Advertisement
Advertisement

Breaking News

WB assembly polls

প্রথম দফার ৩০ আসনে কে এগিয়ে, কে পিছিয়ে? কী বলছে গ্রাউন্ড রিপোর্ট?

এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক কোন আসনে কী পরিস্থিতি?

WB assembly polls: Ground report from 30 assembly seats | Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:March 24, 2021 7:19 pm
  • Updated:March 26, 2021 1:22 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ব্যুরো: হাতে আর মাত্র দু’দিন। শনিবার রাজ্যের ভোট পুজোর বোধন। সেদিন ৩০টি আসনে হবে ভোটগ্রহণ। নির্বাচন হবে জঙ্গলমহলের অধিকাংশ আসনে। পূর্ব মেদিনীপুরের সাতটি আসনেও রয়েছে ভোট (WB Assembly Election 2021)। রোদে পুড়ে এতদিনের প্রচারের ফলাফল কি দেখা যাবে ব্যালট বক্সে? রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা তাকিয়ে শনিবারের দিকে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহল গেরুয়া শিবিরের গড় হয়ে উঠেছিল। কিন্তু এরপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে গিয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনে হারানো জমি পুনরুদ্ধার করতে মরিয়া শাসকশিবির। স্বাস্থ্যসাথী-দুয়ারে সরকারই তাদের হাতের তাস। ফলে লড়াইটা মোটেই আর একপেশে নয়। লড়াইয়ের ভরকেন্দ্রও বদলে গিয়েছে। এই তিরিশটির মধ্যে বেশিরভাগ আসনেই এবার হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। অন্তত ওয়াকিবহাল মহল এমনটাই মনে করছে। কোনও পক্ষই যে সহজে ছাড়বে না, বোঝা গিয়েছে আগেই।

এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক কোন আসনে কী পরিস্থিতি? কী বলছে গ্রাউন্ড রিপোর্ট?

Advertisement

পূর্ব মেদিনীপুর
পটাশপুর: অধিকারী গড় হিসেবে পরিচিত এই কেন্দ্রের বড় ফ্যাক্টর হতে পারে শুভেন্দু ও শিশিরের দলবদল। আর তাঁদের হাত ধরেই ভরে উঠতে পারে বিজেপির ঝুলি। শুভেন্দু ও শিশির ফ্যাক্টরের জন্যই এই কেন্দ্রে কিছুটা হলেও এগিয়ে বিজেপি।

Advertisement

কাঁথি উত্তর: এই আসন জয়ে তৃণমূলের হাতিয়ার সংগঠন। মোকাবিলায় তৈরি বিজেপি প্রার্থী সুনীতা সিনহার স্বচ্ছ ভাবমূর্তি। কোনও পক্ষই এই আসনে সহজ জয় পাচ্ছে না। লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি।

ভগবানপুর: এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী অর্ধেন্দু মাইতি। গত দু’ বারের বিধায়ক। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, তাঁকে এলাকায় দেখা যায় না। সরকার বিরোধী এই ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে কিছুটা এগিয়ে বিজেপি প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ মাইতি।

খেজুরি: এই কেন্দ্রে বিজেপি-তৃণমূলের কড়া টক্কর। পার্থপ্রতিম দাসের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর স্ত্রী। আর এই ঘটনা আমজনতার মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তুলনামূলক মাইলেজ পেয়েছে বিজেপি প্রার্থী শান্তনু প্রামাণিক।

কাঁথি দক্ষিণ: শুভেন্দু গড় হিসেবে পরিচিত। এই এলাকার শহরকেন্দ্রিক ভোটাররা অধিকারীদের ‘পকেট ভোটার’ হিসেবেই পরিচিত। তার উপর জ্যোতির্ময় কর ছিলেন পটাশপুরের বিধায়ক। তাঁকে সরিয়ে নেওয়া নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। স্বাভাবিকভাবেই এই কেন্দ্রে এগিয়ে বিজেপি।

রামনগর: এখানে তৃণমূল-বিজেপির দ্বিমুখী হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। তৃণমূলের সংগঠন বেশ শক্তিশালী। কিন্তু সরকার বিরোধী হাওয়া রয়েছে। ফলে তৃণমূল প্রার্থী অখিল গিরি কিছুটা ব্যাকফুটে।

এগরা: এই কেন্দ্রে প্রাক্তন স্কুল হেডমাস্টার তরুণ মাইতি বনাম বিজেপির ইয়ং জেনারেশন অরূপ দাসের লড়াই। কারওর বিরুদ্ধেই কোনও অভিযোগ নেই। হবে সেয়ানে-সেয়ানে টক্কর।

[আরও পড়ুন : ‘রাতে টাকা বিলি হচ্ছে, ধরিয়ে দিলেই মিলবে চাকরি’, প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিরোধীদের নিশানায় মমতা]

পশ্চিম মেদিনীপুর
মেদিনীপুর: লোকসভা ভোটের নিরিখে এই কেন্দ্রে এগিয়ে বিজেপি। বহিরাগত তারকা প্রার্থী জুন মালিয়াকে নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে ক্ষোভ থাকায় সুবিধা পাচ্ছে বিজেপি। তবে প্রচারের দিক থেকে বিজেপিকে দশ গোল দিয়েছেন ঘাসফুল প্রার্থী।

শালবনি: তৃণমূলের গড় হিসেবে পরিচিত। লোকসভায় বিজেপি ভাল সংগঠন তৈরি করলেও, তা এখন বিশেষ কাজ দেবে না। ফলে এগিয়ে তৃণমূল।

গড়বেতা: এই কেন্দ্রে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। সংগঠন শক্ত হলেও বিজেপির কাঁটা অন্তর্দ্বন্দ্ব।

দাঁতন: অনেকটা এগিয়ে তৃণমূল। ঘাসফুল শিবিরের সংগঠন ও প্রার্থীর ভাবমূর্তিকে টক্কর দেওয়া বিজেপির পক্ষে কার্যত অসম্ভব।

কেশিয়াড়ি: উন্নয়ন হয়নি এখানে। এমনটাই অভিযোগ। এটাই তৃণমূলের জয়ের পথে কাঁটা বিছিয়ে দিতে পারে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, বালি খাদান ইস্যু। ফলে সংগঠন তৈরি করে লড়াইয়ে এগিয়ে পদ্মফুল শিবির।

খড়গপুর গ্রামীণ: এই কেন্দ্রে বিরোধীরা সংগঠিত নয়। মোহভঙ্গ হয়েছে আমজনতার। ফলে লড়াইয়ে এগিয়ে রাজ্যের শাসকদলই।

পুরুলিয়া জেলা
বান্দোয়ান: তৃণমূল বিধায়ক রাজীবলোচন সোরেন প্রার্থী হওয়ায় দলের ক্ষোভ রয়েছে। কিন্তু আদিবাসী, মাহাতো-সহ বিভিন্ন জনজাতির মানুষ তাঁর পাশে আছেন। বিজেপি প্রার্থীকে নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে গেরুয়া শিবিরে। সেটা ‘প্লাস পয়েন্ট’ তৃণমূলের।

বলরামপুর: গত পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে এই কেন্দ্র একেবারে গেরুয়াময়। তবে প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে গেরুয়া শিবিরেও। ফলে এই কেন্দ্রে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি।

বাঘমুণ্ডি: একদা কংগ্রেস ‘গড়’ বাঘমুন্ডিতে লোকসভায় বিজেপির প্রবল হাওয়া। আসনটি বিজেপি আজসুকে ছেড়ে দেওয়ায় দলের ক্ষোভ-বিক্ষোভ একেবারে চরমে উঠেছে। তাই বিজেপির ভোট কংগ্রেসে যেতে পারে। ফলে এই কেন্দ্রের দু’বারের কংগ্রেস বিধায়ক, জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা এই কেন্দ্রের জোট প্রার্থী নেপাল মাহাতো আবার জয়ী হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

জয়পুর: তৃণমূল প্রার্থী উজ্জ্বল কুমারের মনোনয়ন বাতিল হয়ে গিয়েছে। নির্দল দিব্যজ্যোতি সিং দেও-কে সমর্থন করেছে তৃণমূল। জোট থেকে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রাক্তন সাংসদ ধীরেন্দ্রনাথ মাহাতোকে প্রার্থী করা হলেও কংগ্রেস এখানে প্রার্থী দিয়ে দিয়েছে। বিজেপি প্রার্থী মুকুল-পন্থী ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে আসা প্রাক্তন সাংসদ নরহরি মাহাতোর বিরুদ্ধেও রয়েছেন গোঁজ প্রার্থী। ফলে এই আসন জয়ের অঙ্কটা বেশ কঠিন। তবে আসনটি কংগ্রেসের ঝুলিতে যেতেই পারে।

পুরুলিয়া: প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায় বিজেপির প্রার্থী হওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে। এই আসনে এবার কংগ্রেসের প্রার্থী পার্থপ্রতিম বন্দ্যোপাধ্যায়। শহরের পরিচিত মুখ। তবে এখনও এই কেন্দ্রে বিজেপিও ফ্যাক্টর। এদিকে এবার দাপুটে নেতা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। ফলে লড়াই হাড্ডাহাড্ডি। তৃণমূলের পালে হাওয়া রয়েছে বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের।

মানবাজার: দু’বারের বিধায়ক রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু এবারও তৃণমূলের প্রার্থী। এই কেন্দ্র তৃণমূলের ‘গড়’। ফলে জেলা জুড়ে বিজেপির বাড়বাড়ন্ত হলেও এই কেন্দ্রে তৃণমূলের জয় একপ্রকার নিশ্চিত বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

কাশীপুর: এই কেন্দ্রে তৃণমূলের দু’বারের বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া এবারও প্রার্থী। তৃণমূল বিরোধী হাওয়া প্রবল। বিজেপি এখানে ‘ঘরের ছেলে’, শিক্ষক, দলের আদিবাসী সংগঠককে প্রার্থী করেছে। আগে এই কেন্দ্র সিপিএমের ‘গড়’ ছিল। এবার সেই ‘গড়’ পুনরুদ্ধারে মরিয়া লাল পার্টি। তবে তুলনায় এগিয়ে তৃণমূল।

পাড়া: তৃণমূলের বিধায়ক উমাপদ বাউরিই এবার প্রার্থী। প্রার্থী নিয়ে বিজেপিতে কলহ থাকলেও এই কেন্দ্রে গেরুয়া শিবিরের জয়ের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু হারানো জমি পুনরুদ্ধার করে এগিয়ে তৃণমূল।

রঘুনাথপুর: তৃণমূলের দু’বারের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি এবার এই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী না হওয়ায় দলের গোষ্ঠীকোন্দলে একেবারে ইতি পড়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কোমর বেঁধে প্রচারে নেমে পড়েছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। তবে সংগঠন মজবুত করে এগিয়ে বিজেপি।

[আরও পড়ুন : ‘আগে মহিলাদের জন্য রেলের ভাড়া মকুব করে দেখাক’, ইস্তাহার নিয়ে বিজেপিকে খোঁচা অভিষেকের]

বাঁকুড়া জেলা
শালতোড়া: বিজেপি এগিয়ে। বাউরি ভোট ফল নির্ধারণ করে এই কেন্দ্রের। তৃণমূল প্রার্থী মণ্ডল সম্প্রদায়ের। নাম সন্তোষ। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ। অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থী চন্দনা বাউরি নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা। এই এলাকায় আরএসএসের মজবুত সংগঠন। ছোট ছোট ক্যাম্প করেছে। যার সুবিধা পাবে বিজেপি।

ছাতনা: তৃণমূল প্রার্থী শুভাশিস বটব্যালকে কাছে না পাওয়ার অভিযোগ রয়ে গিয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। ফোনে পাওয়া যায় না। জনসংযোগ তলানিতে ঠেকেছে। জলকষ্ট মেটাতে সরকার টাকা দিয়েছে কিন্তু বিধায়করা কাজ করেনি। এদিকে এলাকায় সরকারি চাকুরে বেশি। ফলে পাওনা নিয়ে ক্ষোভ। দলীয় ক্ষোভ থাকা সত্ত্বেও এগিয়ে বিজেপি।

রানিবাঁধ: এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী জ্যোৎস্না মাণ্ডি আদিবাসী। তবু আদিবাসীদের মধ্যে আরএসএসের সংগঠন শক্ত। ২০১৩ সাল থেকে জনকল্যাণমুখী কাজ করেছে। তবে সম্প্রতি আদিবাসীদের মধ্যে বিজেপি-বিরুদ্ধ হাওয়া তৈরি হয়েছে। ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন) তৃণমূলের পাশে। ফলে তৃণমূল এগিয়ে থাকছে।

রাইপুর: তৃণমূল প্রার্থী আদিবাসী হলেও জনসংযোগ বিচ্ছিন্ন। আরএসএসের সংগঠনে বিজেপি এগিয়ে। তবে আইএসএফের প্রার্থীর সংগঠন শক্ত। তাই তিনি প্রচুর ভোট কাটবেন। সুবিধা পাবে তৃণমূল।

ঝাড়গ্রাম
নয়াগ্রাম: তৃণমূলের উন্নয়নমূলক কাজ এলাকায় ব্যাপক প্রভাব পড়বে। কাজের নিরিখে এগিয়ে তৃণমূল। তবে বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি অনেকটাই বেশি। চুলচেরা বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে বিজেপির চেয়ে সামান্য এগিয়ে তৃণমূল।
গোপীবল্লভপুর: তৃণমূল প্রার্থী খগেন্দ্রনাথ মাহাতো। বিজেপির প্রার্থী সঞ্জিত মাহাতো। সিপিএমের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন প্রশান্ত দাস। জঙ্গলমহলের এই আসনে তৃণমূল-বিজেপির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই।
ঝাড়গ্রাম: তৃণমূল প্রার্থী বীরবাহা হাঁসদা। বিজেপির প্রার্থী সুখময় শতপথী এবং সিপিএমের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন মধুজা সেনরায়। কাজের নিরিখে তৃণমূল এগিয়ে। বিজেপির সংগঠন শক্তিশালী। ফলে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি।
বিনপুর: দেবনাথ হাঁসদা এবার তৃণমূলের প্রার্থী। বিজেপির প্রার্থী পালহান সোরেন এবং সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক দিবাকর হাঁসদা। লড়াইয়ে এগিয়ে কিন্তু তৃণমূল।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ