Advertisement
Advertisement
শান্তিনিকেতন

বসন্তোৎসব স্থগিতে বিষাদের সুর শান্তিনিকেতনে, বাতিল হোটেল-গাড়ি বুকিংও

মনখারাপ পড়ুয়া থেকে আশ্রমিক, ব্যবসায়ী সকলের।

No holi this year at Shantiniketan makes people unhappy
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:March 7, 2020 6:31 pm
  • Updated:March 9, 2020 8:40 am

ভাস্কর মুখোপাধ‌্যায়, বোলপুর: করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে এবছর বসন্ত উৎসব স্থগিত রাখা হয়েছে বিশ্বভারতীতে। শুক্রবার সন্ধেবেলা এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই কবিগুরুর আনন্দ নিকেতনে বিষাদের মেঘ। সংগীত ভবনে মহড়ারত ছাত্রছাত্রীদের চোখ চিকচিক করে ওঠে। একই পরিবেশ অন্যান্য ভবনেও। এতদিন ধরে প্রস্তুতির পর এই ঘোষণায় সবটাই যেন মাঠে মারা গেল বলে মনে করছেন তাঁরা।

সংগীত ভবনের ছাত্রছাত্রীরা প্রায় এক মাস ধরে উৎসবে অংশগ্রহণ করবেন বলে প্রতিদিন মহড়া দিয়েছেন। হঠাৎ উৎসব বন্ধ হওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েন পড়ুয়ারা। একই অবস্থা কলাভবনেও। এবার বিশ্বভারতী নির্দেশিকা জারি করে ছিল কলাভবন, সংগীত ভবন চত্ত্বরে আবির খেলা হবে না। কিন্তু দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য ভেঙে দেওয়ার প্রতিবাদে ছাত্রছাত্রীরা কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান।

Advertisement

[আরও পড়ুন: দীর্ঘ আন্দোলনের সুফল, মাদ্রাসা শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের বেতনবৃদ্ধির বিজ্ঞপ্তি জারি]

ছাত্রী নবনীতা সাহা বলেন, “বিশ্বভারতীতে এটাই আমার শেষ বছর। বসন্ত উৎসবের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কথা ছিল। আর আমি কোনওদিন অংশ নিতে পারব না।” বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, “করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের কারণ আছে। কিন্তু যে ভাবে বসন্ত উৎসব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তা মেনে নিতে পারছি না।” এদিকে, বসন্ত উৎসবকে রাজ্যের সেরা উৎসব করতে রাজ্য সরকার প্রস্তুতির কোনও খামতি রাখেনি। দু’ঘন্টার অনুষ্ঠানের জন্য প্রায় ৮২ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করা হয়েছিল। পৌষমেলার মাঠে প্যান্ডেল হয়ে গিয়েছিল। রাজ্যের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছিলেন বীরভূমের মানুষ এবং শান্তিনিকেতনের প্রাক্তনীরা। কিন্তু এখন সেখানে ভাঙা হাট। শনিবার সকাল থেকে পান্ডেল খোলার কাজ শুরু হয়েছে।

Advertisement

ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি বোলপুর শান্তিনিকেতনের হোটেল ব্যবসায়ীদেরও মাথায় হাত। অনেকের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী যেখানে করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হতে নিষেধ করছেন সেখানে হঠাৎ করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ যেভাবে বসন্ত উৎসব বন্ধ করে দিয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই বিষয়ে রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “উৎসব বিশ্বভারতীর। তা উদযাপনে রাজ্য সরকার সবরকম সাহায্য করছিল। এখন বিশ্বভারতী যদি অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়, আমাদের কিছু করার নেই।”

[আরও পড়ুন: দুর্ঘটনায় পা হারিয়েছেন বাবা, সংসারের হাল টানতে বাস চালাচ্ছেন তরুণী]

শান্তিনিকেতনের দু’টি উৎসব বিশ্ববিখ্যাত। এক বসন্ত উৎসব, অন্যটি পৌষমেলা। বসন্ত উৎসবে সারা দেশ থেকে কয়েক লক্ষ পর্যটক আসেন শান্তিনিকেতনে। তাই বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি এই উৎসবগুলি ঘিরে বহুগুণে বেড়ে যায় পর্যটন কারবার। বর্তমানে বোলপুর এলাকা ও শান্তিনিকেতনে প্রায় ৫০০’র বেশি ছোট, বড় হোটেল, গেস্ট হাউস রয়েছে। এই দুই উৎসবের সময়ই সারা বছরের খরচ হোটেল মালিকরা তুলে নেন। থাকে প্যাকেজের ব্যবস্থা। হোটেল ব্যবসায়ী সমীর দাস বলেন, “অধিকাংশ হোটেলগুলিতে বুকিং হয়ে গিয়েছে। বেশিরভাগই অর্ধেক টাকা দিয়ে বুকিং করেছে, আবার মুখের কথাতেও বুকিং হয়েছে। বসন্ত উৎসব বাতিল হতেই যাঁরা টাকা দিয়েছেন, তাঁরা টাকা ফেরত চাইছেন। আমরা পথে বসে গিয়েছি প্রায়।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ