চন্দ্রজিৎ মাজুমদার, কান্দি: মজবুত সেতু। তারপরও দৌলতাবাদে ব্রিজ ভেঙে নদীতে পড়ল বাস। মৃত্যুমিছিল। ডোমকলের এই ঘটনায় সিঁদুরে মেঘ দেখছে মু্র্শিদাবাদের কান্দি। এই মহকুমার পরিবহণ ব্যবস্থা বাসের উপর দাঁড়িয়ে। বাসের যাত্রাপথে রয়েছে অজস্র সেতু। যার অধিকাংশই বিপজ্জনক।
[এখনও ভৈরবীর জলে ১৫ জন, নদীপারে উৎকণ্ঠায় নিখোঁজদের পরিজনরা]
সোমবার ডোমকলের ঘটনায় চিন্তিত কান্দি মহকুমার যাত্রী থেকে প্রশাসন। কারণ মুর্শিদাবাদ জেলার এই মহকুমার বাসিন্দারা পুরোপুরি বাস নির্ভর। কারণ এখানে তেমন রেল যোগাযোগের ব্যবস্থা নেই। কান্দি থেকে সাঁইথিয়া, শিলিগুড়ি, সালার, বর্ধমানে বাস যায়। এই রুটগুলির প্রায় প্রতিটিতে দুটো বা তিনটে নদী রয়েছে। প্রতিটি নদীর উপর রয়েছে সেতু। যার অধিকাংশই ব্রিটিশ আমলের। কান্দ-সালার সড়কে ময়ূরাক্ষী, কানা, কুয়ে নদী রয়েছে। এই তিনটি সেতুর গড় বয়স চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ বছর। বহু আগে ক্ষতিগ্রস্ত ঘোষণা হয়েছে। তবুও প্রাণ হাতে নিয়ে চলছে যাত্রা। কান্দি-সাঁইথিয়া রুটি দুটি সেতু রয়েছে। এর মধ্যে একটি বর্তমান সরকার বছর খানেক আগে সংস্কার করেছে। আর একটি সেতুতে বাম আমলের পর আর কোনও কাজ হয়নি। কান্দি-বহরমপুর রুটে দুটি সেতু রয়েছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল রণগ্রাম ব্রিজ। এই সেতুর নিচে রয়েছে দ্বারকা নদী। ব্রিজটার হাল এতটাই খারাপ যে এখন থেকে কোনও গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারালে ৫০-৬০ ফুট নিচে পড়বে। আরও একটি বিপজ্জনক ব্রিজ হল কান্দি জীবন্ত-গাঁতলা সেতু। প্রণব মুখোপাধ্যায় অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন এই সেতু তৈরি হয়। তারপর রেলিং ভেঙে গেলেও তেমন রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। সব মিলিয়ে কান্দি মহকুমার ১৫-২০টি সেতু উদ্বেগ বাড়ানোর পক্ষে যথেষ্ট।
[‘চালককে কান থেকে ফোন সরাতে বলেছিলাম, একবার যদি কথাটা শুনত!’]
জেলায় যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘাটে তার জন্য এখন থেকে উদ্যোগ নিয়েছেন কান্দির মহকুমাশাসক অভীককুমার দাস। রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তিনি। অভীক দাস জানান, কান্দি মহকুমায় সেতুগুলির খুব খারাপ অবস্থা। সেতুগুলিতে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ প্রহরার জন্য জেলা পুলিশের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। যতদিন সংস্কার না হচ্ছে ততদিন যান নিয়ন্ত্রণ করার কথা বলা হয়েছে। মহকুমা শাসকের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন কান্দির কংগ্রেস বিধায়ক অপূর্ব সরকার ও কান্দির মহকুমা তৃণমূল সভাপতি গৌতম রায়। যাত্রীরা বলছেন দ্রুত কাজ শুরু না হলে বিপত্তি ঘটে যেতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.