Advertisement
Advertisement

Breaking News

‘ভূত’ দেখতে এসে বাধা, পর্যটকদের গাড়ি ভাঙচুর বেগুনকোদরে

ভূতের নামে ব্যবসা ফেঁদেছে ট্যুর কোম্পানিগুলি?

Purulia: Begunkodar inhabitants allegedly hackle tourists to prevent 'Ghost Tourism'
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:January 1, 2018 7:04 am
  • Updated:January 1, 2018 7:28 am

সুমিত বিশ্বাস: এই সেই ‘ভুতুড়ে’ স্টেশন? এখানে নাকি বহুদিন ভূতের বাস? এরকমই প্রশ্ন ইতিউতি ঘোরাঘুরি করছিল ওঁদের মুখে৷ কাগজে এ নিয়ে দেদার খবর পড়েছেন৷ বেড়াতে গিয়ে এমন জায়গা পাশে থাকতে কে না ঢুঁ দিতে চায়! তাই পুরুলিয়া বেড়াতে এসে গাড়ি হাঁকিয়ে বেগুনকোদরে চলে গিয়েছিলেন জনা পঁচিশ পর্যটক৷ সকলেরই চোখেমুখে কৌতূহল৷ গলায় ঝুলছে ক্যামেরা৷ কিন্তু বাসিন্দাদের আপত্তিতে শেষমেশ সে আশা পূরণ হল না৷ স্টেশনে ঢোকার আগেই পর্যটকদের গাড়ি ভাঙচুর করে তাঁদের তাড়িয়ে দেওয়া হল বলেই অভিযোগ৷

ভূত খুঁজতে কুখ্যাত বেগুনকোদরে রাত জাগা শুরু প্রশাসনের ]

Advertisement

প্রায় পাঁচ দশকের আতঙ্ক৷ বেগুনকোদর স্টেশনে সর্বত্র তা জাঁকিয়ে বসে আছে৷ অবশ্য সরানোর সদিচ্ছা নেই বললেই চলে৷ কেননা ভূত থাকলেই ব্যবসা জমে৷ ভূতের টানে এভাবেই পর্যটকরা হাজির হন৷ কৌতূহল আর ‘কুহেলি’ সিনেমার অভিজ্ঞতা মিলিয়ে মিশিয়ে এক গা ছমছমে অভিজ্ঞতার শরিক হতে চান তাঁরা৷ এতেই ঘোর আপত্তি বাসিন্দাদের৷ বিজ্ঞান মঞ্চ হাতে কলমে দেখিয়ে দিয়েছে, এ তল্লাটে ভূত বলে কিছু নেই৷ সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালও তার সাক্ষী ছিল৷ তবু এই কাল্পনিক ভূতের উপদ্রব কিছুতেই কমছে না৷ আর তার টানে পর্যটকদেরও হাজির হওয়ায় কমতি নেই৷

Advertisement

বর্ষশেষে পুরুলিয়া বেড়াতে এসে বেগুনকোদরে পৌঁছেছিলেন জনা পঁচিশেকের একটি দল৷ তাঁরা হুগলি, তারকেশ্বর ও দক্ষিণ বাঁকুড়ার বাসিন্দা৷ গত শনিবার তাঁরা পুরুলিয়ায় পা রেখেছিলেন৷ ঝালদার কাছে তুলিনের একটি হোটেলে উঠেছেন৷ পুরুলিয়ার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে, ছিন্নমস্তার পুজো দিয়ে একজোট হয়েই বেগুনকোদর ঘুরে দেখার সাধ ছিল তাঁদের৷ কিন্তু ঢাল হয়ে দাঁড়ান বাসিন্দারা৷ লাঠিসোঁটা হাতে তাঁরা এগিয়ে আসেন৷ প্রশ্ন করেন, কেন এখানে বেড়াতে এসেছেন? পর্যটকরা জানান, সংবাদমাধ্যমে এই ভুতুড়ে স্টেশনের কথা অনেক শুনেছেন৷ তাই চাক্ষুষ করতে এসেছেন৷ পর্যটকদের সঙ্গে ছিল ক্যামেরাও৷ এই ক্যামেরা দেখে ও পর্যটকদের উত্তর শুনেই খেপে যান স্থানীয় বাসিন্দারা৷ তাঁদের দাবি, এইসব ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে কুসংস্কার ছড়ান পর্যটকরা৷ যার কারণে বদনামের ভাগীদার হতে হয় বেগুনকোদরকে৷ পর্যটকদের সঙ্গে বাসিন্দাদের তপ্ত বাদানুবাদ হয় এ নিয়ে৷ উত্তেজিত বাসিন্দারা পর্যটকদের তিনটি ছোট গাড়ি ভাঙচুর করেন৷ পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন পর্যটকরা৷

26551106_1637557459637299_1085121583_n

ফাঁস ‘ভুতুড়ে’ বেগুনকোদরের রহস্য, সামনে এল ভয়ঙ্কর চক্রান্ত ]

ফেরার পথে কোটশিলা থানায় পুরো বিষয়টি জানিয়ে যান পর্যটকরা৷ তাঁদের বক্তব্য, কোনও অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে তাঁরা বেগুনকোদরে যাননি৷ সংবাদমাধ্যমে এই জায়গা সম্পর্কে অনেক পড়েছেন৷ তাই পুরুলিয়া বেড়াতে এসে স্বাভাবিক কৌতূহলেই তা ঘুরে দেখার ইচ্ছে হয়েছিল৷ কোনওরকম কুসংস্কার ছড়ানো তাঁদের উদ্দেশ্য নয়৷ অন্যদিকে বাসিন্দাদের বক্তব্য, ভূতের নাম করে বেগুনকোদরে ঘোস্ট ট্যুরিজম চালাচ্ছে কিছু ট্যুর ও ট্রাভেল কোম্পানি৷ ওই সংস্থাগুলিই ভূতের নাম করে পর্যটকদের ডেকে আনছে৷ ফলে বিজ্ঞান মঞ্চ ও পুলিশ যতই উদ্যোগই নিক না কেন, ভূতের বাসা হয়েই ক্রমাগত থেকে যাচ্ছে বেগুনকোদর৷

জীবিতকে মৃত বলে ঘোষণা করে স্কুলে শোকপালন, ২ দিন ছুটি! ]

এদিকে বেড়াতে এসে পর্যটকরা হেনস্তার মুখে পড়ার ঘটনায় বেশ আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে৷ বর্ষশেষ আর বর্ষবরণের এই মুহূর্তে অযোধ্যা পাহাড় সংলগ্ন এলাকায় পর্যটকের ঢল নেমেছে৷ বেগুনকোদরের এই ঘটনায় অন্যান্য পর্যটকদের চোখেমুখেও আতঙ্কের ছাপ৷

ছবি- অমিত সিং দেও

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ