মায়েরা তাঁকে চেপে ধরেন। আবদার করেন ফুচকা খাওয়ানোর। বিধায়ক অসিত মজুমদারও পরীক্ষার্থীদের মায়েদের আবদার ফেলতে পারেন নি। তাদের আবদার রাখতে ঢালাও ফুচকার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু মায়েরাও বিধায়ককে ছাড়তে নারাজ। দাবি করেন, অভিভাবকদের সঙ্গে বিধায়ককে ফুচকা খেতে হবে। নয়তো তাঁরা ফুচকা খাবেন না বলেই জানান। পরীক্ষার্থীদের মায়েদের নিরাশ করেননি বিধায়ক। তাঁদের সঙ্গে রীতিমতো কবজি ডুবিয়ে ফুচকা খান অসিত মজুমদার। খুশি অভিভাবকারাও। তারাও মন খুলে ফুচকা খেলেন। কেউ আবার বললেন, ‘ঝাল বেশি দাও’। কেউ বললেন, ‘টকটা কম হয়ে গিয়েছে’।
অভিভাবক সঙ্গীতা বসু রায় বলেন, “আগের দিন শুনেছিলাম চুঁচুড়ার অন্য একটি স্কুলে বিধায়ক ফুচকা খাইয়েছেন। ভাবছিলাম আমরা মিস করলাম। আমরা মায়েরা নিজেদের মধ্যেই আলোচনা করছিলাম আমাদের কপালে ফুচকা নেই। এই আলোচনা করতে করতেই বিধায়ক এসে হাজির। আমরা শুধু বললাম আমরা কি দোষ করেছি? আমাদের আজ ফুচকা খাওয়াতে হবে। এরপর আর মুখ থেকে কোনো কথা খসাতে হয়নি। এক কথায় উনি আমাদের আবদার মেনে ফুচকা খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছেন। এ যেন মেঘ না চাইতেই জল। আমরাও ছেলেমেয়েদের পরীক্ষার দুশ্চিন্তা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পেয়েছি।” অভিভাবকরা জানান, বিধায়কের এই ব্যবহার সত্যিই অকল্পনীয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.