সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা ব্লকের একই গ্রামের তিন যুবক। তামিলনাড়ু থেকে কেরলে বাসে আসার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি উলটে খাদে গিয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনজন।
[ আরও পড়ুন: ফের ভাটপাড়ায় বোমাবাজি, জখম এক মহিলা-সহ তিন জন ]
অভাবের তাড়নায় কেরালায় কাজে গিয়েছিলেন পাথরপ্রতিমা ব্লকের ঢোলাহাট থানা এলাকার তিন যুবক মিঠুন পণ্ডিত (২৯), মিঠুনের দাদা গৌরাঙ্গ পণ্ডিত (৩২) ও প্রতিবেশী আরও এক যুবক হীরুলাল শিকারি (২৭)। তিনজনই পূর্ণচন্দ্রপুরের শ্রীনারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মেহেরপুর গ্রামের বাসিন্দা। কয়েক মাস আগেই ওই তিনজন কাজ করতে কেরল যান। কাজ জুটিয়েও ফেলেছিলেন তাঁরা। সপ্তাখানেক আগে বাড়ির লোকজন ফোন করে তাঁদের বাড়িতে ফিরে আসতে বলেন। বলা হয়, জমিতে চাষের কাজের জন্য তাঁদের প্রয়োজন। বাড়ির লোকের ফোন পেয়ে তিনজনই বাড়িতে জানিয়ে দেন শনিবারই বাড়ি ফিরছেন তাঁরা। সেই মতো ট্রেনে ফেরার টিকিটও কাটেন তিন যুবক।
তবে বাড়ি ফেরার আগে তিন যুবক ঠিক করেন তামিলনাড়ু বেড়িয়ে তারপর তাঁরা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। শুক্রবার তিনজনে মিলে তামিলনাড়ু যান। সেখানে নানা জায়গা ঘুরে শনিবার সকালে বাসে কেরলে ফিরছিলেন তাঁরা। দুর্ঘটনা ঘটে তখনই। বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে উলটে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তিনজনের। শনিবার বাড়ি ফেরার কথা থাকলেও না ফেরায় ওই তিন যুবকের আত্মীয়স্বজন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। ফোনে তিনজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁদের না পাওয়ায় উদ্বিগ্ন পরিজনেরা স্থানীয় ঢোলাহাট থানার পুলিশকে জানান।
[ আরও পড়ুন: কাটমানি ফেরত চেয়ে কল্যাণের বিরুদ্ধে অশ্লীল পোস্টার, চাঞ্চল্য শ্রীরামপুরে ]
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকদের পকেট ও ব্যাগে থাকা কাগজপত্র ও বাড়ি ফেরার ট্রেনের টিকিট দেখেই সেখানকার স্থানীয় মানুষজন ও পুলিশ ঢোলাহাট থানার পুলিশের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। ঢোলাহাট থানার পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে তিন যুবকের বাড়ির লোকজনকে দুর্ঘটনার কথা জানিয়ে দেয়। দুর্ঘটনার খবর শোনামাত্রই রবিবার সকালে মৃতের আত্মীয়রা মৃতদেহগুলি আনতে তামিলনাড়ুর উদ্দেশে রওনা দেন। জানা গিয়েছে, মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের পর আত্মীয়স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তিন যুবকের মৃতদেহ মঙ্গলবার রাতে মেহেরপুর গ্রামে আসে। কান্নায় ভেঙে পড়েন আত্মীয় পরিজনেরা। একই গ্রামের তিন যুবকের ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর খবরে গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া।