সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মৃত্যুর আবেগের কাছে হার মানল করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ। শুক্রবার করোনায় (Coronavirus) মৃত পানিহাটি পুরসভার প্রশাসক স্বপন ঘোষের দেহ নিয়ে রীতিমতো শোক মিছিল হল এলাকায়। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে শয়ে শয়ে মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন। আর তাতে যেমন সংক্রমণে বৃদ্ধির আশঙ্কা বাড়ল কয়েকগুণ, তেমনই পুলিশ কীভাবে এই শোকমিছিলের অনুমতি দিল, তা নিয়েও উঠে গিয়েছে প্রশ্ন।
পানিহাটি পুরসভার প্রশাসক স্বপন ঘোষ এলাকায় জনপ্রিয় নেতা হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। বছর তিনেক আগে কিডনি প্রতিস্থাপনও হয় তাঁর। এর মধ্যেই আবার অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। করোনা আবহে সচেতন নাগরিকের দায়িত্ব মেনে পরীক্ষা করান। রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর তড়িঘড়ি বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয় তাঁকে। বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে আচমকাই স্বপনবাবুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। শুরু হয় প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট। শুক্রবার ভোরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পানিহাটির পুরপ্রশাসক তথা তৃণমূলের বর্ষীয়ান রাজনীতিক।
[আরও পড়ুন: গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত ফের তিন হাজার ছুঁইছুঁই, উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কলকাতা]
কথা ছিল, করোনা বিধি মেনেই স্বপন ঘোষের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। কিন্তু কোথায় কী? বাস্তবে দেখা গেল, তাঁর দেহ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে আসার পর অজস্র অনুরাগী, দলের কর্মী-সমর্থক – সকলে মিলে দেহ নিয়ে শোক মিছিলে শামিল হন। অথচ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলে, তা পুরসভার নির্দিষ্ট বিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে হবে অন্ত্যেষ্টি। পরিবারের সদস্যরাও সেখানে থাকতে পারেন না। সংক্রমণ এড়াতে এটাই প্রোটোকল। কিন্তু ব্যতিক্রম ঘটে গেল পানিহাটিতে। জনসমাগম দেখে বোঝার উপায় রইল না যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে পুর প্রশাসকের।
[আরও পড়ুন: মোবাইল কিনে দিতে রাজি হননি বাবা, অভিমানে আত্মঘাতী মাধ্যমিক উত্তীর্ণ কিশোর]
এমনিতেই করোনা সংক্রমণে কলকাতাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। গোড়া থেকেই এই জেলা মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিল স্বাস্থ্য দপ্তরের। দফায় দফায় বিভিন্ন পুর এলাকায় লকডাউন (Lockdown) করে সংক্রমণে লাগাম পরানোর চেষ্টা কম হয়নি। তা সত্ত্বেও বিশেষ লাভ হয়নি। এবার পানিহাটির এই ছবি আশঙ্কা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিল। প্রশ্ন উঠছে, পুলিশের নজর এড়িয়ে এভাবে শবদেহ নিয়ে মিছিল হল কীভাবে?