BREAKING NEWS

১৬ আশ্বিন  ১৪৩০  বুধবার ৪ অক্টোবর ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

দেশ পেলেও দুর্গা আরাধনার অধিকার এখনও অধরা চরমেঘনাবাসীর

Published by: Kumaresh Halder |    Posted: October 8, 2018 8:29 pm|    Updated: October 8, 2018 8:55 pm

Nadia: This village still don't have permission to Worship Durga Maa

পলাশ পাত্র, তেহট্ট: দু’শো বছর আগে বিহার, ছোটনাগপুর থেকে আসা কাঁটাতারের ওপারের চরমেঘনাবাসীর মন খারাপ৷ মাথাভাঙা নদীর পাড়ে কাশফুলের বাহারের মধ্যে এক হাজার ভারতীয়র বসবাস করা হিন্দু গ্রামটিতে আজও দুর্গাপুজো না হওয়ায় বিষাদ গ্রাস করেছে৷

[তর্পণ করতে গিয়ে মৃত ২, গঙ্গায় তলিয়ে গেলেন অধ্যাপক-ব্যবসায়ী]

হোগলবেড়িয়া থানার চরমেঘনার স্টেটাস ছিটমহলের মধ্যে পড়ে না৷ সরকারি ভাবে অ্যাডভার্স পজেশান ল্যান্ড। চরমেঘনাবাসীর প্রত্যেকের ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড, প্যান কার্ড রয়েছে। তারপরও তারা খাঁচাবন্দি জীবন যাপন করেন। কয়েক বছর আগে চরমেঘনা গ্রাম ভারতীয় ভূখণ্ডে চলে আসে। তাতে অবশ্য নাগরিক পরিষেবা পেতে সুবিধা হয়৷ ২০১৫ সালের ৩১ জুলাইয়ের পর চরমেঘনা ভারতের ভূখণ্ডে চলে আসে৷ এই এলাকার জেলা পরিষদ সদস্য তরুণ সাহা বলেন, ‘‘আগে পঞ্চায়েতের পরিষেবা না থাকলেও এখন সমস্ত পরিষেবা মেলে চরমেঘনায়৷ বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা, ইন্দিরা আবাস যোজনা, পাকা রাস্তা গ্রামবাসীরা পাচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে চরমেঘনায় দুর্গাপুজো করা নিয়ে গ্রামের মানুষ সম্মিলিত হয়েছে। মিটিং করেছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার কারণে দুর্গাপুজোর অনুমতি দেওয়া হয়নি।’’ অথচ মনসা, কালি, ভূমি, কার্ত্তিক মাসে গোয়াল পুজো, ভাদ্র মাসে কর্মা বা গাছ পুজো করা হয়।

[প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে আগ্রহী ইসলামপুর কাণ্ডে নিহতদের পরিবার]

চরমেঘনার কাঁটাতার থেকে নদিয়ার প্রাচীন পুজো নস্করি মায়ের কাছে অঞ্জলি দেয় চরমেঘনাবাসী। এখানে নিয়মের মধ্যেই সারা বছর চলাফেরা করতে হয়। সকাল ছটা থেকে বিকেল পর্যন্ত ভোটার কার্ড বা পরিচয়পত্র গেটে দেখিয়ে চাষবাস থেকে বাইরের কাজ সারতে বের হতে হয়। পুজোর সময় বিএসএফ গাড়ি করে গ্রামবাসীদের নিয়ে যায় আবার ফিরিয়ে দেয়। বাঙালির বড় উৎসব গ্রামে না হওয়ায় প্রত্যেকেই মনকষ্টে থাকে বলে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, কৃষি প্রধান এলাকা হওয়ায়, অভাব থাকলেও খেয়ে পড়ে চলে যায়। সেক্ষেত্রে চাঁদা তুললে বারোয়ারী পুজোর জন্য তাও হয়ে যাবে। কিন্তু অনুমতি না পাওয়ায় পুজোটা করা যায় না। গ্রামটি করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়লেও লোকসভা কেন্দ্র অবশ্য মুর্শিদাবাদ। গ্রামে এক হাজার জন গ্রামবাসীর সকলেই হিন্দু। ভোটার রয়েছে ৫৪৫ জন।

[সরাইঘাট এক্সপ্রেস থেকে উদ্ধার বিরল প্রজাতির বানর]

এখানকার বাসিন্দারা একসময় বিহার, ছোটনাগপুর মালভূমি এলাকা থেকে আসে নীল চাষের জন্য। পূর্বসূরিরা নীল চাষ করলেও চরমেঘনাবাসী ধান, পাট, রবিশস্য বা চাষের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু গ্রামে কেনও দুর্গা পুজো করা যায় না? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানিয়েছেন, ওপার থেকে দুষ্কৃতীরা চলে আসে। সেক্ষেত্রে নিরাপত্তা প্রশ্ন চিহ্নের মুখে পড়ে যায়। ঘটনা প্রসঙ্গে করিমপুর এক বিডিও অতনু ঝুড়ি বলেন, ‘‘নিরাপত্তার একটা বিষয় তো আছেই। তবে নতুন করে পুজোর অনুমতি দেওয়া হবে না।’’ এ প্রসঙ্গে রাজ্যসভার সাংসদ তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সংসদীয় কমিটির সদস্য আবীর বিশ্বাস বলেন, ‘‘বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব না হওয়াটা দুঃখজনক। বিষয়টি দেরিতে জানলাম।’’ এ নিয়ে কেউ আগামী দিন যোগাযোগ করলে প্রয়োজনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে বর্ডারের এই পুজো করানোর চেষ্টা করব।

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে