Advertisement
Advertisement

Breaking News

অনিচ্ছা সত্ত্বেও যাত্রীদের জোরাজুরিতে টোটো চালাল নাবালক, বেঘোরে মৃত ৭

ধর্মীয় সভায় যাওয়ার পথে সব শেষ।

Road accident kills seven in Nadia
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:February 10, 2018 8:25 pm
  • Updated:February 10, 2018 8:59 pm

পলাশ পাত্র, তেহট্ট: কথা ছিল ‘বোলারো’ গাড়ি ভাড়া করে ধর্মীয় সভায় যোগ দিতে যাবে ওই পরিবার। সেই মতো পরিবারের সাতজন সদস্য ছাড়াও ওই এলাকার আরও তিনজন যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গাড়িটি সময় মতো এসে না পৌঁছনোয়, এলাকার নাবালক টোটো চালক ইমরানকে সকলে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানায়। কিন্তু ইমরান অতজনকে নিয়ে যেতে প্রথমে অস্বীকার করে। পরে এলাকাবাসীর অনুরোধে রাত প্রায় আটটা কুড়ি নাগাদ রওনা দেয় তাঁরা।

এই ঘটনায় কৃষ্ণনগরে করিমপুর রোডের উপর দশ চাকা লরির ধাক্কায় মারা গেলেন ৭জন। শুক্রবার নয়জনকে নিয়ে টোটোতে চেপে বাড়ি থেকে আট কিলোমিটার দূরে ধর্মীয় সভায় যোগ দিতে যাচ্ছিলেন দিনমজুর চাপলু বিশ্বাস। গাড়িটি গ্রামের রাস্তা ছেড়ে হাইওয়েতে ওঠার পরই ঘটে এই দুর্ঘটনা। ঘটনাস্থলে প্রাণ হারায় পরিবারের চার সদস্য। বাকিদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, সেখানে মৃত্যু হয় আরও দুজনের।

Advertisement

ইমরানের পাশে কোন রকমে বসেছিলেন বছর পঁয়ত্রিশের মেহেনিসা বিবি। টোটোর ভেতরে ছিলেন আটান্ন বছরের সুরিয়া বিবি, চাপলু, তাঁর স্ত্রী এবং তিন কন্যা। আর গাড়ির পেছনে ঝুলতে ঝুলতে যাচ্ছিলেন খালেক বিশ্বাস ও চাপলুর বছর দশেকের ছেলে বকুল। দেড় কিলোমিটার পথ পেরিয়ে কৃষ্ণনগর করিমপুর রোডের হাটরায় গাড়ি ওঠার কিছুক্ষণের মধ্যেই দ্রুতগতির একটি লরির ধাক্কায় টোটোটি ভেঙেচুরে যায়। টোটোতে থাকা পাঁচজন ঘটনাস্থলে মারা যান। বাকিদের চাপড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে কৃষ্ণনগর শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে আহতদের স্থানান্তরিত করা হয়। এদের মধ্যে দুজন কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

Advertisement

[সৌমেন চক্রান্তের শিকার ও নির্দোষ, কারমেল কাণ্ডে অভিযুক্তর পাশে পরিবার]

চাপলুবাবু নিজে মজুরের কাজ করলেও চার সন্তানকে পড়াশুনা করাতে চেয়েছিলেন। সেই জন্যই তিন মেয়ে তাসলিমা, নাসরিন, ঝরনা এবং এক ছেলে বকুলকে গ্রামের স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন। তসলিমা মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী,  নাসরিন অষ্টমশ্রেণি ও ঝর্ণা চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। বর্তমানে তিন মেয়ে ও স্ত্রী-এর মৃত্যুর খবর চাপলু বাবু জানেন না। তাই হাসপাতালে ছেলের পাশের বিছানায় শুয়ে আতঙ্কে কাঁপতে কাঁপতে তিনি বলেছেন, টোটোতে ধাক্কা লাগার পর কী হল মনে নেই। শুধু মনে আছে কয়েকটা আর্তনাদের শব্দ পেয়েছিলাম আর তারপর সব অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল।

এক বছর আগে এরকমই এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় টোটো চালক গোলাম মোস্তাফা পঙ্গু হয়ে যান। তারপর সংসারের দায়িত্ব নেয় তাঁর নাবালক ছেলে ইমরান। বর্তমানে সে স্থানীয় স্কুলে পড়াশুনার পাশাপাশি টোটোও চালাত। এই আকস্মিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার পরিবারেও।

[হার্নিয়ার অপারেশনের পরও ৩৩০ বার ওঠবস, কাঠগড়ায় মাদ্রাসার শিক্ষক]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ