জ্যোতি চক্রবর্তী, বসিরহাট: উপপ্রধান চক্রান্ত করে খুন করেছেন নাকি হামলা করতে এসেই প্রাণ গেল যুবকের? উত্তর ২৪ পরগনার সান্ডেলের বিল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জয়নাল আবেদিন গাজির উপর হামলার ঘটনায় এমনই নানা প্রশ্নের ভিড়। নিহতের পরিবারের দাবি, তাঁদের ছেলেকে চক্রান্ত করে খুন করা হয়েছে। এদিকে, শুক্রবার রাত থেকেই এলাকায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ওই উপপ্রধানকে। এখনও এই ঘটনায় মোট ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অন্যান্য দিনের মতো শুক্রবার উপপ্রধান জয়নাল আবেদিন গাজি খাদ্যসামগ্রী বন্টন করতে বেরিয়েছিলেন। অভিযোগ, আশরাফ গাজি ও নুরুল ইসলাম সর্দার নামে বাঁকড়া গ্রামের বাসিন্দা দুই যুবক রাস্তার মাঝে উপপ্রধানের গাড়ি আটকান। উপপ্রধানের দিকে বন্দুক উঁচিয়ে খুনের চেষ্টা করে তারা। আর্তনাদ করতে থাকেন উপপ্রধান। তাতেই স্থানীয়রা জড়ো হয়ে যান। ওই দুই যুবককে ঘিরে ধরে চলে বেদম গণপ্রহার। তাদের বাইক দুটিতেও ভাঙচুর চালায় স্থানীয়রা। গুরুতর জখম দুই যুবককে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের অবস্থা সেই সময় ছিল অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। বেশ কিছুক্ষণ হাসপাতালে থাকার পর এক যুবকের মৃত্যু হয়। আরেকজনের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।
[আরও পড়ুন: ESI হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার গুজব! ব্যান্ডেলে বিক্ষোভ শ্রমিকদের]
ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পর উপপ্রধানের দাবি অস্বীকার করে নিহত আশরাফের পরিজনেরা। তাঁদের দাবি, মারধরের জেরে অচৈতন্য হয়ে পড়েন আশরাফ এবং নুরুল। অচৈতন্য হয়ে পড়লেও একজনের হাতে বন্দুক তখনও ছিল। গণপ্রহারের পরেও অচৈতন্য অবস্থায় কারও হাতে বন্দুক থাকা সম্ভব নয়। পরিবারের অভিযোগ, আক্রোশ মেটাতে উপপ্রধান পরিকল্পিতভাবে খুন করতে আসার গল্প ফেঁদে আশরাফ-সহ বেশ কয়েকজনকে বেধড়ক মারধর করে। উপপ্রধানের লোকেরা তাদের বেঁধে রেখে দেয় বলেও অভিযোগ। নিহত আশরাফের মা জাহানারা বিবির দাবি, “উপপ্রধানকে গুলি করার তত্ত্ব পুরোপুরি সাজানো। ছেলেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে মারা হয়েছে। আমার ছেলেকে পরিকল্পনা করে খুন করেছে জয়নাল ও তার দলবল।” বসিরহাটের পুলিশ সুপার কঙ্করপ্রসাদ বারুই বলেন, “হিঙ্গলগঞ্জে গণপিটুনির ঘটনায় ২৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার মধ্যে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিরা পলাতক।”