দিব্যেন্দু মজুমদার ও সুমিত বিশ্বাস: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব তৈরি করা ছাড়া বিকল্প নেই। তাই চলছে লকডাউন। তার জেরেই বন্ধ গণপরিবহণ। স্বাভাবিকভাবেই বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়েন বহু শ্রমিক। সেরকমই হুগলিতে আটকে পড়া পঞ্চান্নজনকে বাড়ি ফেরালেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এবং আবদুল মান্নান। পুরুলিয়ায় আটকে পড়া তেইশজনকে বাড়ি পৌঁছে দিল পুলিশ।
মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর থেকে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে এসে লকডাউনের কারণে বৈদ্যবাটিতে আটকে পড়েন ৫৫ জন রাজমিস্ত্রি। তাঁরা সকলেই মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের বাসিন্দা। বৈদ্যবাটিতে কাজিপাড়া অঞ্চলে তাঁরা এক ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতেন। সমস্ত ধরণের পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় তাঁদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়। একটি বেসরকারি বাস ভাড়া করে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনাও করেন। তাঁরা বলেন, মুর্শিদাবাদে পৌঁছে বাসভাড়া মিটিয়ে দেবেন। কিন্তু এই শর্তে কোনও বাসমালিকই রাজি হননি। কংগ্রেসের আবদুল মান্নান বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে যোগাযোগ করেন। পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তাঁকে যোগাযোগ করতে বলা হয়। আবদুল মান্নান জানান, শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কথা বলার পর মন্ত্রী একটি সরকারি বাসের ব্যবস্থা করে দেন। বৃহস্পতিবার সকালে সেই সরকারি বাসে করে শ্রমিকরা মুর্শিদাবাদ ফিরে যান। আবদুল মান্নান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর প্রশংসা করেন।
[আরও পড়ুন: লকডাউনে অনাহারে ভবঘুরেরা, সাহায্যের হাত বাড়ালেন গুসকরার ব্যবসায়ী]
এদিকে, লকডাউনের জেরে খোলা আকাশের নিচে জঙ্গলে রাত কাটাচ্ছিলেন ২৩ জন রাজমিস্ত্রি। মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের ওই ২৩ জন রাজমিস্ত্রি ওড়িশা থেকে আসার পথে পুরুলিয়ার বলরামপুরের দাঁতিয়ার জঙ্গলে আটকে পড়েন। প্রায় চব্বিশ ঘন্টা ওই জঙ্গলে কাটানোর পর বলরামপুর থানার পুলিশের কাছে খবর আস। খবর পাওয়া মাত্রই তাঁদেরকে মালতি হাইস্কুলে আশ্রয় দেওয়া হয়। তারপর বৃহস্পতিবার সকালে তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে দুপুরের খাবার সমেত নিরাপত্তার জন্য পুলিশ কর্মী দিয়ে বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।বলরামপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, এর মধ্যে আলাদা করে মানবিকতার কিছু নেই। এই পরিস্থিতিতে এটাই আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। তবে ওই রাজমিস্ত্রিরা নিরাপদে বাড়ি ফিরে আসায় উচ্ছ্বসিত তাঁদের পরিবারের লোকজন।