Advertisement
Advertisement
উপনির্বাচন

স্থানীয় না বহিরাগত? করিমপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী নিয়ে জল্পনা

করিমপুরের বিধায়ক সাংসদ হওয়ায় সেখানে উপনির্বাচন৷

Political parties are preparing for Karimpur By election

ফাইল ছবি

Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:June 17, 2019 8:59 pm
  • Updated:June 18, 2019 1:20 pm

পলাশ পাত্র, তেহট্ট: দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা হয়নি। তবে তার আগেই করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে পুরোদমে৷ প্রার্থী কে হবে, কে এগিয়ে, কে পিছিয়ে? হারজিতের অঙ্কই বা কীরকম, সমস্ত কিছু নিয়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।

[আরও পড়ুন: শিকার নয়, পুরুলিয়ায় হরিণ শাবকের প্রাণ বাঁচালেন বৃদ্ধা]

সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোটের নিরিখে করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির থেকে চোদ্দ হাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। প্রয়াত অনিল বিশ্বাসের বসতভিটা করিমপুর বরাবর সিপিএমের ‘শক্ত ঘাঁটি’ বলে চিহ্নিত ছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেসব পালটে গেছে৷ তবুও এই অবস্থায় রাম-বামের জোটই এই কেন্দ্রের উপনির্বাচনকে অনেক শক্ত করে তুলতে পারে বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

Advertisement

১৯৭২ সালে কংগ্রেস নেতা অরবিন্দ মণ্ডল বিধায়ক হন। এরপর করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রে দীর্ঘ চুয়াল্লিশ বছর পর ২০১৬ সালে কোনও ডানপন্থী বিধায়ক জয়লাভ করেন। তৃণমূল নেত্রী মহুয়া মৈত্র সতেরো হাজারের বেশি ভোটে সিপিএম প্রার্থীকে পরাজিত করেন। ২০১৬ সালে বিধায়ক হওয়া মহুয়া মৈত্র এবছর লোকসভা ভোটে কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের সাংসদ হয়েছেন। ফলে করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রটিতে উপনির্বাচন আসন্ন। এই কেন্দ্রে প্রার্থী কে হবে – তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। তেহট্ট মহকুমার তৃণমূলের নিজস্ব গোষ্ঠীগুলিতে প্রার্থীর নাম নিয়ে দাবিও উঠেছে। পেশায় আইনজীবী তেহট্টর জুলফিকার আলি খানের নাম শোনা যাচ্ছে। ২০১৬ সোশ্যাল মিডিয়া এই এলাকায় এখনকার মতো সড়গড় ছিল না। করিমপুরে সেসময় ফ্লেক্স পড়েছিল। বহিরাগত নয়, স্থানীয় কাউকেই প্রার্থী করতে হবে। এখনও করিমপুরে এ নিয়ে কোন পোস্টার, ফ্লেক্স পড়েনি। তবে হোয়াটস অ্যাপে তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী দীর্ঘদিনের তৃণমূল করা জুলফিকার আলি খানের নাম উঠে এসেছে। তাঁকে ভূমিপুত্র হিসেবে চিহ্নিত করাও হয়েছে। যদিও করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থীর দৌড়ে তাঁর নাম ওঠা প্রসঙ্গে জুলফিকারের বক্তব্য, ‘আমি তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দল করছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে আমার রাজনীতিতে আসা। তিনি যদি লড়াইয়ের জন্য আশীর্বাদ করেন তাহলে আমি চেষ্টা করব।’ 

Advertisement

করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটার রয়েছে দু লক্ষ চল্লিশ হাজারের কাছাকাছি। গত লোকসভা ভোটে তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ৮৭৫১৩। বিজেপির ৭৩১৭৩, কংগ্রেসের ২২০৯৭ ও সিপিএমের ১৭৬০৯। অর্থাৎ কংগ্রেস সিপিএমের মিলিত ভোট ৩৯৭০৬। প্রসঙ্গত গত বিধানসভায় সিপিএম প্রার্থীকে প্রায় ষোল হাজার ভোটে পরাজিত করে বিধায়ক হন মহুয়া মৈত্র। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে সিপিএম পেয়েছিল ৭৫০০০ ভোট। গত বিধানসভায় বিজেপির এই কেন্দ্রে ভোট ছিল ২৩৩০২। অর্থাৎ গত বিধানসভা ভোটের থেকে প্রায় পঞ্চাশ হাজার ভোট বাড়িয়েছে বিজেপি। প্রশ্ন, এই ভোটটা কোথা থেকে এল? গত বিধানসভা ভোটের নিরিখে কংগ্রেস সিপিএম জোটের ৩৭৩০০ ভোট কমেছে। আর শুধু সিপিএম ধরলে প্রায় ৫৮ হাজার ভোট কমেছে তাদের। লোকসভা ভোটে সারা রাজ্যে রাম বাম জোট নিয়ে আলোচনা হওয়ার আগেই গত পঞ্চায়েত ভোটে করিমপুরে রাম বাম জোট হয়। বিভিন্ন জায়গায় সিপিএম বিজেপির একসঙ্গে দেওয়াল লিখন, পতাকা দেখা গিয়েছিল। স্থানীয় স্তরে নেতারাও এ কথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন। এই রাম-বামের মেলবন্ধন তৃণমূলকে কতটা বিড়ম্বনায় ফেলবে তার উপর অনেকটা নির্ভর করবে এই আসনের ভাগ্য।

[আরও পড়ুন: গঙ্গাবক্ষে ভ্যানিশ সোনারপুরের ‘ম্যানড্রেক’, বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় পরিবার]

গত পঞ্চায়েতে ভোট দিতে পারেনি বহু মানুষ। করিমপুর দুই পঞ্চায়েতে বিজেপির আসন সংখ্যা বেশি। তারপরও তারা পঞ্চায়েত গঠন করতে পারেনি। ক্ষুব্ধ হয় সাধারণ মানুষ। ফলে লোকসভায় আটটি পঞ্চায়েতের করিমপুর এক ব্লকে মানুষ উজাড় করে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। এই ব্লকে তৃণমূল বিজেপির থেকে দশ হাজার ভোট পিছিয়ে থেকে চল্লিশ হাজার ভোট পাই। উলটোদিকে, ছ’টি পঞ্চায়েতের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত করিমপুর দুই ব্লকে তৃণমূল বিজেপির থেকে বাইশ হাজার ভোট বেশি পেয়ে ৩৯০০০ ভোট পাই। অথচ করিমপুর কেন্দ্রে বিধায়ক মহুয়া মৈত্র দেড়শো কোটি টাকা খরচ করে গত পাঁচ বছরে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। তারপরও সীমান্তের এই কেন্দ্রে লোকসভায় এই ফল হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই এই কেন্দ্রের উপনির্বাচন নিয়ে শাসক দলের যথেষ্ট মাথা ব্যথা রয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ