Advertisement
Advertisement
ঝাড়ফুঁকে জখম পড়ুয়া

ঝাড়ফুঁকের নামে পোড়ানো হল শরীর, পরিবারের কুশিক্ষার শিকার খুদে পড়ুয়া

স্কুলের শিক্ষকদের পরামর্শে পরে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় ছাত্রটিকে।

Standard six student branded with hot iron on tantrik's order

ঝাড়ফুঁকের জেরে ছাত্রটির পিঠে পড়েছে ফোস্কা।

Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:August 29, 2019 5:19 pm
  • Updated:August 29, 2019 5:19 pm

ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, বারাসত: পরিবারের কুসংস্কার, ভুল ধারণা আর কুশিক্ষার কারণে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেল ক্লাস সিক্সের এক ছাত্র। ঝাড়ফুঁকের নামে সারা শরীর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তার। বুক, পিঠ আর কপালজুড়ে প্রায় এক ইঞ্চি চওড়া ফোস্কা পড়েছে নিষ্পাপ ওই কিশোরের। অবশেষে স্কুলের শিক্ষকদের দৌলতে হুঁশ ফিরেছে তার পরিবারের লোকেদের। শিক্ষকদের পরামর্শ মেনে ওঝাকে ছেড়ে এবার চিকিৎসকের কাছে যেতে রাজি হয়েছেন তাঁরা।

[আরও পড়ুন: অন্যত্র সরছে পুলিশ ফাঁড়ি! প্রতিবাদে পথে গ্রামবাসীরা]

দিন কয়েক আগেই উত্তর ২৪ পরগনার কাবিলপুরে এক ওঝার কাণ্ডকারখানা ধরা পড়ে। দুই শিশুকে ঝাড়ফুঁকের নামে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ ওঠে ওই গ্রামের এক প্রৌঢ়ার বিরুদ্ধে। তৃতীয়জন কপালজোরে বেঁচে যায়। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে ওই একই জেলায় আবার ঝাড়ফুঁকের ঘটনা ঘটল। এবার শাসন থানা এলাকায়। এর জেরে জখম হয়েছে গোলাবাড়ির কিলিশপুরে রোহিত ঘোষ নামে এক ছাত্র। গোলাবাড়ি পল্লিমঙ্গল হাই স্কুলের ছাত্র রোহিতের বুকের মাঝে একটি হাড় উঁচু। পড়শিরা নিদান দেন ‘কড়া’ হয়েছে। তাই ঝাড়ফুঁক দরকার। এরপর এলাকারই এক ওঝার কাছে নিয়ে যান রোহিতের মা মৌমিতা ঘোষ। ওই ওঝা গাছপালা বেটে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। তা থেকেই পুড়ে যায় তার শরীর।

Advertisement

বৃহস্পতিবার স্কুলে রোহিতের কপালে বড় একটি ফোস্কা দেখতে পান শিক্ষকরা। বিষয়টি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেই রোহিত জানায়, কড়া হয়েছিল বলে মা ওঝার কাছে নিয়ে গিয়েছিল। তার মায়ের বিশ্বাস, ঝাড়ফুঁকেই বুকের হাড় ঠিক হয়ে যাবে। এই কথা জানার পর স্কুল থেকে রোহিতের বাবাকে ডেকে পাঠানো হয়। রোহিতের বাবার বক্তব্য, তিনি বিষয়টি জানতেন না। স্কুলের শিক্ষকরা এই কুসংস্কারের মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য তাঁকে বোঝান। রোহিতের বাবা কথা দিয়ে যান আর কোনওদিন রোগ হলে ওঝার কাছে যাবেন না। ডাক্তারের পরামর্শই নেবেন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: গড়বেতায় মৃত্যু দলমার হাতির, বিষক্রিয়ায় প্রাণহানি বলে প্রাথমিক অনুমান]

তবে একা রোহিত নয়, শহরতলি ও গ্রামাঞ্চলে এখনও ঘরে ঘরে এধরনের কুসংস্কার বাসা বেঁধে আছে। চলতি মাসেই শাসন থেকে অদূরে দেগঙ্গায় এক ডেঙ্গু রোগীকে হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে এনে ওঝার কাছে নিয়ে যান পরিবারের লোকেরা। পরিণতি যা হওয়ার তাই হয়। ওষুধ বন্ধ করে ঝাড়ফুঁক করার পরের দিনই মৃত্যু হয় ওই রোগীর।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ