Advertisement
Advertisement

Breaking News

পুলিশ ডগ

মারা গেল ‘অতন্দ্র প্রহরী’ প্লুটো, গান স্যালুটে পুলিশ ডগকে বিদায় জানাল সিআরপিএফ

মাও দমন অভিযান থেকে লং রুট পেট্রোলিং, সবেতেই বড় ভূমিকা পালন করেছে সে।

Purulia: Gun-salute farewell for Police dog named Pluto
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:October 10, 2019 8:14 pm
  • Updated:October 10, 2019 8:14 pm

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: জঙ্গল পথে কি বিছানো রয়েছে আইইডি? বিপদের ইঙ্গিত পেতেই বিস্ফোরক খুঁজত সে। অংশ নিয়েছিল ৩১০টা অভিযানে। তা মাও দমনের অভিযান হোক, কিংবা লং রুট পেট্রোলিং। কিংবা নাকা চেকিং। ঝাড়খণ্ড ঘেঁষা বনমহল বান্দোয়ানের ‘অতন্দ্র প্রহরী’ হয়ে উঠেছিল সে। টানা ছ’বছর এভাবেই সামলেছে শিবির। আজ সবই অতীত। তাকে নিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপিএফের জঙ্গল যুদ্ধ এখন স্রেফ স্মৃতি। সারমেয় প্লুটো যে আর নেই। দু’দুবার গান স্যালুটে শ্রদ্ধা জানিয়ে প্লুটো এখন ফ্রেমে বাঁধানো ছবি!

জঙ্গলমহল পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের গুড়পানা ক্যাম্পের সদস্য ছিল পুলিশ ডগ প্লুটো। ২০১৪ সালের গোড়া থেকে এই শিবিরই ছিল তার কর্মস্থল। জার্মান শেফার্ড এই সারমেয়র বেতন ছিল সাত হাজার টাকা। সেই টাকাতেই প্লুটোর ভরন-পোষণ করত মাও দমনে বান্দোয়ানে মোতায়েন থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপিএফ। কিন্তু হঠাৎই তার লিভারের সমস্যা আর শরীরে কমতে থাকা হিমোগ্লোবিন তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারপর চিকিৎসার জন্য তাকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চলতি মাসের সাত তারিখ সল্টলেকে সিআরপিএফের থ্রি সিগন্যাল ব্যাটেলিয়নে মারা যায় প্লুটো।

Advertisement

[আরও পড়ুন: প্রয়াত তৃণমূলের শীর্ষ নেতা, রাজনৈতিক ভেদ ভুলে একসঙ্গে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন বিজেপিরও]

বেলগাছিয়ায় ভ্যাটেনারি হাসপাতালে তার ময়নাতদন্তের পর সল্টলেক ও এই কেন্দ্রীয় বাহিনীর ১৬৯ নম্বর ব্যাটেলিয়নের হাওড়া কার্যালয়ে কফিন বন্দি অবস্থায় তাকে গান স্যালুটে বিদায় জানানো হয়। ন’বছর সাত মাস উনিশ দিন বয়সের প্লুটোকে হারিয়ে এখন মনমরা ১৬৯ ব্যাটেলিয়েনের গুড়পানা ক্যাম্পের জওয়ানরা। তার ‘সার্ভিস বুক’ বলছে, ২০১০ সালের ১৯ ফ্রেব্রুয়ারি তার জন্ম। কিছুদিন পর থেকেই সে জঙ্গল-পাহাড়ি যুদ্ধে প্রশিক্ষণ নিতে থাকে। ২০১৩ সালের শেষ থেকে এই ব্যাটেলিয়নের সিআরপিএফ জওয়ান শেখ গোলাম মোস্তাফার তত্বাবধানে থাকত। বলা যায় তার সমস্ত দেখভাল করতেন সিআরপিএফের ওই কনস্টেবল। তাঁর কথায়, “মনে হচ্ছে সঙ্গী হারা হলাম। আর কোনও অভিযানেই প্লুটোকে পাব না। টানা ছ’টা বছরের স্মৃতি যেন চোখের সামনে ভাসছে।”

Advertisement

dog

দুশ গ্রাম আটার রুটি, পাঁচশ গ্রাম মুরগীর মাংস, দুটো করে ডিম সেদ্ধ, এক গ্লাস দুধ। সেই সঙ্গে প্যাকেট-প্যাকেট গ্লুকোজ। প্লুটোকে সময়মতো এসব খাবার তুলে দিতেন ওই কনস্টেবলই। ‘ভিআইপি’ ট্রিটমেন্টে থাকা প্লুটো অত্যন্ত ক্ষিপ্রতার সঙ্গে শত্রুর ওপর আছড়ে পড়ত। যা মেটাল ডিটেক্টরে বোঝা যেত না সেই বিপদ যেন আগেভাগেই ইশারা-ইঙ্গিতে বাতলে দিত। অপারেশনের সময় জঙ্গল পথে সবার আগে গিয়ে শোনাত বিপদের সতর্কবানী। তাই এমন সঙ্গীকে হারিয়ে সমগ্র গুড়পানা ক্যাম্প যেন শোকে মূহ্যমান। ওই শিবিরের কমান্ড্যান্ট অমিতকুমার গুপ্তা বলেন, “কিছুই ভাল লাগছে না। কাজেও মন বসাতে পারছি না। কত হাড় হিম ঘটনার সাক্ষী। কত যে বিপদ থেকে বাঁচিয়েছে ওই প্লুটো।”

[আরও পড়ুন: ধারে চা দিতে অস্বীকার, মহিলা বিক্রেতাকে বেধড়ক মারধর যুবকের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ