ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, বারাকপুর: লকডাউনের স্তব্ধতাতেও অশান্ত ভাটপাড়া। শনিবার সকালে সেখানে অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীদের গুলিতে এক তৃণমূল কর্মী জখম বলে খবর। ভাটপাড়া পুরসভার ১৭ নং ওয়ার্ড এলাকার এই ঘটনাকে রাজনৈতিক সংঘর্ষ বলেই অভিযোগ তুলছেন সেখানকার তৃণমূল নেতৃত্ব। বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং এর নেপথ্যে রয়েছেন বলে অভিযোগ।
শনিবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়ায় তৃণমূলের টাউন অফিস থেকে ত্রাণ দেওয়া চলছিল। মুলিন রজক নামে এক কর্মী সেখানে ত্রাণ বিলির কাজ করছিলেন। বণ্টনের কাজ শেষ হলে, তিনি পার্টি অফিস থেকে ১৭ নং ওয়ার্ডে নিজের বাড়ির দিকে ফিরছিলেন। এমন সময়ে আচমকা জনা কয়েক অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতী এসে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। দু’রাউন্ড গুলি চালালেও তা প্রথমে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরের গুলিটি গিয়ে মুলিনের পায়ে লাগে। তিনি মাটিতে পড়ে যান। দিনের বেলা গুলির শব্দ শুনে আশেপাশের মানুষজন বেরিয়ে আসেন। ততক্ষণে দুষ্কৃতীরা ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দিয়েছে। স্থানীয় মানুষজনই আহত অবস্থায় মুলিনকে উদ্ধার করে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁর পা থেকে গুলি বের করার জন্য অস্ত্রোপচার শুরু করেছেন বলে খবর।
[আরও পড়ুন: দুর্দিনে নীরবে জীবসেবা, হাসপাতালে রোগীর পরিবারগুলিকে রোজ দু’বেলা খাওয়াচ্ছেন ব্যবসায়ী]
ভাটপাড়ার তৃণমূল নেতা সোমনাথ শ্যাম এই হামলার জন্য সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ তথা ভাটপাড়া এলাকার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংয়ের দিকে। তাঁর অভিযোগ, এই লকডাউনের পরিবেশেও ভাটপাড়ায় রাজনৈতিক অশান্তি জিইয়ে রাখতে চাইছেন অর্জুন সিং। এই দুঃসময়ে রাজ্য জুড়ে শাসকদল যে জনগণের পাশে থেকে কাজ করছে, সেই ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য তাঁর নির্দেশেই এই হামলা। এতে এলাকাবাসীর মনে ভয় উসকে দিয়ে তৃণমূল কর্মীদের থেকে তাঁদের দূরত্ব বাড়িয়ে তোলা এবং প্রাপ্য রেশন ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী হাতে পাওয়া থেকে জনগণকে বঞ্চিত করাই তাঁর উদ্দেশ্য বলে মনে করছেন সোমনাথ শ্যাম।
[আরও পড়ুন: বিশাখাপত্তনমে গ্যাস দুর্ঘটনার জের, বাংলা না ছুঁয়েই বিহার গেল শ্রমিক ট্রেন]
ভাটপাড়া এলাকায় রাজনৈতিক সংঘর্ষ বা দিনের আলোয় গুলি চালনার ঘটনা নতুন কিছু নয়। বারাকপুর শিল্পাঞ্চলের এই অঞ্চলের কুখ্যাতিই রয়েছে সমাজবিরোধী কার্যকলাপের জন্য। কিন্তু লকডাউন পরিস্থিতিতেও যে সেই একই সন্ত্রাসের পরিবেশ বজায় থাকবে, তা বোধহয় ভাবতে পারেননি কেউই। কিন্তু আজকের ঘটনাই তাঁদের ভাবনা ভের তদন্ত শুরু ভেঙে দিল। মুলিন রজকের উপর হামলার ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ভাটপাড়া থানার পুলিশ। এটি রাজনৈতিক সংঘর্ষ নাকি ব্যক্তিগত শত্রুতার জের, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।