ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: দলের অন্দরে যে অনেকেই দুর্নীতিগ্রস্ত সেকথা স্বীকার করে নিয়েছেন খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সিপিএমের আমল থেকেই ওই ব্যক্তিরা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। এবার পরোক্ষে দলনেত্রীর সুরেই সুর মেলালেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal)। দলের একাংশ পঞ্চায়েতের টাকা আত্মসাৎ করছে বলেই অভিযোগ তাঁর। দলীয় বৈঠকে এ কারণে কর্মীদের ভর্ৎসনা করেন তিনি। যদিও বিরোধীদের দাবি, এ সবই লোক দেখানো। আদতে তৃণমূলের সকলেই দুর্নীতিগ্রস্ত।
শুক্রবার বোলপুরে তৃণমূলের জেলা পার্টি অফিসে ব্লক কমিটির বৈঠক ছিল। সেখানে অনুব্রত মণ্ডল ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিৎ সিংহ-সহ অনান্যরা। ওই বৈঠকেই অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “দলের কর্মীদের একাংশ পঞ্চায়েতের টাকা আত্মসাৎ করছেন। প্রত্যেক পঞ্চায়েতে যারা বসে আছেন তারা টাকা কামাচ্ছেন। কিন্তু দলের অনুষ্ঠান ঠিক মতো করছেন না। এটা চলতে পারে না।” দুর্নীতিতে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন অনুব্রত মণ্ডল।
[আরও পড়ুন: বিজেপি নেত্রীকে ‘ধর্ষণ’ যুব মোর্চার রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের, অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির]
বর্তমানে আমফানের (Amphan) ত্রাণ নিয়ে বারবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে উঠেছে অভিযোগের আঙুল। স্বজনপোষণ করে প্রকৃত বিপদগ্রস্তদেরই আর্থিক সাহায্য করা হচ্ছে না বলেই উঠেছে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে যদিও বিরোধীরা তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতার মন্তব্যকে হাতিয়ার করেই আসরে নেমেছে। সিপিএম নেতা রামচন্দ্র ডোমের দাবি, এ সবই তৃণমূলের লোক দেখানো। আদতে প্রত্যেকেই সমানভাবে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুর গলাতেও মূলত একই সুর। তাঁর অভিযোগ, শুধু পঞ্চায়েত নয়। নেতামন্ত্রী প্রত্যেকেই টাকা ভাগাভাগি করে নেন। কিন্তু বর্তমানে বিরোধীদের মুখ বন্ধ করতে এসব বলছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি।
এছাড়াও উত্তরপ্রদেশে কুখ্যাত গ্যাংস্টার বিকাশ দুবের এনকাউন্টার প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন অনুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেন, “বিজেপি নেতারা জড়িয়ে যেত, তাই মিথ্যা এনকাউন্টার করে মেরে দেওয়া হল। গ্রেপ্তার হওয়ার পরই বুঝেছিলাম তাকে এনকাউন্টারে মেরে ফেলা হবে।”