Advertisement
Advertisement

Breaking News

সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ অবৈধ, জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট

হুগলির সিঙ্গুরে টাটা গোষ্ঠীর ন্যানো গাড়ি কারখানার জন্য বাম আমলে ৯৯৭ একর জমি অধিগ্রহণ করে টাটাদের লিজ দেয় সরকার৷

singur land acquisition verdict in supreme court
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:August 31, 2016 2:33 pm
  • Updated:August 31, 2016 2:46 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০০৬ সালে বাম আমলে টাটাদের কারখানার জন্য সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ অবৈধ বলেই জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট৷ ১৮৯৪ সালের জমি অধিগ্রহণ আইন অনুযায়ী এই রায় দিল বিচারপতি গোপাল গৌড়া ও অরুণ মিশ্রর ডিভিশন বেঞ্চ৷

হুগলির সিঙ্গুরে টাটা গোষ্ঠীর ন্যানো গাড়ি কারখানার জন্য বাম আমলে ৯৯৭ একর জমি অধিগ্রহণ করে টাটাদের লিজ দেয় সরকার৷ এর মধ্যে অন্য গুটিকয়েক সংস্থাও ছিল৷ কিন্তু সেই জমি পুরোপুরি হাতে পায়নি টাটারা৷ সেখানকার অনিচ্ছুক কৃষকদের কাছ থেকে জোর করে জমি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগে উত্তাল হয়েছিল শুধু সিঙ্গুর নয়, পুরো রাজ্য৷ বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন৷ পরে নিজেরাই সরে গিয়েছিল টাটারা৷ এবং ক্ষমতায় এসেই প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানকার অনিচ্ছুকদের জমি ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন৷ প্রথমে অর্ডিন্যান্স এবং পরে দ্রূত আইন তৈরি করে চাষিদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ যার নাম ‘সিঙ্গুর জমি পুনর্বাসন ও উন্নয়ন আইন’৷ এই আইনের মাধ্যমে পুরো জমি ফিরিয়ে নেয় সরকার৷ রাজ্যের আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে যায় টাটারা৷ হাই কোর্ট এই আইনকে খারিজ করে দিলে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য৷ সেই প্রেক্ষিতেই এই যুগান্তকারী রায়৷ দেশজুড়ে জমি আন্দোলনের ক্ষেত্রে এই রায় নজিরবিহীন বলেই মনে করা হচ্ছে৷

Advertisement

অধিগ্রহণ অবৈধ ঘোষণার পাশাপাশি ১২ সপ্তাহের মধ্যে অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হল৷ যাঁরা ক্ষতিপূরণ নিয়ে নিয়েছেন তাঁদেরকেও টাকা ফেরত দিতে হবে না বলে নির্দেশ সর্বোচ্চ আদালতের৷ স্বভাবতই এ রায় শোনার পর উচ্ছ্বাসের ছবি সিঙ্গুর জুড়ে৷ এতদিন জমি হারিয়ে, রুটি রুজি হারিয়ে যে অসহনীয় অবস্থার মধ্যে দিন কাটিয়েছে মানুষ, তার থেকে এতদিনে যেন মুক্তি পেলেন সাধারণ সিঙ্গুরবাসী৷একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও এ সাফল্য বিরাট বড়৷ সেদিন জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে তিনি যে শুধু রুখে দাঁড়িয়েছিলেন তাই নয়, সরকারে আসার পর অধিগ্রহণ আইনে বদলও আনতে চেয়েছিলেন তিনি৷ তৈরি করেছিলেন সিঙ্গুর আইন৷ কিন্তু আইনি জটিলতায় কৃষকদের হাতে জমি তুলে দিতে পারেননি তিনি৷ কিন্তু তাঁর আন্দোলনের পথ যে সঠিক পথেই ছিল, আজ সর্বোচ্চ আদালত যেন তাতেই স্বীকৃতি দিল৷

Advertisement

শুধু রাজ্যের ক্ষেত্রেই এই রায় নজিরবিহীন নয়, সারা দেশের ক্ষেত্রেও বটে৷ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে সরকারি জমি অধিগ্রহণ পদ্ধতিতে বদল আসতে পারে এই রায়ে৷ পুরনো অধিগ্রহণ আইনেও হয়তো বদল আনা হতে পারে৷ কৃষকের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করে সরকার যে বেসরকারী সংস্থার জন্য জমি অধিগ্রহণ করতে পারে না, আজ থেকে এ নিয়ে আর কোনও দ্বিধা নেই৷ সেই নিরিখে সারা দেশে জমি আন্দোলনের ক্ষেত্রে পুরোধা হয়ে থাকল সিঙ্গুর জমি আন্দোলন৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ