ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্বভারতীর অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে দ্বায়িত্বভার সামলাবেন সবুজকলি সেন। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে মৌখিকভাবে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে বিশ্বভারতী সূত্রে খবর। মন্ত্রকের ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্তে খুশি পড়ুয়া থেকে অধ্যাপক সকলেই। এই বিষয়ে আগামী সপ্তাহে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিতে চলেছে মন্ত্রক।
[নয়া উপাচার্য পেল বিশ্বভারতী, অচলাবস্থা কাটিয়ে দায়িত্বে প্রাক্তনী সবুজকলি সেন]
গত দু’বছর ধরে এই কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও স্থায়ী উপাচার্য় নেই। অস্থায়ী উপাচার্যের বদল ঘিরেও নানা বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এমতবস্থায় উপাচার্য নিয়োগের পুরনো প্যানেল বাতিল করে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের জন্য মন্ত্রকের তরফে বিশ্বভারতীকে সার্চ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি শনিবারই অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে কার্যভার শেষ হচ্ছে সবুজকলি সেনেরও। সূত্রের খবর, তিনি ইস্তাফা দিতে চাইলেও তাঁকেই অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার মৌখিক নির্দেশ দিয়েছে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি সবুজকলি সেনের পাঁচ বছরের ডিরেক্টর পদ শেষ হচ্ছে। এরপরে তিনি দর্শন বিভাগের অধ্যাপক থাকলেও কর্মসমিতির সদস্য থাকতে পারবেন না। ফলে বিশ্বভারতীর সংবিধান অনুযায়ী, তিনি অস্থায়ী উপাচার্য থাকতে পারবেন না। কিন্তু অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে তাঁর নিয়োগের সময় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক চিঠিতে জানিয়েছিল স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত তিনি অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন।
[এবছর পলাশহীন বসন্তোৎসব বিশ্বভারতীতে, শোভাযাত্রায় থাকবেন না উপাচার্যও]
এদিকে গত বুধবার সবুজকলি সেন মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের সঙ্গে দেখা করেন। দীর্ঘক্ষণ তাঁদের মধ্যে কথা হয়। সূত্রের খবর, এই সময় সবুজকলি সেন জানিয়েছিলেন, স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত বারবার অস্থায়ী উপাচার্য বদল না করে এক জনকেই অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে রাখা হোক। মন্ত্রক মৌখিক ভাবে তাঁকেই উপাচার্য হিসাবে দায়িত্বভার চালিয়ে যেতে বলেন বলে বিশ্বভারতী সূত্রে খবর। এই বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব সৌগত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মন্ত্রক সুবজকলি সেন কে নিয়োগের সময় নিয়োগপত্রে পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছে নতুন উপাচার্য না আসা পর্যন্ত তিনিই উপাচার্য থাকবেন।” কর্মিসভার সভাপতি গগন সরকার বলেন, “বারবার উপাচার্য বদল বিশ্বভারতীর ক্ষতি হচ্ছে। আর যেখানে নতুন উপাচার্য নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি গঠনের কথা ঘোষণা হয়েছে, তখন আর পরিবর্তন কেন? সবুজকলি সেনই উপাচার্য হিসেবে থাকুক আমরা চাই।”
[বিতর্কের জেরে সিনেমার শুটিং বন্ধ বিশ্বভারতী চত্বরে]
অধ্যাপকসভার সম্পাদক গৌতম সাহাও তাঁদের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন বলে জানিয়েছেন। ভিবিউফার সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্যের মতে বিশ্বভারতীর স্বার্থে বারবার উপাচার্য বদল ঠিক নয়।