সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: বাস্তুশাস্ত্র মতে অফিসের ভোল বদল হবে। তার জন্য সরকারি অর্থ ব্যয় করতে ডাকা হল টেন্ডারও। আর সেই টেন্ডার প্রকাশ্যে আসতেই বিপাকে দুর্গাপুর নগর নিগম (Durgapur Municipal Corporation)। সমালোচনা শুরু করেন বিরোধীরা। আর এই নিয়ে শোরগোল শুরু হতেই চাপে পড়ে তড়িঘড়ি সেই টেন্ডার বাতিল করলেন পুর প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান। বাস্তুশাস্ত্রকে (Vaastu) সামনে রেখে নগর নিগমের অফিস বদলানো নিয়ে টেন্ডারের বিষয়টিই আপাতত আলোচনার কেন্দ্রে।
২০২২ সালের ৩১ আগস্ট মেয়াদ শেষ হওয়ার পর প্রশাসক নিয়োগ হয়েছে দুর্গাপুর নগর নিগমে। ৬ সদস্যের প্রশাসক বোর্ডের (Administration Board) চেয়ারম্যান অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়। আচমকাই চেয়ারম্যানের মনে হয়, তাঁর নিজস্ব চেম্বারের বাস্তু দোষ রয়েছে। সেই বাস্তু দোষ কাটাতে বাস্তুশাস্ত্রবিদ প্রয়োজন। কর্তার ইচ্ছায় কর্ম। সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে গেল টেন্ডার (Tender) (ডিএমসি/পিইউআর/৮৯৬, তারিখ – ১১/৫/২০২৩)। সরকারি অর্থ ব্যয় করেই সাঙ্গ হবে বাস্তু দোষ। টেন্ডারে ৪ জন বাস্তুশাস্ত্রবিদ অংশ নিয়েছিলেন। সর্বনিম্ন ৩০ হাজার টাকা ‘কোট’ করে একজন প্রথম হন।
[আরও পড়ুন: ‘খোকাবাবুর তথ্যেই গ্রেপ্তার একের পর এক নেতা’, নাম না করে অভিষেককে নিয়ে বিস্ফোরক অধীর]
এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই সেই টেন্ডার হাতিয়ার হয়ে ওঠে বিরোধীদের কাছে। বিজেপির অন্যতম জেলা সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সনাতন হিন্দু ধর্মের রীতি মেনে উনি বাস্তু দোষ কাটাচ্ছেন, এটা খুবই ভাল। আমরা সবসময়ই সনাতন হিন্দু ধর্মের কথাই বলি। কিন্তু এটা যদি উনি নিজের ব্যক্তিগত খরচে করতেন, তাহলেই ভাল হতো। যে জায়গাটা স্থায়ীভাবে ওঁর নয় সে জায়গার বাস্তু দোষ কাটাতে উনি সরকারি অর্থে ব্যয় করেন কীভাবে?” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার জানান, “আমরা লাগাতার নিগম ঘেরাও করার পরই বাস্তু দোষ ধরা পড়ল নাকি? জ্যোতিষ দেখিয়ে আংটি, পাথরের বিল হয়েছে কিনা তাও তদন্ত করে দেখা উচিত।”
[আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোটে কেমন হবে নিরাপত্তা? কী জানাচ্ছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন?]
টেন্ডারের ‘খবর’ নিয়ে এভাবে সমালোচনা শুরু হতেই শুক্রবার বাতিল করেন পুর প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়। সাফাই দেন, “ভুল বোঝাবুঝিতেই এটা হয়েছে। আমি নিজে এরকম করলে সরকারি অর্থে নয়, ব্যক্তিগত অর্থেই করতাম। টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। কিন্তু ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়নি। আমি পুরো প্রক্রিয়াটি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছি।”
