Advertisement
Advertisement

করোনার প্রতিরোধে হাসপাতালগুলিতে যাচ্ছে বাতের ওষুধ, ফাঁপরে রোগীরা

চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই ওষুধ খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

The medicine of arthritis ca prevent corona, patients are in great trouble
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:March 31, 2020 11:39 am
  • Updated:March 31, 2020 10:37 pm

ধীমান রায়, কাটোয়া: বার্ধক্য এসেছে। ভারী শরীর। রয়েছে বাত বা আর্থারাইটিসের সমস্যা। রাজ্যে এমন রোগীর অভাব নেই। এই সমস্ত রোগীদের এখন বাতের সমস্যা বাড়লে ঘরের মধ্যে শুয়ে বসে যন্ত্রণা হজম করা ছাড়া কার্যত উপায় নেই। কারণ বাজার থেকে উধাও বাতের প্রধান ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সালফেট। সৌজন্যে করোনা আতঙ্ক।

হ্যাঁ, এটাই বাস্তব। বাজারে এখন কোনও ওষুধের দোকানেই মিলছে না এই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সালফেট গ্রুপের ট্যাবলেট। চিকিৎসকদের একাংশ জানিয়েছেন মূলত বাতের রোগীদের জন্য ব্যবহৃত এই ওষুধ করোনা প্রতিরোধের আপাত কার্যকর ওষুধ হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে। বিশেষ করে যে সমস্ত হাসপাতালে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বা সন্দেহজনক রোগীদের রেখে চিকিৎসা করানো হচ্ছে, সেই সমস্ত হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্রের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধক হিসাবে এই ওষুধ খাচ্ছেন। স্বভাবতই সাধারণ মানুষদের মধ্যেও বাতের জন্য ব্যবহৃত এই ওষুধ খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে। সেই কারণেই বাজার থেকে উধাও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সালফেট গ্রুপের ওষুধ।

Advertisement

পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার বাজারে পাশাপাশি দু-তিনটি ওষুধের দোকানে সকালের দিকে দেখা যায় কয়েকজন ক্রেতা এসে খোঁজ করছেন হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সালফেট গ্রুপের ট্যাবলেটের। কিন্তু কোনও দোকানে ওই ওষুধ নেই। ওষুধের দোকানমালিক ফাল্গুনী হাজরা, তন্ময় যশদের কথায়, “পাঁচ-ছ’দিন ধরে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সালফেট গ্রুপের ওষুধ বর্ধমান শহরের কোনও ডিস্ট্রিবিউটরের কাছে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক মানুষ খোঁজ করছেন করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধক হিসাবে খাওয়ার জন্য। দু-চারজন আর্থারাইটিসের রোগীও কিনতে আসছেন। কিন্তু তাঁরাও ওষুধ পাচ্ছেন না।”

Advertisement

[ আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা করায় গোটা নার্সিংহোম এখন কোয়ারেন্টাইনে ]

উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পিনাকী হাজরা বলেন, “আমি শুনেছি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং ইণ্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (ICMR) এই ওষুধ তাদেরই ব্যবহার করতে বলেছে যাদের করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের কাছাকাছি থাকতে হচ্ছে। তবে আমি লিখিত কোনও পরামর্শ পাইনি। তবে অনেকেই করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধক হিসাবে খাচ্ছেন।” বর্ধমানের অনাময় হাসপাতালের চিকিৎসক অচিন্ত্য কুমার সাহা বলেন, “করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধক হিসাবে আমি নিজে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সালফেট খাচ্ছি। হাসপাতালের নার্স, ওয়ার্ডে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীরাও খাচ্ছেন।”

কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে যাঁরা করোনা আক্রান্তদের কাছাকাছি থাকছেন তাঁদের ক্ষেত্রে এই ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিলেও বাস্তবে এখন সুস্থ সবল সাধারণ মানুষরাও করোনা আতঙ্কে খোঁজ করছেন হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সালফেট ট্যাবলেট। যে ওষুধ নির্দিষ্ট কোনও রোগের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, তা সুস্থ মানুষ খেলে কি পাশ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে? এর উত্তরে ডা: পিনাকী হাজরা বলেন, “নিশ্চয়ই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। বিশেষ করে চোখ ও হৃদযন্ত্রের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধের জন্য সরকারিভাবে যেগুলি পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে সেগুলিই সাধারণ মানুষদের মেনে চলা উচিত। হুটপাট করে আগাম ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন নেই।”

ছবি: জয়ন্ত দাস।

[ আরও পড়ুন: এবার করোনার বলি হাওড়ার মহিলা, রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩ ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ