অরূপ বসাক, মালবাজার: নিজের কাজের প্রতি দায়বদ্ধ। তাই সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে খোদ রাষ্ট্রপতির থেকে আমন্ত্রণ পেয়েও যাচ্ছেন না পদ্মশ্রী করিমুল হক। ঠিকই দেখছেন, শিলিগুড়ি অ্যাম্বুল্যান্স দাদার কথাই বলা হচ্ছে। সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে রাজধানীর রাজপথের কুচকাওয়াজ দেখার আমন্ত্রণ ছিল তাঁর, কিন্তু কাজ বড় বালাই। রোগীদের পরিষেবা ভুলে কিছুতেই রাষ্ট্রপতির অতিথি হতে পারবেন না তিনি। তাছাড়া ওই একই দিনে নিজের এলাকর এক রোগীকে শিলিগুড়ি নিয়ে যাবেন করিমুল। অস্ত্রোপচার আছে। সেজন্য আগামী ২৬ তারিখে তাঁর শিলিগুড়িতে থাকা অত্যন্ত জরুরি। তবে রাষ্ট্রপতির অতিথি হতে না পেরে খেদও রয়েছে মনে। তাই সংবাদমাধ্যমকে মাধ্যম করে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন অ্যাম্বুল্যান্স দাদা।
[বউদির শ্লীলতাহানিতে হাজতবাস, ফিরে প্রতিবেশীদের গঞ্জনায় আত্মঘাতী যুবক]
এই প্রসঙ্গে নিজেই জানিয়েছেন অক্ষমতার কথা। রাষ্ট্রপতির তরফে বাড়িতেই এসেছিল আমন্ত্রণের চিঠি। কিন্তু অসুস্থ মানুষের সেবা বাদ দিয়ে কী করেই বা তিনি আমন্ত্রণ রক্ষা করবেন। কেননা মানুষের সেবা করার জন্যেই ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করেছেন। এই সময়ে দিল্লি চলে গেলে সেই সেবার কাজেই বিরতি পড়বে। তাই কাজকেই অগ্রাধিকার দিলেন।
উল্লেখ্য, খুব শিগগির রুপোলি পর্দায় ভেসে উঠবেন অ্যাম্বুল্যান্স দাদা। ফেব্রুয়ারিতে শুরু হচ্ছে ছবির শুটিং। মুম্বইয়ে স্টার সিনেমা হাউস ইন্ডিয়ার ব্যানারে তৈরি হচ্ছে ছবি। পরিচালক বিনয় মুদগলের সঙ্গে চুক্তিও সেরে ফেলেছেন তিনি। জলপাইগুড়ির প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ করিমুল ও তাঁর পরিবার এই বলিউডি কানেকশনে উচ্ছ্বসিত। তাঁরাও এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় কবে পর্দায় আসবে করিমুলের জীবন।
অসুস্থ মাকে রাতে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেননি। শেষে বিনা চিকিৎসায় মায়ের মৃত্যু হয়। মায়ের মতো পরিণতি কারও যাতে না হয়, সেই শপথ নিয়ে এগিয়ে চলেছেন করিমুল। রাত বিরেতে শুধু একটা ফোন এলেই আশপাশের পাঁচটা গ্রামের রোগীকে বাইকে বসিয়ে নিয়ে চলে যান হাসপাতালে। ঝড়-জল কোনও বাধাই আটকাতে পারে না তাঁকে। তাইতো সেবার খাতিরে রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণেও সাড়া দিতে রাজি নন।