বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: ওরা ‘ভূত’ পোষে। রাতের অন্ধকারে ওরা বাড়ি থেকে ছেড়ে দেয় সেই ‘ভূত’। তারপরই গ্রামের বিভিন্ন লোকের বাড়িতে গিয়ে ঘটে অঘটন। ইন্টারনেটের যুগেও গ্রামবাসীদের অন্ধবিশ্বাসে প্রায় একঘরে নদিয়ার শান্তিপুরের আরবান্দির ছোট জিয়াকুর গ্রামের একটি পরিবার। গ্রামবাসীদের অত্যাচারে রীতিমতো নাজেহাল ওই পরিবারের সদস্যরা।
ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে বহুদিন আগেই। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ওই পরিবারটি বাড়িতে ‘ভূত’কে আশ্রয় দিয়েছে। যার ফলে ক্ষতি হচ্ছে প্রতিবেশীদের। মারা যাচ্ছে এলাকার পোষ্য জীবজন্তু। প্রাণ হারাচ্ছেন বহু মানুষ। এই অভিযোগ মাথাচাড়া দিতে গ্রামের মাতব্বররা সালিশি সভাও ডাকেন। তাতে গ্রামবাসীদের মুখোমুখি হন ওই পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগ, সালিশি সভার নিদান অনুযায়ী সেই সময় ওই পরিবারের মহিলা সদস্যকে বেঁধে রেখে বেধড়ক মারধর করা হয়। তবে তাতেও গ্রামবাসীদের আক্রোশ মেটেনি। সোমবার আবারও ওই পরিবারের উপর হামলা চালানো হয়। ওই ‘ভূতুড়ে’ বাড়িতে জড়ো হন এলাকার বহু মানুষ। বেধড়ক মারধর করা হয় পরিবারের সদস্যদের। বাদ যাননি মহিলারাও। আক্রমণের চোটে এক মহিলার কানও কেটে গিয়েছে। ভাঙচুর চালানো হয় ওই বাড়িতেও। গুরুতর জখম অবস্থায় দু’জনকে কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে।
মূলত আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাস এই গ্রামে। তাই অশান্তি আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন পুলিশ আধিকারিকরা। ইতিমধ্যেই অবশ্য গোটা গ্রামে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। রানাঘাটের মহকুমাশাসক হরসিমরণ সিংহ বলেন, “কুসংস্কারের বশবর্তী হয়েই মানুষ ‘ভূত’ পোষার বিষয়টি বিশ্বাস করছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই গ্রামের মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করা হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.