Advertisement
Advertisement

Breaking News

Ranigunj

১৩ দিন অশৌচ পালন, হিন্দু শাস্ত্রমতে সব রীতি মেনে বন্ধুর পারলৌকিক কাজে মুসলিম বৃদ্ধ

সম্প্রীতির অনন্য নজির রানিগঞ্জে।

Muslim Man Performs Hindu Last Rites for Friend In Ranigunj | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:April 24, 2022 8:14 pm
  • Updated:April 24, 2022 8:30 pm

শেখর চন্দ্র, আসানসোল: এই জেলা কাজী নজরুল ইসলামের জন্মভূমি। এই মাটিতে বসে তিনি লিখেছিলেন ”মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম/ হিন্দু-মুসলমান”। এবার সেই জেলা থেকেই উঠে এল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির। আসানসোলের রানিগঞ্জে (Ranigunj) হিন্দু শাস্ত্রমতে হিন্দু বন্ধুর পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন করলেন মুসলিম ব্যক্তি। এ স্রেফ নমো নমো করে বন্ধুর শ্রাদ্ধশান্তি করা নয়, একেবারে নিয়ম মেনে ১৩ দিন ধরে অশৌচ পালন করেন যিনি, তাঁর নাম মহম্মদ শামসুদ্দিন। শ্রাদ্ধের দিন মস্তক মুণ্ডন করে, পুরোহিতের পাশে মন্ত্র পড়ে তবেই বন্ধুর পারলৌকিক কার্যাদি সম্পন্ন করলেন তিনি। চোখের সামনে এমন নজিরবিহীন ঘটনা দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন এলাকার সাধারণ মানুষজনও। এই-ই তো সমাজের আদর্শ ছবি।

মৃত যোগেন্দ্র প্রসাদ।

গত বেশ কয়েকদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন শামসুদ্দিনের বন্ধু, হুগলির (Hooghly) মগরার বাসিন্দা যোগেন্দ্র প্রসাদ। বছর পঞ্চান্নর যোগেন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে রানিগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে কাজ করতেন। তিন কূলে কেউ ছিল না তাঁর। রানিগঞ্জে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের অফিসেই যোগেন্দ্রর সঙ্গে গভীর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে রানিগঞ্জের গির্জাপাড়ার বাসিন্দা মহম্মদ শামসুদ্দিনের। ব্যস, সেই থেকে অটুট বন্ধুত্ব। এমনকী মৃত্যুর পরও তা রয়ে গেল একইরকম।

Advertisement

[আরও পড়ুন: একদিনে হরিদেবপুরের ঘটনার কিনারা, ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই অটোয় রাখা হয় বোমা]

অসুস্থ যোগেন্দ্র প্রসাদের মৃত্যু হয় এপ্রিলের ১১ তারিখ। যেহেতু তাঁর পরিবারে আর কেউ নেই, তাই বন্ধু বিয়োগের যন্ত্রণা সামলে তাঁর পারলৌকিক ক্রিয়ার সমস্ত দায়ভার নিজের হাতে তুলে নেন শামসুদ্দিন। ১৩ দিন অশৌচ পালন করার পর, রবিবার বন্ধুর শ্রাদ্ধের কাজ সারলেন তিনি। হিন্দু শাস্ত্রের নিয়ম অনুযায়ী, মাথা নেড়া করে, পুরোহিতের সঙ্গে বসে করলেন মন্ত্রপাঠ। শামসুদ্দিনের কথায়, ”কোনও ধর্ম নয়, মানুষ হয়ে জন্মেছি। বন্ধুর শেষকৃত্য করতে পেরে আমি গর্বিত।”

Advertisement
বন্ধুর শ্রাদ্ধের জন্য মাথা নেড়াা করলেন মহঃ শামসুদ্দিন।

[আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে খারিজ জামিন, ডেডলাইনের আগেই আত্মসমর্পণ লখিমপুর কাণ্ডে অভিযুক্ত আশিস মিশ্রর]

শুধু পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্নই নয়, স্থানীয় কর্মী ও বাসিন্দাদের আর্থিক সাহায্যে সেখানেই রান্নার ব্যবস্থা হল, খাওয়ানো হল শ্রাদ্ধের ভোজ। রবিবার এমনই এক নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী থাকতে পেরে নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে করছেন বাসিন্দারা। চোখের সামনে ঘটে যাওয়া এমন এক গল্পের মতো ঘটনার রেশ যেন কাটিয়ে উঠতে পারছেন না কেউ।  সকলেই বলছেন, সম্প্রীতির (Harmony) এই নিদর্শন ছড়িয়ে পডুক দেশের প্রতিটি প্রান্তে। বিদ্বেষের অবসান হোক এভাবেই।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ