Advertisement
Advertisement

Breaking News

Teacher requirement

পরীক্ষাই দেননি প্রার্থী, তবুও নিয়োগ বাম আমলে, একাধিক নমুনায় পর্দাফাঁস

'অধিকাংশ দুর্নীতির নথিপত্র কৌশলে লোপাট করা হয়েছে'।

Teacher requirement scam tmc councilor Arup Chakraborty unveil CPM linc | Sangbad Pratidin
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:June 7, 2023 9:59 am
  • Updated:June 7, 2023 9:59 am

বাম আমলে শিক্ষক নিয়োগের পিছনে আসল খেলার পর্দাফাঁস একটি অন্তর্তদন্তমূলক প্রতিবেদন। লিখছেন অরূপ চক্রবর্তী।

এর পরের উদাহরণটি সেই একই বিদ্যালয়ের নিয়োগ সংক্রান্ত, যা সিপিএমের (CPM) মেকি স্বচ্ছতার সমুদ্রে ডুবে থাকা দুর্নীতির পাহাড়ের একটি চূড়ামাত্র। ১৯৯১ সালে এই বিদ্যালয়ে একটি ভূগোলের শিক্ষক/শিক্ষিকার পদ সৃষ্টি হয়। তৎকালীন সময়ে এই বিদ্যালয়ে যে সমস্ত মানুষ যুক্ত ছিলেন সেই সমস্ত মানুষের কাছে জানা গিয়েছে যে, এই পদে যিনি নিযুক্ত হয়েছিলেন, দোলা মিত্র, তিনি ইন্টারভিউ বোর্ডে সেইদিন পরীক্ষা দিতে উপস্থিতই হতে পারেননি। কিন্তু সিপিএম তাঁর জমানায় অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো এখানেও সমস্ত প্রমাণ লোপাট করে খুব সুচারুভাবে তাঁকে নিয়োগ দিয়েছিলেন এবং এমনভাবে কাগজপত্র তৈরি করেছিলেন তাতে এই বিষয়টি ভবিষ্যতেও কোনওমতে ধরা না পড়ে।

Advertisement

কিন্তু এখানেও অপরাধী তার অপরাধের চিহ্ন রেখে যায় অজান্তেই। সেই কাগজ যখন আমাদের হাতে এল, আমরা খুঁটিয়ে লক্ষ্য করতেই উদ্ঘাটিত হল বাম আমলে নিয়োগ-দুর্নীতির আরেক লজ্জাজনক অধ্যায়। এখানেও অ্যাকাডেমিক স্কোরের ভিত্তিতে কোনওভাবেই দোলা মিত্রর চাকরি পাওয়ার কথা নয় । তাই ইন্টারিউয়ের সমস্ত কাগজপত্র লোপাট করে যে নতুন কাগজপত্র তৈরি করা হল, তাতে দোলাদেবীকে ইন্টারভিউ ও ক্লাস টিচিং-এ দেওয়া হয় ৭+৭=১৪ নম্বর (রামপ্রসাদবাবুর ক্ষেত্রে ইন্টারভিউ এবং ক্লাস টিচিং-এ ৫+৫ মোট ১০ নম্বরের পরীক্ষা হলেও দোলাদেবীর জন্য সেই নাম্বার বাড়িয়ে ৭+৭= ১৪ করা হয় যাতে সর্বমোট নম্বরে বেশি দেখানো যায়)। এই ভাবে তাঁর নম্বর বাড়ানো হয়েছে শুধু তাই নয়, যিনি সর্বোচ্চ অ্যাকাডেমিক স্কোর, যা দোলাদেবীর থেকে অনেক বেশি, তাঁর নম্বর অনৈতিকভাবে কমিয়ে দেওয়া হল ১+২=৩ ।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘পটকা বাজি না ফাটলে কালীপুজো হবে?’, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিস্ফোরণ নিয়ে মন্তব্য মদনের]

লক্ষণীয়, এর ফলে অ্যাকাডেমিক স্কোরে চল্লিশ (৪০) পাওয়া দোলাদেবী দ্বিতীয় স্থান অধিকারী, যিনি অ্যাকাডেমিক স্কোরে (অর্থাৎ স্কুল-কলেজ-বিশ্ব্যবিদ্যালয়ের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর) পঞ্চাশ (৫০) পেয়েছিলেন, তাঁর তুলনায় কেবলমাত্র এক নম্বরে এগিয়ে থেকে প্রথম হলেন। এবার বিষয়টি যাতে বিদ্যালয়ের বাইরে চলে না যায় তাই খুব সচেতনভাবে এক্সপার্টের কাছে সই-এর জন্য পাঠানোই হল না। কারণ, ওই প্যানেলে যাঁদের সই লাগবে তাঁদের মধ্যে একমাত্র এক্সপার্টই ছিলেন বিদ্যালয়ে সিপিএমের ধামা ধরা কমিটির বাইরের। এখানেও তৎকালীন হুগলির সেই সময়ের ডিআই সাহেব কালক্ষেপ করেননি এক্সটারনাল এক্সপার্টের স্বাক্ষর ছাড়াই দুর্নীতিতে ভরা অসম্পূর্ণ প্যানেলটিকে অ‌্যাপ্রুভ করে দিতে। দোলা মিত্র মহাশয়াও তথাকথিত স্বচ্ছভাবে নিয়োগের সুবিধা ভোগ করে চাকরি করে যাচ্ছেন নিরুপদ্রবে।

[আরও পড়ুন: পুরুলিয়ার রেল ক্রসিংয়ে বড়সড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল রাজধানী! সাসপেন্ড গেটম্যান]

একজন বিশিষ্ট বামপন্থী আইনজীবী এবং সিপিএম নেতা প্রায়ই বলে বেড়াচ্ছেন যে, বাম আমলে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির প্রমাণ দিন, তা হলে বুঝব। সিপিএমের আমলে নিয়োগে দুর্নীতি, যা আজ থেকে ২৫, ৩০ অথবা ৪০ বছর আগে ঘটেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তার কাগজ লোপাট করে দেওয়া হয়েছে, বা ইচ্ছাকৃতভাবে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তারপরও হুগলি জেলার সিপিএমের এই নেতার চাকরি যে অসাধু পথ অবলম্বন করে আপনার দল পাইয়ে দিতে সাহায্য করেছে বলে যে তথ্য ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে, আজ সেই সিপিএমের আইনজীবীর কাছে প্রশ্ন, এই তথ্যের ভিত্তিতে একটা জনস্বার্থ মামলা করবেন না? মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যাতে এই বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। (শেষ)

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ