Advertisement
Advertisement
Singur

‘টাটা সিঙ্গুর ছাড়ার দায় মমতার নয়’, সিপিএমকেই কাঠগড়ায় তুললেন মাস্টারমশাই

আর কী বললেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাটার্য?

Rabindranath Bhattyachariya slams CPM over Singur issue | Sangbad Pratidin
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:October 31, 2023 8:27 pm
  • Updated:October 31, 2023 8:27 pm

সুমন করাতি, হুগলি: টাটা বিদায়ের পনেরো বছর পার। আবার চর্চায় সিঙ্গুর। সোমবারই অরবিট্রাল ট্রাইব্যুনাল রায় দিয়েছে টাটারা সিঙ্গুরে কারাখানা গড়তে যে টাকা লগ্নি করেছিল তা সুদ সমেত ক্ষতিপূরণ হিসাবে ফেরত দিতে হবে রাজ্যকে। কোষাগার নিয়ে জর্জরিত নবান্নের উপর এই নতুন দায় চাপতেই সিপিএমকে কাঠগড়ায় তুললেন সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য।

সিঙ্গুরের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টচার্য। ২০২১ সালে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবার তিনি বলেন, “টাটারা সিঙ্গুর থেকে চলে যাওয়ায় শুধু সিঙ্গুরের ক্ষতি হয়নি, গোটা রাজ্যের ক্ষতি হয়েছে। টাটা চলে যাওয়ার পর রাজ্যে আর কোনও শিল্প আসেনি। ট্রাইব্যুনালের রায়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে খেসারত দিতে হবে, তার দায় মমতার ছিল না। তৎকালীন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর সামনে একটি চুক্তি হয়েছিল। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন যারা ইচ্ছুক জমিদাতা, শিল্পের জন্য জমি দিয়েছেন তাঁদের জমিতে শিল্প হোক। সেটা প্রায় ৭০০ একর মতো। অনিচ্ছুকদের জমি তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু সে কথা সিপিএম মানেনি। টাটা চলে যাওয়ার দায় পুরোপুরি মমতার নয়।”

Advertisement

কৃষি জমি রক্ষা কমিটির তৎকালীন সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের কথায়, “বামফ্রন্টের পরে তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছে। মমতার সরকার কারখানা ভেঙেছে কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু সেটা সম্পূর্ণরূপে এখনও হয়নি। টাটা চলে যাওয়ার পিছনে সবারই দায় আছে। মমতাতে একা কাঠগড়ায় তুলে লাভ নেই। আন্দোলনের ভয়ে টাটা তার কর্মীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে কারখানা সরিয়ে নেয়।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: ঘড়ির কাঁটা ৯ টা পেরতেই শুনশান পথঘাট, স্টোনম্যান আতঙ্কে কাঁটা বীরভূমবাসী]

২০০৬ সালে বুদ্ধদেববাবুর সরকার টাটাকে সিঙ্গুরে ছোটো গাড়ি তৈরির জন্য জমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সেই মতো রাজ্যের শিল্প উন্নয়ন নিগমের সঙ্গে টাটার চুক্তি হয়। সিঙ্গুরের বেরাবেড়ি, খাসেরভেড়ি, সিঙেরভেড়ি, বাজেমেলিয়া ও গোপালনগর মোট পাঁচটি মৌজার ৯৯৭ একর জমি চিহ্নিত করে অধিগ্রহণ করা হয়। সেই জমি ঘিরতেই শুরু হয় আন্দোলন। অনিচ্ছুক কৃষকরা দাবি করেন, তাঁদের উর্বর জমি এভাবে জোর করে নিয়ে নেওয়া যাবে না। তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যান সিঙ্গুরের কৃষকরা। কারখানার কাজ প্রায় আশি শতাংশ শেষ হয়ে গেলেও পিছু হটে টাটা। ২০০৮ সালে সিঙ্গুর থেকে কারখানা গুটিয়ে গুজরাটে চলে যায়।

বলা হয়, সিঙ্গুরকে ভর করে রাজ্যে পালাবদল হয়। তার লাভ ঘরে তোলে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ নেন তিনি। কিন্তু জনস্বার্থে জমি অধিগ্রহণ হয়েছিল বলে আদালতে হলফনামায় জানিয়েছিল বাম সরকার। সেই মামলা হাই কোর্ট থেকে সুপ্রিমকোর্টে যায়। ২০১৬ সালে সর্বোচ্চ আদালত রায় দেয় কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দিতে হবে। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঙ্গুরের কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন। ন্যানো কারখানা এবং অনুসারী শিল্পের শেড ভাঙা হয় রাতারাতি। পনেরো বছর পর সোমবার ট্রাইব্যুনাল রায় দিয়েছে টাটারা সিঙ্গুরে কারাখানা গড়তে যে টাকা লগ্নি করেছিল তা সুদ সমেত ক্ষতিপূরণ হিসাবে দিতে হবে।

[আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুজোর পর দেবীদুর্গার বোধন! অকাল পুজোয় মাতল উত্তর দিনাজপুরের এই গ্রাম]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ