ব্রতীন দাস, দার্জিলিং : বাতাসে বহিছে প্রেম, পাহাড়ে লাগিল নেশা। এ এক অন্য বসন্ত পাহাড় জুড়ে।
আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় আগাম পাপড়ি মেলেছে লাল টুকটুকে রডোডেনড্রনগুচ্ছ। পাহাড়ে রডোডেনড্রন রং ছড়াতেই শৈলশহরে বসন্তের আমেজ। উৎসবের আবহ৷পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রেমের উত্তাপও। না-ই বা থাকল গোলাপ, পলাশ৷ পাহাড়ে বসন্তের তাতে কিছু যায় আসে না। এখানে পাহাড়ি মেয়েদের খোঁপায় প্রেমের মরশুমে শোভা পায় রডোডেনড্রন। পাকদণ্ডী বেয়ে সেই ফুলের সুবাস ছড়িয়ে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার দেশে।
এবার অবশ্য সময়ের একটু আগেই বসন্ত এসেছে পাহাড়ে। ফি বছর মার্চের মাঝামাঝি রডোডেনড্রন ফুটতে শুরু করে পাহাড়ে৷ এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত রং ছড়ায়৷ এবার ছবিটা আলাদা। তবে একদিকে ভালই হয়েছে, বলছেন পাহাড়ের ব্যবসায়ীরা।এই সময় পাহাড়ে ভিড় থাকে পর্যটকদের। রডোডেনড্রন এই মরশুমকে অন্য মাত্রা দিচ্ছে। পাহাড়ি পথে ‘খেলনা রেল’ চেপে কিংবা ট্রেকিং রুটে রডোডেনড্রনের সৌন্দর্য এক অদ্ভুত নেশা ধরাচ্ছে। অতিথি অভ্যর্থনায় তৈরি হচ্ছে রডোডেনড্রন ওয়াইন৷ তাতে বুঁদ হচ্ছেন দেশ-বিদেশের পর্যটকরা৷ লাল পাপড়ি বিছানো রডোডেনড্রনের বাগিচায় মুগ্ধতার পরশ পেতে তৈরি হচ্ছে ক্যাম্প৷ পাহাড়ে বসন্তকে স্বাগত জানাতে আয়োজন চলছে নানা উৎসবের।
দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং তো আছেই৷ সিকিম থেকে অরুণাচল, সর্বত্রই দেখা যাচ্ছে রডোডেনড্রন৷ দার্জিলিংয়ের সিঙ্গালিলা রেঞ্জে রডোডেনড্রনের ছড়াছড়ি। সান্দাকফুর রাস্তায় রডোডেনড্রনের শোভা বদলে দিয়েছে পাহাড়ি গ্রামের চেনা ছবি৷ কালিম্পং থেকে লাভা যাওয়ার পথে কিংবা কার্শিয়াংয়ের চিমনিতেও বসন্ত। তবে সবচেয়ে বেশি রডোডেনড্রন ফুটেছে পশ্চিম সিকিমের উত্তরা, পোখরে, ভার্সেতে৷ এ বছর অরুণাচলেও সময়ের অনেক আগেই ফুটেছে প্রচুর রডোডেনড্রন৷ পাহাড়ে সাড়ে চার হাজার থেকে সাড়ে ছ’হাজার ফুট উচ্চতায় যেসব রডোডেনড্রন গাছ রয়েছে, সেখানেই সবচেয়ে বেশি ফুল এসেছে৷অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজমের আহ্বায়ক রাজ বসু বলেন, একটি গাছে রডোডেনড্রন ফুল আসতে প্রায় কুড়ি বছর সময় লাগে৷ তা ছাড়া পাহাড়ের ঐতিহ্য এটি৷ ফলে রডোডেনড্রন গাছ বাঁচাতে সমানতালে চলছে প্রচার৷ অনেক সময় জ্বালানির জন্য রডোডেনড্রন গাছ কেটে ফেলার মতো ঘটনা ঘটে৷ এসব ঠেকাতে গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে গঠন করা হয়েছে ‘ইকো ক্লাব’৷
অনেক সেলিব্রেশনের মধ্যেও জন্মদিনে এই জিনিসটাই মিস করেন মীর