অর্ণব দাস, বারাকপুর: সন্দেহ হয়েছিল হলুদ ট্যাক্সির চালকেরও। সেই কারণে রীতিমতো জোর করেই নাকি ঘোলা ট্রলি কাণ্ডে ধৃত ২ যুবককে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেন চালক। প্রকাশ্যে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। যদিও ও ই হলুদ ট্যাক্সি ও তার চালকের হদিশ এখনও পায়নি পুলিশ। এদিকে ইতিমধ্যেই ধৃতদের নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা নমুনা সংগ্রহ করেছে। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা জামা-কাপড় উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘোলা ট্রলি কাণ্ডের তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ধৃত দুই যুবক প্রথমে বুঝতেই পারেনি লাশ কোথায় ফেলবে। হলুদ ট্যাক্সিতে চেপেই কলকাতার কোনও নির্জন এলাকায় লাশ লোপাটের চিন্তাভাবনা ছিল তাদের। সেই কারণে ধৃতরা মৃত ভাগরাম দিওয়াসিকে খুন করে ব্রাউন সেলোটেপ দিয়ে গোটা মাথা, হাত-পা বেঁধে ফেলে। তারপর দেহ নীল ট্রলিতে ভরে। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় তাঁরা দেখা করেছিল নিউমার্কেট সংলগ্ন এলাকায়। সেখানেই তারা আলোচনা করেছিল হলুদ ট্যাক্সি করে কলকাতার কোনও এক জায়গায় লাশ ফেলবে বলে। সেইমতো চলতি ট্যাক্সি দাঁড় করিয়ে ট্রলি তুলে দীর্ঘক্ষণ কলকাতা ঘুরেছিল ধৃত কৃষ্ণ ও করণ সিং। কখনও তারা গিয়েছিল খিদিরপুর, কখনও আবার তারাতলা, মহেশতলা, বাবুঘাট-সহ বিভিন্ন এলাকায়। কিন্তু সুবিধা মত কোথাও ট্রলি ফেলার জায়গা পায়নি তারা।
এদিকে সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত প্রায় ঘণ্টা তিনেক ঘুরে যাত্রীরা নির্দিষ্ট কোথায় যেতে চাইছে তা বলতে না পারায় সন্দেহ হয় হলুদ ট্যাক্সি চালকের। শেষে করণ ও কৃষ্ণ দমদমের দিকে গেলে তাদের একপ্রকার জোর পূর্বক নাগেরবাজার নামিয়ে দেন চালক। তারপরই দুজনে গুগল ম্যাপ দেখে কল্যাণী এক্সপ্রেস বিলের কাছে লাশ ফেলবে বলে ঠিক করে। এরপরই করণের মোবাইল থেকে বুক করা হয় অ্যাপ ক্যাব। বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দ্রবদন ঝাঁর দাবি, দু’জনেই খুনের সময় ঘটনাস্থলে ছিল বলে স্বীকার করেছে। তবে কে খুনের পরিকল্পনা করেছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সেটা জানার চেষ্টা চলছে। উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার গভীর রাতে ঘোলায় ট্রলিতে এক যুবকের দেহ মিলেছিল। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে কয়েকঘণ্টার মধ্যেই ২ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরবর্তীতে অ্যাপ ক্যাব চালকের বুদ্ধির জোরে ধরা পড়ে যায় তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.