দীপঙ্কর মণ্ডল: প্রশ্নফাঁস রুখতে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মোবাইলে নিষেধাজ্ঞা আছে। এবার স্কুলের শ্রেণিকক্ষ-সহ ল্যাব এবং লাইব্রেরীতেও শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীদের মোবাইল ব্যবহারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করল রাজ্য সরকার। মোবাইল ব্যবহার করা যাবে শুধুমাত্র শিক্ষা সংক্রান্ত কোনও কাজে। তবে তার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি থাকতে হবে।
এখন হাতের কাছে মোবাইল না থাকলেও কথা বলা বা গান শোনা যায়। নয়া নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে হেডফোন, ব্লু টুথ বা কোনও ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস কানে গুঁজে ক্লাসে ঢুকতে পারবেন না শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সবার জন্যই এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। মঙ্গলবার রাজ্যের উচ্চপ্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্কুলগুলিকে এ বিষয়ে কড়া নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। কোভিড পরবর্তী সময়ের দিকে লক্ষ্য রেখে ২২ দফা আচরণবিধি তৈরি করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সেখানেই স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জন্য জারি হয়েছে মোবাইল নিষেধাজ্ঞা।
স্কুলশিক্ষা দপ্তরে মাঝেমধ্যেই শিক্ষকদের মোবাইল আসক্তি নিয়ে অভিযোগ জমা পড়ে। ক্লাস চলাকালীন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একটি অংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় কাটান বলে অভিযোগ। ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, ফেসবুক বা ইউটিউবের মতো মাধ্যমগুলিতে এখন স্কুল কেন্দ্রীক নানারকম কৌতুক ভিডিও দেখা যায়। এমনকী ছোটখাট তর্ক-বিতর্কও ভিডিও বানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে দেখা যায়। যা নিয়ে পরে বিতর্ক তৈরি হয়। স্কুলশিক্ষা দপ্তর প্রতিষ্ঠানের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে এমন অবাঞ্ছিত ভিডিও এড়াতে চাইছে। পাশাপাশি পড়ানোর সময় শিক্ষক শিক্ষিকারা যাতে আরও মনোযোগী হন, তাও নিশ্চিত করতে চায় রাজ্য। সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসস।’
প্রধানশিক্ষকদের এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতির বক্তব্য, “বারবার বলেও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একটি অংশের মোবাইল আসক্তি দূর করা যাচ্ছিল না। রাজ্য সরকারের এই কড়া নির্দেশকে প্রধান শিক্ষক হিসাবে আমরা স্বাগত জানাই। আশা করি এবার শাস্তির ভয়ে আর কেউ ক্লাসে বসে মোবাইল ব্যবহার করবেন না।” আচরণবিধিতে মোবাইলে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের টিউশন এবং কোনও ব্যবসা করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। এই নিয়ম না মানলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও আছে।
উল্লেখ্য, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অনেকসময় শেয়ার ট্রেডিং-সহ কিছু ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে থাকেন অনেক শিক্ষক। নির্দেশিকা অনুযায়ী, এবার কোনও লাভজনক কাজে যুক্ত থাকলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে তাঁদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.