শাহজাদ হোসেন ও চন্দ্রজিৎ মজুমদার: তাঁরা যাচ্ছিলেন চক্ষু শিবিরে যোগ দিতে। উদ্দেশ্য গ্রামের লোকেদের বিনামূল্যে পরিষেবা দেওয়া। মহৎ কাজে গিয়ে চিরতরে হারিয়ে গেলেন দুই স্বাস্থ্যকর্মী। মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন আরও এক চিকিৎসক। বহরমপুর থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে রঘুনাথগঞ্জে যাচ্ছিলেন চারজন। উল্টো দিক থেকে আসা একটি লরি তাঁদের ধাক্কা মারে। সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুল্যান্সটি আগুন ধরে যায়। তার ফলে এই মর্মান্তিক ঘটনা।
[এবার পাঠ্যক্রমে পকসো, মানব-পুতুলে ‘ভাল-খারাপের স্পর্শ’ শিখবে খুদেরা]
শুক্রবার মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের মথুরাপুর এই ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে দ্রুত গতিতে যাচ্ছিল অ্যাম্বুল্যান্সটি। তাঁদের ধারণা, ভুল করে অন্য লেনে গাড়িটি ঢুকে পড়ে। সেই সময় ফরাক্কা থেকে বহরমপুরের দিকে একটি লরি যাচ্ছিল। লরিটির অ্যাম্বুল্যান্সের মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। দুর্ঘটনার তীব্রতায় অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যে থাকা সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ ঘটে। তার জেরে গাড়িটি দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে। এলাকার বাসিন্দারা গাড়ি থেকে যাত্রীদের বের করার চেষ্টা করেন। একটি দমকল গিয়ে আগুন নেভাতে সক্রিয় হয়। কোনওরকমে তাঁদের যখন জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ততক্ষণে সব শেষ। সেখানেই ডাক্তাররা তিনজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত্যু হয় নার্স জুলেখা খাতুনের (১৮), গাড়িচালক উৎপল সরদার (২৫) এবং বেসরকারি হাসপাতালের কর্মী রাতুল সাহার। অ্যাম্বুল্যান্সে থাকা আরও যাত্রী তথা চিকিৎসক রিয়া সাহা (২৩) গুরুতর আহত হন। তাঁকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় বহরমপুরের মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই ডাক্তারের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
[দেখতে ছানা টাটকা, দুধ কাটাতে ব্যবহার হচ্ছে ‘বিষ’]
রঘুনাথগঞ্জের সম্মতিনগরে বিনামূল্যে চক্ষু পরীক্ষা শিবিরে ওই চার জন যাচ্ছিলেন। চক্ষু শিবিরের পক্ষ থেকে শৌভিক শেখ জানান ডাক্তারদের সকাল ৯টা থেকে অনেকেই অপেক্ষা করছিলেন। এমন ঘটনার খবর পেয়ে সবাই মর্মাহত। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান ভুল লেনে ঢুকে পড়ায় এত বড় ঘটনা ঘটে গেল। তাঁদের আক্ষেপ অনেক চেষ্টার পরও তিনজনেক বাঁচানো যায়নি। পুলিশ ঘাতক লরি আটক করেছে। চালক ও খালাসির খোঁজ চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.