ক্ষীরোদ দীপ্তি ভট্টাচার্য: বিরোধী দলের কুকথার নিত্য সমালোচনা করে সিপিএম। কিন্তু এবার কুকথা সেই সিপিএমেরই মুখে। তাও আবার প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি নেতৃত্বকে উদ্দেশ্য করে। প্রকাশ্য জনসভায় বক্তৃতা রাখতে গিয়ে তাঁদের ‘হারামজাদা’ বললেন তিনি। আর সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের এহেন মন্তব্যের জেরেই এবার তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। যদিও সূর্যকান্ত মিশ্রর এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
বৃহস্পতিবার রাণি রাসমণি রোডে বাম সমর্থিত উদ্বাস্তু সমাবেশে বক্তব্য রাখার সময় সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র শুরু থেকেই ছিলেন আক্রমণাত্মক মেজাজে। তৃণমূল ও রাজ্য সরকারের সমালোচনা করার পাশাপাশি বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও মুখ খোলেন। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন,“মনে আছে আপনাদের, যখন উনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন তখন ভয়ঙ্কর-ভয়ঙ্কর সব কথা বলেছিলেন? বলেছিলেন, কারা রামজাদা হবেন। কারা হারামজাদা হবেন। আমি বলছি যদি কেউ হারামজাদা হয়ে থাকে, তাহলে আপনি বা আপনারা… যাঁরা দিল্লি চালাচ্ছেন তাঁরা সবথেকে বড় হারামজাদা। আপনারাই তো এইসব কথা বলেছিলেন।” মঞ্চ থেকে নেমে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েও নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক। তিনি বলেছেন,“ হ্যাঁ। আমি প্রধানমন্ত্রীকেই বলেছি।”
এরপরই প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি নেতাদের সম্পর্কে এমন সরাসরি কুকথার তীব্র সমালোচনা করেছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। দলের রাজ্যসভাপতি দিলীপ ঘোষের পালটা জবাব,“আমরা রামজাদা। আর কে হারামজাদা সবাই জানে। সূর্যকান্ত মিশ্ররা এমনিতেই লুপ্তপ্রায়। কে কী বলল তাতে কিছু যায় আসে না।” পরে তিনি আরও বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে যেভাবে হিংসা শুরু হয়েছে, যেভাবে দুষ্কৃতীদের কাজে লাগানো হচ্ছে, তাতে কোনও রাজনৈতিক নেতার জীবন সুরক্ষিত নয়। পুলিশ যদি সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে অনেকের জীবনই বিপন্ন।” এদিকে, জনসভায় বিজেপির পাশাপাশি তৃণমূল ও রাজ্য সরকারেরও তীব্র সমালোচনা করেছেন সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর অভিযোগ, উদ্বাস্তুদের সমস্যা মেটানোর জন্য ১৯৬৮-৬৯ সালে ৫০০ কোটি টাকার প্রকল্প কেন্দ্রের কাছে জমা দিয়েছিল রাজ্য। এখন সেই প্রকল্প বেড়ে হয়েছে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় সরকার যেমন এই বিষয়ে কোনও উদ্যোগ নেয়নি, তেমনই রাজ্য সরকারও এই ইস্যুতে বিস্ময়করভাবে নীরব। উলটে তাঁর অভিযোগ, উদ্বাস্তু উন্নয়ন দপ্তরটাই তুলে দিয়েছে রাজ্য সরকার। ফলে সমস্যা মিটছে না উদ্বাস্তুদের। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রর অভিযোগ, সরকারি কলোনীগুলির উন্নয়নের জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ করছে না রাজ্য। কিন্তু শাসক দল কলোনি কমিটিগুলি দখল করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি অসংগঠিতভাবে সরকারি বা বেসরকারি জমিতে যেসব উদ্বাস্তু কলোনি গড়ে উঠেছে সেগুলিরও গত ছয় বছরে কোনও উন্নতি হয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.