স্টাফ রিপোর্টার: ডিমে হাত দিলেই এখন ছেঁকা। রাজ্য সরকারের হুঁশিয়ারির পরও খোলা বাজারে বিন্দুমাত্র দাম কমল না। বরং শনিবার খুচরো বাজারে অনেক জায়গায় সাত টাকা দরে বিকিয়েছে পোলট্রির ডিম। অথচ পাইকারি বাজারে ৫.৫২ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। খুচরো ব্যবসায়ীরা সেই দামই সাত টাকায় নিয়ে গিয়েছেন বহু জায়গায়। এই অবস্থায় রাজ্য পোলট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মদনমোহন মাইতি আবেদন রেখেছেন, অতিরিক্ত লাভ না রেখে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে। সাধারণ মানুষের স্বার্থে এই আবেদন তাঁর। তবে আগামী সাত-দশদিনের মধ্যে দাম কমতে পারে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
রাজ্য সরকার আবার সোমবার থেকে সুফল বাংলার স্টলগুলিতে ৬ টাকা দরে ডিম বিক্রি করবে। রাজ্যের কৃষি বিপণন দপ্তরের মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, সুফল বাংলার স্টলগুলিতে সোমবার থেকে ন্যায্যমূল্যে ডিম দেওয়া হবে। জোগানের উপর ভরসা রাখা হচ্ছে। সরকারিভাবে জোগান বাড়লে অসাধু ব্যবসায়ীরা চাপে পড়বেন বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ডিমের দাম না কমালে সরকারি সাহায্য বন্ধ করে দেওয়া হবে। সেই প্রেক্ষিতেই দাম নিয়ন্ত্রিত হবে বলে আশা।
এদিকে, অন্য রাজ্যের মুখাপেক্ষী না থাকতে এবার মুরগি চাষে বাড়তি উৎসাহ দিতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। নবান্ন সাম্প্রতিক ডিমের দামবৃদ্ধির ক্ষেত্রে রিপোর্ট পেয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশের উপর বাড়তি নির্ভরতার ফলেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সরকারি সহায়তায় প্রাপ্ত মুরগি পালন ঠিকভাবে হচ্ছে কি না তার রিপোর্ট জেলা আধিকারিকদের থেকে চেয়ে পাঠাল রাজ্য প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তর। ডিমের আমদানি কমাতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। বর্তমানে রাজ্যে প্রতিদিন প্রায় আড়াই কোটি ডিম দরকার হয়, যার মধ্যে রাজ্যে বিভিন্ন পোলট্রি থেকে পাওয়া যায় প্রায় ৭৫ লক্ষ ডিম। এছাড়া ২৫ লক্ষ ডিম বিভিন্ন খুচরো পালকদের থেকে নেওয়া হচ্ছে। বাকি দেড় কোটি ডিম বাইরের রাজ্য থেকে আমদানি করতে হয়। এই নির্ভরতা কমাতেই মুরগি চাষে আরও উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। এখন বছরে দশ হাজার মুরগিছানা পালনে আট লক্ষ টাকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে ডিমের স্থায়ী সমস্যা মিটবে বলে আশাবাদী সরকারি আধিকারিকরাও।
অন্ধ্রের ডিমের জোগান কমে যাওয়াতেই মূলত এবারের সঙ্কট। কুয়াশার জেরে ট্রাক আসতে দেরি হচ্ছে। বাড়ানো হচ্ছে পরিবহন ও শ্রমিকের খরচ। এই কারণ দেখিয়ে দাম বাড়িয়েছেন অন্ধ্রের কারবারিরাও। পাশাপাশি রয়েছে শীত পড়তেই উত্তর ভারতের অনেকটা অংশের মতো এই রাজ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদাও। এই সুযোগে কিছু মধ্যস্বত্বভোগী ডিমের দাম বাড়াতে সচেষ্ট বলেও রাজ্য সরকারের রিপোর্ট। বীরভূম, বাঁকুড়ায়ও চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন না বাড়া ডিমের মূল্যবৃদ্ধির কারণ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.