Advertisement
Advertisement

পকেটে বাতিল নোট, বিপাকে পর্যটকরা

পাহাড়-ডুয়ার্সে শর্ত চাপাল গাড়িচালক, হোটেলও৷ বিপর্যস্ত পাহাড়-ডুয়ার্সের পর্যটন সার্কিট৷

Note denomination affected tourism heavily
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:November 10, 2016 11:32 am
  • Updated:November 10, 2016 11:32 am

স্টাফ রিপোর্টার, শিলিগুড়ি: সকাল সকাল জঙ্গল সাফারির জন্য লাটাগুড়ির বুকিং কাউণ্টারের লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন কলকাতার ঢাকুরিয়ার বাসিন্দা কুশল সেন৷ দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর যখন কাউণ্টারের সামনে এলেন, জানতে পারলেন হাজার টাকার নোট চলবে না৷ অনেক খুঁজেও খুচরো জোগাড় করতে না পেরে হতাশ হয়ে তাঁকে ছাড়তে হল কাউণ্টার৷ পরিবার নিয়ে গরুমারায় জঙ্গল সাফারির আশা পূরণ হল না৷

উত্তরপ্রদেশ থেকে প্রথমবার দার্জিলিং ঘুরতে এসেছে ন’জনের দল৷ সোমবার রাতে যখন ট্রেনে উঠেছিলেন, তখন ঘুণাক্ষরেও টের পাননি এমনটা হতে পারে৷ দলটির কাছে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা রয়েছে৷ কিন্তু বেশিরভাগই পাঁচশো ও হাজারের নোট৷ সেই টাকা ভাঙাতে বুধবার সকালে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে রীতিমতো হন্যে হয়ে ঘুরলেন দলের সদস্য সৌভিক আগরওয়াল৷ বললেন, একশো ও খুচরো মিলিয়ে দু’হাজার টাকা আছে৷ তা দিয়ে বড়জোর একটা দিন চলবে৷ অগত্যা ফিরে যাওয়ার চিন্তা করছেন তাঁরা৷

Advertisement

বাতিল নোট পকেটে নিয়ে এভাবেই বিপাকে পড়তে হল পর্যটকদের৷ কেউ আটকে পড়লেন দার্জিলিং-সিকিমে৷ কেউ আবার ডুয়ার্সে রিসট-হোটেলে ঘর ভাড়া নিতে গিয়ে দেখলেন, নোটিস ঝুলছে ‘পাঁচশো-হাজারের নোট নেওয়া হবে না৷” স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড থেকে পর্যটকদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে গাড়ি চালকদেরও শর্ত, একশো টাকার নোট দিতে হবে৷

Advertisement

বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে শিলিগুড়ি জংশনের একটি হোটেলে আসেন বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা অম্রুতা রেড্ডি৷ ট্যাক্সির ভাড়া মেটাতে হাজার টাকার নোট দিলে তা নিতে অস্বীকার করেন চালক৷ অম্রুতাদেবী বিপাকে পড়ে আগাম বুকিং করা হোটেল থেকে খুচরো এনে কোনওমতে বিপর্যয় সামাল দেন৷ বৃহস্পতিবার তাঁর গ্যাংটক যাওয়ার কথা৷ বললেন, কী করব বুঝতে পারছি না৷ কারণ, এটিএম কার্ড থাকলেও হাতে টাকা নেই৷

সবমিলিয়ে চরম বিপর্যস্ত পাহাড়-ডুয়ার্সের পর্যটন সার্কিট৷ দার্জিলিং থেকে ডেলো, জলদাপাড়া থেকে গরুমারা সর্বত্রই একই চিত্র৷ নেপাল-ভুটানেও ভারতীয় পাঁচশো ও হাজার টাকা নেওয়া হয়নি৷ সেখানেও সমস্যায় পড়তে হয় ব্যবসায়ী থেকে পর্যটকদের৷ গোটা ঘটনায় উদ্বিগ্ন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব৷ তিনি বলেন, “সমস্যা হচ্ছে বুঝতে পারছি৷ মানুষজনকে ঠান্ডা মাথায় বিষয়টি সামাল দিতে হবে৷ হোটেল-পর্যটন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে পর্যটকদের সাহায্য করতে বলেছি৷” পর্যটন ব্যবসায়ীরাই অবশ্য দ্বিধায়৷

ইস্টার্ন হিমালয়ান টুর অ্যান্ড ট্রাভেল অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেছেন, “অনেক ক্ষেত্রেই গাঁটের থেকে পর্যটকদের থাকা-খাওয়ার টাকা দিতে হয়েছে আমাদের৷ পরে হিসাবপত্র করা হবে৷ কোনও পর্যটক এসে ঘুরতে না পেরে ফিরে যাবেন, এটা আমরা কখনওই চাই না৷”

লাটাগুড়ির ডিএফও নিশা গোস্বামী বলেন, “সরকারি ঘোষণা রয়েছে পাঁচশো ও হাজারের নোট বাতিল৷ তাই ওই নোট নিতে না করেছি৷” তাঁর ওই নির্দেশিকার জেরে এদিন লাটাগুড়িতে দু’বেলায় সাফারি হয়েছে ১২ টি দলের৷ যেখানে প্রতিদিন অন্তত চারশো দল সাফারি করে৷ লাটাগুড়ি রিসর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে অবশ্য পর্যটকদের খানিকটা সাহায্য করার চেষ্টা হয়েছে৷ সংগঠনের সম্পাদক দিব্যেন্দু দেব বলেন, “আমরা কিছু পর্যটককে পাঁচশো ও হাজারের নোট ভাঙিয়ে দিয়েছি৷ পরে আমরা ব্যাঙ্কে গিয়ে ওই নোট জমা করে দেব৷ কিন্তু আমাদেরও সীমাবতা রয়েছে৷  তাই সবাইকে সাহায্য করতে পারছি না৷”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ