বিপ্লব দত্ত, কৃষ্ণনগর: ১৪দিন নিখোঁজ থাকার পর উদ্ধার উচ্চমাধ্যমিক পাশ ছাত্রের মৃতদেহ। মৃতের নাম দিব্যেশ মজুমদার(১৮)। বাড়ি নদিয়ার ধানতলা থানার হিজুলি গাজনতলায়। রানাঘাট পালচৌধুরি হাই স্কুল থেকে এই বছরই বিজ্ঞানে বিভাগে ৮৭ শতাংশ নম্বর পেয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছে দিব্যেশ। গত ১৭ জুন বন্ধুকে স্টেশনে বই দিতে যাচ্ছে বলে সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় ছাত্রটি। এরপর থেকে তার কোনও খোঁজ ছিল না। শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ চূর্ণি নদী থেকে উদ্ধার হল দিব্যেশের মৃতদেহ। ঘটনাটি ঘটেছে রানাঘাট থানার আনুলিয়াঘাট ও হবিবপুরের মাজদিয়া ঘাটে।
[মদের আসরে বচসা, দুষ্কৃতীর গুলিতে মৃত্যু পথচারী যুবকের]
ওই মাজদিয়া ঘাটের সেতুর পিলারেই দেহটি আটকে ছিল। অজ্ঞাত পরিচয় তরুণের দেহ দেখে স্থানীয়রাই পুলিশে খবর দেয় শেষপর্যন্ত পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে। তারপর খবর যায় দিব্যেশের বাড়িতে। পরিবারের লোকজন এসে ছাত্রের দেহ শনাক্ত করেন। পরনের জামাকাপড় দেখেই দেহটি শনাক্ত করা হয়। মৃত ছাত্রের বাবার নাম রতন মজুমদার। ১৭ তারিখ বেলা ৩.৩০ মিনিটে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পাঁচটাতেও ফেরেনি। ছেলের দেরি দেখে একসময় বাবাই তাকে ফোন করেন। তবে ফোন সুইচ অফ ছিল। এরপর সারারাত বাড়ি ফেরেনি দিব্যেশ। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুদের বাড়িতে খোঁজখবর করেও ছেলের সন্ধান পায়নি মজুমদার পরিবার। তারপর ধানতলা থানায় নিখোঁজ ডায়রি করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ছাত্র এখনও আঠারো পেরোয়নি। বাবার অভিযোগ, কেউ সম্ভবত তাঁর ছেলেকে অপহরণ করে আটকে রেখেছে। যদিও এর মধ্যেই খবর আসে, নিখোঁজের দিন দিব্যেশকে কেউ চূর্ণি নদীর জলে ঝাঁপ দিতে দেখেছে। এই খবরে রানাঘাট থানার তরফে স্পিডবোট নিয়ে নদীতে তল্লাশিও চলে। ডুবুরিও নামানো হয়। টানা দু’দিন ধরে তল্লাশি চললেও ওই ছাত্রের কোনও খোঁজ মেলেনি। সেই সময়ই নিখোঁজ ছাত্রের বাবা জানান, সম্ভবত দিব্যেশ একটি মেয়েকে ভালবাসে। এদিকে সেই মেয়েটির অন্য কারোর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। এমনকী, দিব্যেশের থেকে সে এক বছরের বড়। হয়তো প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়েই অবসাদে জলে ঝাঁপ দিয়েছে দিব্যেশ।
[পাটখেতে উদ্ধার কঙ্কাল, চাঞ্চল্য তপনে]
একই দাবি মৃতের দাদা পলাশ মজুমদারেরও। প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিল ভাই। তা থেকেই হয়তো নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ছেলে নিখোঁজের পর থেকে অপহরণের কথাই পুলিশকে জানিয়ে আসছিল মজুমদার পরিবার। তাই অপহরণের অভিযোগই দায়ের হয় সে সময়। এতদিন শুধু ছেলে ফিরে আসার একটা অপেক্ষা ছিল। শনিবার সন্ধ্যায় সেই ছেলের মৃতদেহ উদ্ধার হতেই গোটা পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।