Advertisement
Advertisement

তারাপীঠে এবার ভক্তদের জন্য নিষিদ্ধ হচ্ছে স্নান দর্শন

কবে থেকে চালু হচ্ছে এই নিয়ম, কেনই বা এমন সিদ্ধান্ত?

Tarapith closes ‘Snan Darshan’ door to devotees
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:January 13, 2018 3:06 am
  • Updated:January 13, 2018 3:08 am

নন্দন দত্ত, তারাপীঠ: দেড় হাজার বছরের পুরনো প্রথা ভাঙল তারাপীঠ। এবার থেকে আর তন্ত্রপীঠে এসে আর মা তারার স্নান দর্শন করতে পাবেন না পুণ্যার্থীরা। আগামী সোমবার থেকে এই নিয়ম চালু করা হবে বলে শুক্রবার জানিয়ে দিলেন তারাপীঠ মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় ও সম্পাদক ধ্রুব চট্টোপাধ্যায়।

[কেন কৌশিকী অমাবস্যায় লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর ভিড় হয় তারাপীঠে?]

Advertisement

তারাপীঠের ইতিহাস বলছে, এখন থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর আগে বণিক জয় দত্ত সওদাগর তারাপীঠ মহাশশ্মানের শ্বেতশিমূল গাছের নিচ থেকে মা তারার শীলামূর্তি উদ্ধার করে সেখানেই প্রতিষ্ঠা কর ছিলেন। পরে রানি ভবানী মায়ের বর্তমান মন্দির প্রতিষ্ঠা করে মা তারাকে শ্মশান থেকে সেই মন্দিরে নিয়ে অধিষ্ঠান করান। সেখানেই মায়ের ভোগ ঘর তৈরি করে নিত্য ভোগের ব্যবস্থা করেন। কালের পরিবর্তনের সঙ্গে আজ তারাপীঠের অনেক স্মৃতি হারিয়ে গিয়েছে। মন্দির এলাকা সংস্কারের নামে মায়ের সেই প্রাচীন ভোগ ঘর ভেঙে ফেলে আধুনিকীকরণের ছোঁয়া দিয়েছে তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ। এবার বন্ধ করা হল মায়ের স্নান দর্শন।

Advertisement

[ডাকের সাজে মাকে সাজিয়ে জগদ্ধাত্রী আরাধনা তারাপীঠে]

শুক্রবার তারাপীঠে সাংবাদিক সম্মেলন করে মন্দির কমিটি। সেখানেই কমিটির এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।  কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত? মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন,  “প্রথমত পর্যটকদের চাপ। সঙ্গে মায়ের কাছে নানা আবদার। ফলে সে সময় পুজো দিতে আসা পর্যটকদের লম্বা লাইন পড়ে যেত। যা মাঝে মধ্যেই মন্দির চত্বর ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসত। বহু পূণ্যার্থী সেই লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ হয়ে পড়তেন। তাই এই পরিস্থিতি সামল দিতে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে মন্দির কমিটি।” উল্লেখ্য, চিরাচরিত প্রথা মেনে দৈনিক ভোরে মা তারাকে স্নান করিয়ে রাজবেশ পড়িয়ে মন্দিরের দরজা পুণ্যার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হত।

[হোটেল কর্মীদের মারধর-ভাঙচুর, তারাপীঠে বিতর্কে বিহারের মন্ত্রী]

পুণ্যার্থীরা মনে করলে এতদিন সে সময় নিজে হাতে মাকে স্নান করাতে পারতেন। শুধু তারাময়বাবুই নন, তারাপীঠের পান্ডাদের অভিজ্ঞতা বলছে, পুণ্যার্থীরা নিজের হাতে মাকে স্নান করানোর ফলে প্রায় দেড় থেকে দু’ ঘন্টা বাড়তি সময় ব্যয় করতে হত। ততক্ষণ বন্ধ থাকত মন্দিরের দরজা। বহু পুণ্যার্থীকে এজন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হত। পুণ্যার্থীদের জন্য স্নান দর্শন বন্ধ করলে সেই সময় অনেকটা সাশ্রয় হবে। আগামী সোমবার থেকে মন্দিরের নির্দিষ্ট সেবাইত মায়ের স্নান করাবেন। তারপরেই মন্দিরের দরজা খুলে দেওয়া হবে। মন্দির কমিটির এই সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ বলেছেন, পুণ্যার্থীরা দীর্ঘ দিন ধরে মনষ্কামনা করে শাড়ি-সহ নানা  অলঙ্কার এনে মাকে স্নান করিয়ে নিজের হাতে পরিয়ে দিতেন। এর ফলে তাঁরা বঞ্চিত হবেন। আবার কারও মতে, বাড়িতে আমরা কি সুস্থ-সবল মাকে নিজের হাতে স্নান করাই? তাহলে মা তারার নগ্ন শীলা মূর্তিতেই বা কেন স্নান করানো হবে। তাই ধ্রুববাবু, তারাময়বাবুদের এই সিদ্ধান্ত সাধুবাদ জানিয়েছেন পান্ডাদের ওই অংশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ