সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রানি রাসমণি রোডের সভা থেকে প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া মুকুল রায়। আক্রমণের নিশানায় ছিলেন তরুণ তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘বিশ্ববাংলা’ থেকে শুরু করে ‘জাগো বাংলা’র মালিকানা যে তাঁরই নামে, কাগজ দেখিয়ে সে অভিযোগ করেন তিনি। কিন্তু এককথায় তা নাকচ করে দিলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মুকুলকে ‘চাটনিবাবু’ বলে কটাক্ষ করে তিনি জানান, সাদা পাতা দেখিয়ে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।
[ প্রতিবাদ সভায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে জোরাল আক্রমণ বিজেপি নেতাদের ]
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই একটি ফাইল দেখিয়ে বিস্ফোরক হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মুকুল রায়। শুক্রবার তার প্রমাণ মিলল। ব্র্যান্ড বিশ্ববাংলা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মালিকানাধীন বলে অভিযোগ করেন তিনি। কিন্তু নবান্নের তরফে স্বরাষ্ট্রসচিব জানিয়ে দিয়েছেন, বিশ্ববাংলা কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নামেই সেটির রেজিষ্ট্রি করানো হয়েছে। অন্যদিকে তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’ নিয়েও অভিযোগ ছিল মুকুলের। উত্তর দিতে গিয়ে পার্থবাবু জানান, “চাটনিবাবু যা বলেছেন, তা যদি প্রমাণ করতে পারেন, আমি নিজেই পদ ছেড়ে চলে যাব। সকলেই জানেন, মমতা নিজের মাইনের পয়সা দিয়ে এই কাগজ তৈরি করেছেন। আজ দল থেকে বেরিয়ে কুৎসা করছেন। রেজিস্ট্রেশনও দেখেন না। কারা অ্যাডভাইজরি কমিটিতে আছে তাও জানেন না।” নাম না করেই মুকুলের উদ্দেশে পার্থ বলেন, “অনেকের গদ্দারি দেখেছি। এখনও দেখছি। কিন্তু তৃণমূলের সকল স্তরের কর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা ঐক্যবদ্ধ। যাঁরা বিশ্বাসঘাতকতা করতে চান, করেইছেন। যে দলকে লিমিটেড কোম্পানি বলে অভিযোগ করছেন, দু’দিন আগে তো তাঁকেই ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে দেখা গিয়েছে। তাহলে কী এমন হয়েছে যে, এখন বন্দেমাতরম এর বদলে জয় শ্রীরাম বলতে হচ্ছে।” পার্থবাবুর বিশ্বাস, “ব্যক্তিগত কারণে অতীতেও অনেকে সরে গিয়েছেন। বাংলার মানুষ তাঁদের আস্তাকুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলেছেন। যাঁরা মিথ্যাভাষণ দিয়ে বাজার গরম করার চেষ্টা করছেন, তাঁরা কোথাও ঠাঁই পাবেন না।”
[ বিশ্ববাংলা পশ্চিমবঙ্গ সরকারেরই, অভিযোগ খারিজ করলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব ]
অভিষেক সম্পর্কে অসত্য কথা বলা হচ্ছে বলেও জানান। সাদা পাতা দেখিয়ে মুকুল বিভ্রান্ত করছেন বলেও অভিযোগ তাঁর। তিনি জানান, “এর থেকে বোঝা যাচ্ছে ক্ষোভটা কার বিরুদ্ধে। একটা বয়সের পর তরুণদের হাতে দায়িত্ব ছাড়া উচিত। তরুণদের কাজের সুযোগ দেওয়া অন্যায় নয়। আজ তো সকলেই জেনে গেলেন কী কারণে উনি উষ্মা প্রকাশ করেছেন। সবকিছু খেয়ে হাত মুছে গেরুয়া পরে থাকলেই ‘তুমি আর নেই সে তুমি’ হয়ে যাবে, তা তো হয় না।” এক বিশেষ ক্লাবের পুজো নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও খোঁচা দিয়েছিলেন মুকুল। জবাবে পার্থ বলেন, “কাঁচড়াপাড়ায় কীভাবে কালীপুজো হয় তারও তদন্ত হোক।” পালটা আক্রমণ হেনে তিনি বলেন, “কে চৌর্যবৃত্তি করেছে তা সকলেই জানেন। মমতা সহকর্মীদের বিশ্বাস করেন। কারও কাজে ইন্টারফেয়ার করেন না। তার মানে এই নয় যে ওয়ান ম্যান পার্টি চালিয়েছেন। চালালে এত জেলা পরিষদ, পৌরসভা, গ্রাম পঞ্চায়েত থাকত না। তিনি সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলেন। যাঁরা এককভাবে রাতের অন্ধকারে সিদ্ধান্ত নিয়ে দলকে ডোবানোর চেষ্টা করছেন, তাঁদের মুখোশ খুলে গিয়েছে।”