রাজা দাস: দিল্লির স্মৃতি ফিরল দক্ষিণ দিনাজপুরে। ফিরল নির্ভয়া কাণ্ডের ভয়াবহতা। এক আদিবাসী তরুণীকে গণধর্ষণ করে তাঁর উপর চালানো হল পাশবিক অত্যাচার। যৌনাঙ্গে ঢুকিয়ে দেওয়া হল ধাতব কোনও বস্তু। আশঙ্কাজনক অবস্থায় এখন ওই তরুণী মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভরতি। তরুণীর চিকিৎসায় গঠন করা হয়েছে মেডিক্যাল বোর্ড। জরুরিভিত্তিতে তাঁর অস্ত্রোপচারেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
[ বিজেপির প্রাসাদোপম পার্টি অফিস তৈরিতে কত খরচ? টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন মমতার ]
ঘটনা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমণ্ডি ব্লকের। এক আদিবাসী তরুণীকে রবিবার রাতে রায়গঞ্জের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। পরে স্থানান্তর করা হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ওই তরুণীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, তাঁর উপর পাশবিক অত্যাচারও চালানো হয়েছে। ধর্ষণের পরে নির্যাতিতার যৌনাঙ্গে কোনও ধাতব বস্তু দিয়ে অত্যাচার করা হয় বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা। তরুণীর অবস্থা রীতিমতো আশঙ্কাজনক। জানা গিয়েছে, যুবতীর মা-বাবা বছর ১৪ আগে মারা গিয়েছেন। প্রায় সাত-আট বছর আগে মেয়েটির বিয়ে হয়েছিল বিহারে। পরবর্তীতে হঠাৎ মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন তিনি। তখন থেকেই দেহাবন্দের ঘাটপাড়া এলাকার বাড়িতে থাকতেন। পাড়া-প্রতিবেশী ও স্থানীয়দের দেওয়া খাবারেই চলত তাঁর। শিব পুজো উপলক্ষে কয়েকদিন ধরে বাউল গান অনুষ্ঠিত হচ্ছে পাশের জেলা উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার ব্লকের পতিরাজপুরে শ্রীমতি নদীরপারে। বাড়ি থেকে সামান্য দূরের ওই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন ওই যুবতীও। রাতে মেলা চত্বর থেকে ওই যুবতীকে তুলে নিয়ে যায় কয়েকজন। পাশের ব্রিজের নিচে একটি খেতে গণধর্ষণ করা হয়। মেয়েটির চিৎকারে ছুটে আসেন এলাকার মানুষজন। এরপর ঘটনাস্থলে আসে কুশমণ্ডি ও হরিরামপুর থানার পুলিশ। পুলিশ আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই যুবতীকে উদ্ধার করে রায়গঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ইতিমধ্যে তরুণীর চিকিৎসায় গঠন করা হয়েছে মেডিক্যাল বোর্ড। তরুণীর শরীরে ক্ষত কতখানি গভীর তা পরীক্ষা করা হচ্ছে। অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্তও নিয়েছেন চিকিৎসকরা।
[ ট্রাফিক সার্জেন্টের চড়ে বেহুঁশ ভ্যানচালক, পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ স্থানীয়দের ]
ঘটনায় রামপ্রসাদ শর্মা নামে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করেছে বলে সূত্রের খবর। ওই এলাকায় রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। রয়েছে পুলিশ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে আদিবাসী বেশ কিছু সংগঠন। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছে তারা। গঙ্গারামপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বিপুল বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁরাই মেয়েটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছেন। মেয়েটির মুখ থেকে রাম প্রসাদ শর্মা নামটি শোনা গিয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা একজনকে আটক করেছেন। অন্য কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তা জানার চেষ্টা চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.