Advertisement
Advertisement
উপসর্গহীন করোনা আক্রান্ত

উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তকে হোম আইসোলেশনে রাখায় আপত্তি, ৪ ঘণ্টা ঘেরাও চিকিৎসক

ঘেরাও-বিক্ষোভে শিকেয় উঠেছে সামাজিক দূরত্ব।

Some villagers stage protest in front of doctor in Purulia
Published by: Sayani Sen
  • Posted:June 3, 2020 11:19 pm
  • Updated:June 3, 2020 11:19 pm

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: উপসর্গহীন করোনা আক্রান্ত পরিযায়ী শ্রমিকের বাড়িতে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করতে গিয়ে চার ঘন্টা ঘেরাও হয়ে থাকলেন চিকিৎসক। পুরুলিয়ার মফস্বল থানার রামপুর গ্রামের ঘটনা। পুরুলিয়া এক নম্বর ব্লকের চাকলতোড় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক মহিলা মেডিক্যাল অফিসারকে বেলা এগারোটা থেকে বিকাল তিনটে পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখেন এলাকার মানুষজন। তাঁদের প্রশ্ন, মুম্বই ফেরত ওই পরিযায়ী শ্রমিকের রিপোর্ট পজিটিভ আসার পরেও তাঁকে কেন বাড়িতে রাখা হয়েছে?

এই একই কারণে এই থানা এলাকার অধীনে থাকা টামনা ফাঁড়ি ঘেরাও করেন রামপুর লাগোয়া দামদা গ্রামের মানুষজন। ওই গ্রামেও মুম্বই ফেরত পরিযায়ী শ্রমিকের রিপোর্ট পজিটিভ। কিন্তু তাঁরও কোন উপসর্গ নেই। এদিকে গত মঙ্গলবার বিকেল চারটে থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা পুরুলিয়ার মফস্বল থানার পুলিশ ওই থানা এলাকার বাঘড়া গ্রামে ঘেরাও হয়েছিল। এই দুটি ঘটনাতেই সামাজিক দূরত্ব শিকেয় ওঠে। পরে দুটি ঘটনাতেই সংশ্লিষ্ট বিডিও ও মফস্বল থানার আইসির হস্তক্ষেপে ঘেরাও মুক্ত হন চিকিৎসক থেকে পুলিশ আধিকারিক সকলেই।

Advertisement

আসলে উপসর্গহীন আক্রান্তদের কোয়ারেন্টাইনের বিধি নিয়ে এই জেলায় ভুল বোঝাবুঝির জেরে মঙ্গলবার বিকাল থেকে বুধবার বিকাল পর্যন্ত ঘেরাও বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে। যদিও পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস. সেলভামুরুগন বলেন, “বাঘড়া গ্রামে পুলিশকে আটকে রাখা হয়নি। একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে তা মিটে যায়।” অথচ ওই গ্রামের বাসিন্দাদের করা ভিডিওতে দেখা যায় সামাজিক দূরত্ব না মেনে পুলিশকে আটকে রাখা হয়েছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: উস্তির কোয়ারেন্টাইনে খাবারের দাবি তুলে গ্রেপ্তার ১২ জন গ্রামবাসী, প্রতিবাদে ধরনা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের]

পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়া মফস্বল থানার বাঘড়া, দক্ষিণ বহাল ও ঘোঙা গ্রামের মুম্বাই ফেরত মোট ৬ জন পরিযায়ী শ্রমিকের রিপোর্ট পজিটিভ। তবে তাঁদের কোন উপসর্গ নেই। তাঁদের পুরুলিয়ার করোনা হাসপাতালে দু’দিন ধরে আইসোলেশনে রাখা হয়। তারপর মঙ্গলবার বিকালে বাঘড়া গ্রামে পুলিশ তাঁদের পৌঁছে দিতে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, করোনা আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও দু’দিনের মধ্যে কেন হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হল তাঁদের? তাহলে কি তাঁদের রিপোর্ট ভুল ছিল?

এদিন প্রায় একই অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রামপুর গ্রামও। ওই এলাকার বাসিন্দারা বলতে থাকেন, পজিটিভ হওয়া সত্ত্বেও পরিযায়ী শ্রমিকদের কেন ঘরে রাখা হয়েছে? তাহলে কি রিপোর্ট ভুল? যদি তাই হয় তাহলে গ্রামে কেন কনটেনমেন্ট ও বাফার জোন করা হয়েছে? ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে, এই ক্ষেত্রেও রামপুর ও দামদা গ্রামের আক্রান্তদের নমুনা সংগ্রহের পর ১৪ দিন অতিক্রান্ত হয়েছে। তাই তাঁদের সাত দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়। তবে তাঁদের পরিবারকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। এই ঘটনাগুলিতে গ্রামের মানুষজনের ঘেরাও-বিক্ষোভে সামাজিক দূরত্ব যেভাবে শিকেয় উঠছে তাতে চিন্তায় পড়ে গিয়েছে প্রশাসন।

[আরও পড়ুন: আমফানের জেরে এখনও অন্ধকারে ডুবে হাড়োয়া, বিদ্যুৎ দপ্তরে ভাঙচুর করল ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ