Advertisement
Advertisement

Breaking News

এক যুগ নিরুদ্দেশ, মায়ের কুশপুতুল দাহ করে শ্রাদ্ধ পরিবারের

প্রৌঢ়ের এই সিদ্ধান্তের পাশে প্রতিবেশীরা।

Son burns mother’s effigy as she was missing for 12 years
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:December 15, 2017 6:21 am
  • Updated:September 19, 2019 2:31 pm

অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: রাজনৈতিক কর্মসূচিতে কুশপুতুল দাহ করা আকছার ঘটে। কারও উপর ক্ষোভ দেখাতে তার পুতুল পোড়ানো হয়। তবে এসবই নেহাত প্রতীকী। নিখোঁজ মায়ের সন্ধান না পেয়ে কেউ কুশপুতুল পোড়াতে পারে! এমনও ঘটল এ বঙ্গে।

বারো বছর আগের কথা৷ সময়টা ছিল দুর্গাপুজোর মহালয়ার আগের দিন৷ সে দিন আচমকা খড়গপুর শহরের কুমোরপাড়া এলাকার এক বৃদ্ধা নিখোঁজ হয়ে যান৷ দুপুরের পর থেকে ৭৫ বছরের মানুষটির খোঁজ মিলছিল না৷ অনেক চেষ্টা করেও তাঁর সন্ধান মেলেনি। এভাবেই এক যুগ পার। এরইমধ্যে ওই বৃদ্ধার মেজো ও ছোটো ছেলেরও মৃত্যু হয়েছে৷ পরিবারে এখন বেঁচে বৃদ্ধার বড় ছেলে৷ আর রয়েছেন চার বিবাহিতা মেয়ে৷ এই অবস্হায় সত্তর ছুঁই ছুঁই বড় ছেলের মনে হয়েছে মা যখন এতদিনেও ফেরেননি তখন তিনি নিশ্চয়ই আর ইহ জগতে নেই৷ সুতরাং কিছু একটা করা প্রয়োজন৷

Advertisement

[বৃদ্ধা প্রাপ্য না পেলে ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের মাইনে বন্ধ, তোপ আদালতের]

Advertisement

কী করা উচিত? এর উত্তর খুঁজতে তিনি পাড়া, প্রতিবেশী থেকে শুরু করে বামুন ঠাকুরের দ্বারস্থ হন৷ তখন সবাই তাঁকে নিদান দেন মায়ের আদলে একটি কুশপুতুল তৈরি করে সেটার শেষকৃত্য করার জন্য৷ সেই হারিয়ে যাওয়া মায়ের কুশপুতুলের শেষকৃত্য হল খড়গপুর শহরের খরিদা মন্দিরতলা শ্মশানঘাটে৷ একেবারে রীতি-আচার মেনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। কুশপুতুলটিকে মৃতদেহের মতো করে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়৷ হরিবোল ধবনি, নাম সংকীর্তনের মধ্যে দিয়ে রাস্তায় খই ছড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় মৃতদেহ৷ মৃতদেহ যেভাবে দাহ করা হয় ঠিক সেইভাবে কাঠের চুল্লির উপর রেখে দাহ করা হয়েছে৷ এমনকী তিনদিন পর মায়ের শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠানও করা হবে৷ সেখানে থাকবে সমস্ত শ্মশান যাত্রীদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা৷ আর এই অভিনব ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা খরিদা লোকায় ব্যাপক কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে৷

[ব্যক্তিগত আক্রোশেই কি যৌনাঙ্গ ছেদ? বৃদ্ধ খুনে রহস্য ঘনাল সল্টলেকে]

নিখোঁজ বৃদ্ধার একমাত্র জীবিত বড় ছেলে শম্ভু ভুঁইয়া জানান “মা হারিয়ে গিয়েছেন আজ থেকে বারো বছর আগে৷ অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি৷ কিন্তু সন্ধান পাওয়া যায়নি৷ তাই আমরা ধরেই নিয়েছি মা আর নেই এই জগতে৷” তারসঙ্গে এই দিনমজুরের আরও সংযোজন “আমারও বয়স হয়েছে৷ এদিকে দুই ভাইও গত হয়েছে। আচমকা যদি আমার কিছু হয়ে যায় তাহলে মায়ের আত্মার শান্তির কাজটি করার আর কেউ থাকবে না৷ তাই পাড়ার সবার পরামর্শ মেনে নিয়ে মায়ের শেষকৃত্যের কাজটি করে ফেললাম৷” ওই এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ রনবামের মতে শম্ভুবাবু একদম ঠিক কাজ করেছেন৷ প্রতিবেশীরা তাঁর পাশে আছেন৷ এমন কাজ করে শম্ভুবাবু অনেক পূণ্য করেছেন বলেও মনে করেন প্রতিবেশীরা। শম্ভু ভুঁইয়া খড়গপুরের খরিদা এলাকার একটি মিষ্টির দোকানে পরিচারকের কাজ করেন৷ খুবই গরিব পরিবার৷ এই পুরো কাজের খরচের একটা অংশ এলাকাবাসী জুগিয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷

ছবি: সৈকত সাঁতরা

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ