বাবলু হক, মালদহ: তাদের বৈধতা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তবুও রূপান্তরকামীদের নিয়ে সমাজের একটা অংশের অস্বস্তির শেষ নেই। তাদের অচ্ছুৎ করে রাখলে ক্ষতি গোটা সমাজের। রূপান্তরকামীদের স্বীকৃতি দিতে অন্যরকম উদ্যোগ মালদহে। দেশে এই প্রথম অন্তত একদিনের জন্য বিচারকের আসনে বসলেন মালদহের এই তিন রূপান্তরকামী! দেবী আচার্য, জিয়া দাস এবং জয় সাহা গুপ্ত দায়িত্ব পেয়ে উচ্ছ্বসিত।
[মোদি কিচ্ছু করতে পারবেন না, হুমকি দিয়ে স্ত্রীকে তিন তালাক]
শনিবার মালদহ আদালতে জাতীয় লোক আদালত বসে। সেখানেই বিচারকের আসনে এবার এই রূপান্তরকামীদের বসিয়ে নজির গড়ল প্রশাসন। অভিযুক্ত ও অভিযোগকারীদের বক্তব্য শোনেন তাঁরা। শোনালেন ফয়সালাও। অর্থাৎ রায়দান করে তাঁরা একাধিক মামলার নিষ্পত্তিও ঘটালেন। লোক আদালতে বিচারকের আসনে বসার সুযোগে নিজেদের গৌরবান্বিত করতে পেরেছেন বলে মত তিন রূপান্তরকামীর। মালদহের চেনা মুখ দেবী বলেন, ‘‘এত বড় সম্মানে আমাদের সম্মানিত করা হবে তা ভাবতেই পারিনি। নিরপেক্ষ আসনে বসে বিচার করাটা যে কত কঠিন কাজ সেটা হাড়ে হাড়ে টের পেলাম। বিচারকরা কীভাবে প্রক্রিয়াটা সামলান, তা আজ না এলে বুঝতেই পারতাম না।’’ মালদহ জেলা লিগাল সারভিসেস অথরিটির চেয়ারম্যান সুতনুকা নাগ বলেন, ‘‘এই লোক আদালতে বিচারকের ভূমিকায় আমরা তিনজন সমাজসেবীকে বসিয়েছিলাম। জাতীয় স্তরে এই প্রথম সমাজসেবী হিসেবে তাঁদের বসানো হল। তাঁরাও নিরপেক্ষতার সঙ্গে অনেক মামলার নিষ্পত্তি করেন।”
[ঘিতে মিশছে রাসায়নিক-চর্বি, কীভাবে ভেজাল ধরবেন?]
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গোটা দেশের সঙ্গে এদিন মালদহ জেলাতেও বসে জাতীয় লোক আদালত। ৮টি বেঞ্চে পৃথক পৃথক মামলার শুনানি চলে। প্রায় ২২০০ মামলা তোলা হয় এদিনের লোক আদালতে। ফৌজদারি মামলা থেকে ব্যাঙ্ক, বিদ্যুৎ, মোটরবাইক দুর্ঘটনা-সহ সিভিল কিছু মামলারও বিচার করা হয়। মালদহ জেলা আইনি পরিষেবা সহায়তা কর্তৃপক্ষের তরফে বিক্রম রায় জানিয়েছেন, লোক আদালতের মাধ্যমে বিশাল সংখ্যক মামলা কমিয়ে আনা সম্ভর হয়েছে। এর ফলে মানুষ খুব তাড়াতাড়ি বিচার পাচ্ছেন। আদালতে বছরের পর বছর ঘুরতে হচ্ছে না। শনিবার এরকমই ২২০০ মামলার নিষ্পত্তি ঘটানো হয়েছে। এদিন সমাজসেবী হিসাবে তিনজন রূপান্তরকামীকে বিচারকের আসনে বসানো হয়েছিল, যা জাতীয় লোক আদালতের ক্ষেত্রে এই প্রথম। রূপান্তরকামীদের বিচারে সাহায্যের জন্য নিযুক্ত ছিলেন একজন জুডিশিয়াল অফিসার ও একজন আইনজীবী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.