Advertisement
Advertisement
এলাকাছাড়া

বিজেপির হামলার আশঙ্কা, ফলপ্রকাশের পরই ঘরছাড়া তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান

অনুব্রত মণ্ডলের গড়ে এধরনের ঘটনায় বিজেপির তরফে উঠছে প্রশ্ন৷

TMC leader leaves home after Loksabha Polls debacle in Burdwan
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:June 6, 2019 5:10 pm
  • Updated:June 6, 2019 5:10 pm

ধীমান রায়কাটোয়া: পঞ্চায়েতের প্রধান। কিছুদিন আগে পর্যন্ত এলাকায় তাঁর যথেষ্ট প্রভাব ছিল৷ কিন্তু লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণার দিন থেকেই এলাকাছাড়া পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম ২ ব্লকের রামনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জিত বিশ্বাস। ভোটের ফলঘোষণার পর বিজেপির হাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় তাঁর ছেলে ও মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গোপন ডেরায় আশ্রয় নিয়েছেন। তাই ২৩ মে’র পর থেকে রামনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের চেয়ার ফাঁকাই পড়ে রয়েছে।

[আরও পড়ুন: ব্যাগের বোঝা কমানোর উদ্যোগ, সরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের জন্য ‘লকার রুম’]

বিরোধীশূন্য আউশগ্রামে শাসকদলের পঞ্চায়েত প্রধান এভাবে বেশ কয়েকদিন ধরে এলাকাছাড়া হওয়ায় বেশ অস্বস্তিতে দলীয় নেতৃত্ব। যদিও আউশগ্রাম ২নং ব্লক তৃণমূল সভাপতি রামকৃষ্ণ ঘোষের দাবি, ‘রামনগরের পঞ্চায়েত প্রধান সঞ্জিত বিশ্বাসের শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। তাই চিকিৎসার জন্য তিনি বাইরে রয়েছেন। দলের কাছে অনুমতি সাপেক্ষে ছুটি নিয়েছেন।’

Advertisement

বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত পূর্ব-বর্ধমানের আউশগ্রাম বিধানসভা। আগে এই অঞ্চলটি ছিল সিপিএম-এর এক দুর্ভেদ্য দুর্গ। ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে পালাবদল হয়ে কেন্দ্রটি তৃণমূলের দখলে আসে। আর ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে আউশগ্রাম বিধানসভা এলাকার ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতের সমস্ত আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে যায় তৃণমূল কংগ্রেস। আউশগ্রাম বিধানসভা এলাকায় তৃণমূলের দলীয় পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডল। বস্তুত তাঁর খাসতালুকেই লোকসভা ভোটের পর এলাকাছাড়া দলীয় প্রধান।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আউশগ্রামের ছোড়া কলোনিতে বাড়ি রামনগর পঞ্চায়েত প্রধান সঞ্জিত বিশ্বাসের। তিনি বিত্তবান ব্যবসায়ী বলে পরিচিত। রয়েছে একাধিক বাস, লরি, বালি তোলার যন্ত্র। সবমিলিয়ে বেশ কয়েকটি ব্যবসা রয়েছে তাঁর। সেইসব ব্যবসা বন্ধ করে সঞ্জিত বিশ্বাস এখন একপ্রকার আত্মগোপন করে রয়েছেন। বিশেষ সূত্রে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘লোকসভা ভোটের আগেও আমার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছিল। ফলঘোষণার রাতেই কয়েকজন হিতাকাঙ্খী আমাকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলেন। কারণ, বিজেপি হামলা করতে পারে। তাই ছেলেমেয়েকে নিয়ে ওইদিন রাতেই বাড়ি থেকে পালিয়ে আসি। এখনও নানাভাবে আমার কাছে হুমকি আসছে। আমার ব্যবসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’

[আরও পড়ুন: হাসপাতালে গাঁজাচাষের খবরে ছড়াতেই পদক্ষেপ, বনগাঁয় কাটা হল অবৈধ গাছ]

সঞ্জিতবাবু জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রী দীপালিদেবী ও মা শেফালিদেবীই একমাত্র বাড়িতে রয়েছেন। মেয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ রাখতে হয়েছে। কিন্তু কেন প্রধানকে এলাকাছাড়া হতে হয়েছে? জবাবে বিজেপির স্থানীয় ব্লক নেতা দেবব্রত মণ্ডলের দাবি, ‘বিজেপির হামলার ভয়ে প্রধান এলাকাছাড়া হননি। আসলে উনি পঞ্চায়েত প্রধান হওয়ার পর থেকে সীমাহীন দুর্নীতি করেছেন। তার প্রমাণ এলাকায় ঘুরলেই পাওয়া যাবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভের জেরে নিজেই গা ঢাকা দিয়েছেন।’

প্রসঙ্গত, গত বছর পঞ্চায়েত ভোটের আগে ছোড়া এলাকায় বিজেপি-তৃণমূল একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। তারপরে লোকসভা ভোটের সময়েও সেখানে দু’দলের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। সব ঘটনাতেই প্রধানের নাম জড়ায় বিজেপি নেতৃত্ব। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে রামনগর এলাকায় শাসকদলের থেকে বেশি ভোট পেয়েছে বিজেপি। ফলঘোষণার পর স্বভাবতই চাপে রয়েছে শাসকদল।

ছবি: জয়ন্ত দাস।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ