Advertisement
Advertisement
WB Assembly Election 2021

সীমান্ত পেরিয়ে রুজির খোঁজই নিয়তি, ভোট আসে ভোট যায় বদল নেই ওঁদের জীবনে

বৈধ নাগরিকত্ব সত্ত্বেও ইচ্ছেমতো নিজের জমিতে ফসল আবাদ করার অধিকার মেলেনি!

Situation of therse villagers never changed in West Bengal ahead of WB Assembly Election 2021 | Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:March 15, 2021 6:24 pm
  • Updated:March 15, 2021 7:51 pm

শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: আজও কাঁটাতারে বন্দি জীবন। রুজির টানে নিজের চাষের জমিতে ওদের যেতে হয় ঘড়ির কাঁটা মেপে। উত্তর দিনাজপুরের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া হেমতাবাদের বিষ্ণুপুরের বাসিন্দাদের রোজনামচা। সময় হেরফের হলেই বন্ধ হয় সীমান্ত গেট। তখন ঘরে ফেরা হয় না। বাধ্য হয়ে কাঁটাতারের ওপারে জমিতেই থাকতে হয়। এখানে কখন ভোট আসে আর কখন তা চলে যায়, কেউ খোঁজ রাখে না।

কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে কয়েক শো বিঘা কৃষিজমি। সেখানে যাতায়াতের সময় বেঁধে দেওয়া রয়েছে। যা নিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভ দীর্ঘদিনের।সময় বাড়ানোর দাবিতে সরব প্রত্যেকে। কারণ, কাঁটাতারের ওপারের জমিতে চাষ-আবাদ নিয়ে ঘোর বিপাকে এপারের অন্তত সাড়ে তিন হাজার কৃষক। বর্ষায় বন্যায় ভেসে যায় ওপারের আবাদি জমি। কিন্তু জল সরানোর নেই কোনও পথ। এপার থেকে হিউম পাইপ সীমান্তের গেট দিয়ে ওপারে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি নেই। ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতা পর এপারেই থেকে যান ওঁরা। কিন্তু এতদিনেও রোজগারের স্বাধীনতা মেলেনি। বৈধ নাগরিকত্ব সত্ত্বেও ইচ্ছেমতো নিজের জমিতে ফসল আবাদ করার অধিকার মেলে না। দীর্ঘদিনের ওই ক্ষোভ নিয়ে এবারও ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বামুই, বাটোলা, করইডাঙি, কাচতোরই, ভোগ্রাম, বাসুদেবপুর, ধনতোর, কলুয়া গ্রামের পৌনে দুই হাজার ভোটার।

Advertisement

[আরও পড়ুন : চলতি সপ্তাহেই ফের পূর্ব মেদিনীপুর সফরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, একাধিক কর্মসূচি নন্দীগ্রামেও]

ভোট প্রচারে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের ঘনঘন আনাগোনা শুরু হয়েছে সবে। তাঁদের কাছে সীমান্তের মানুষজনের একটাই দাবি, ওপারের জমির দলিল আছে। কিন্তু ইচ্ছেমতো চাষ করার জন্য যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হোক। পাঁচ বছর ধরে পাট ও ভুট্টা চাষের অনুমতি বন্ধ। আমন ও বরো ধান চাষ হয় এখন। কাঁটাতার পেরিয়ে সময় মেপে সীমান্তের গেট দিয়ে চাষের কাজ সেরে আবার সন্ধ্যার আগেই ফিরে আসতে হয়।

Advertisement

বামুই গ্রামের ষাটোর্ধ্ব ফরমান আলি বলেন, “ওপারে আমার নয় বিঘা জমি আছে। কিন্তু গত বছর বন্যার জলে অনেক ধান পচে নষ্ট হয়। অথচ এপার থেকে পাইপ নিয়ে জল সরাতে পারলাম না। বিএসএফ-কে অনেক অনুরোধ করেও লাভ হয়নি।” নিজের দেশে থেকেও যেন ওঁরা পরবাসে। বছর চল্লিশের সানোয়ারা খাতুন এই মরসুমে ওপারের আট বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। এপারে বাসুদেবপুরের বাড়ির উঠোনে ছড়ানো লাল আলু বস্তায় তোলার সময় তিনি বলেন, “এই আলু চাষ করে এপারে আনতে নানারকম ঝক্কি সামলাতে হয়েছে। একদিন সকাল আটটায় গেট খুলতে ওপারের জমিতে গিয়ে গেট বন্ধ হওয়ায় আর ভাত খেতে আসতে পারিনি দুপুরে। সেই সন্ধ্যায় আসতে হয়েছে।” দেশভাগের পর কাঁটাতারের বেড়া হয়েছে। কিন্তু নাগরিক হয়েও জীবিকা অনিশ্চিত। এটাই আফসোস করুইডাঙির মির্জা আলির। তাঁর কথায়, “সীমান্তে যাতায়াতের নিয়ম না বদল করলে কষ্ট দূর হবে না।” ভোটের জন্য বিভিন্ন দলের লোকজন আসা-যাওয়া করছে গ্রামে। সমস্যার কথাও উঠছে। কিন্তু সমাধান কি মিলবে? জানেন না কেউ-ই।

[আরও পড়ুন : চলতি সপ্তাহেই ফের পূর্ব মেদিনীপুর সফরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, একাধিক কর্মসূচি নন্দীগ্রামেও]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ