অভিরূপ দাস: স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কার্ড ছিল। তারপরেও ‘চুপিচুপি চিকিৎসা’ দেওয়ার নাম করে ১ লক্ষ টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে বজবজের (Budge Budge) জগন্নাথ গুপ্ত হাসপাতালের বিরুদ্ধে। ‘মারাত্মক’ এই অভিযোগ পাওয়ার পরেই বেসরকারি ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তলব করেছে স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন। যদিও এমন ঘটনা অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান কে কে গুপ্ত জানিয়েছেন, অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। তিন সপ্তাহের মধ্যে কমিশন তাদের এফিট ডেফিট জমা করতে বলেছে। সেখানে তাঁরা তাদের বক্তব্য জানাবেন। চেয়ারম্যানের কথায়, “যিনি অভিযোগ করেছেন তিনি সরাসরি আমাদের অভিযোগ জানাতে পারতেন। হাসপাতালের একটি কমপ্লেন সেল আছে।”
যদিও অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসককে ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে। চিকিৎসায় গাফিলতি কিংবা অত্যধিক বিলের ভুরিভুরি অভিযোগ স্বাস্থ্য কমিশনে জমা পড়লেও এভাবে সরাসরি রোগীর পরিবারের থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগ বিরল। জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা ৬৮ বছরের ওই ব্যক্তি করোনা উপসর্গ (COVID-19) নিয়ে বজবজের বুইতা এলাকার ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি হন। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে তাঁর কোভিড টেস্ট করা হয়। অভিযোগকারীর দাবি, হাসপাতাল থেকে তাঁকে জানানো হয়, “আপনার কোভিড পজিটিভ। কিন্তু রিপোর্ট আমরা চেপে দেব। পুরো ট্রিটমেন্ট করিয়ে দেবো। তার জন্য ১ লক্ষ টাকা লাগবে।”
প্রশ্ন উঠছে, আচমকা রিপোর্ট চেপে দেওয়ার প্রসঙ্গ উঠল কীভাবে। তবে কি অভিযোগকারীই সোশ্যাল স্টিগমার কারণে রিপোর্ট গোপন রাখতে বলেছিলেন। অভিযোগকারীর দাবি, “হাসপাতালে আমি জানাই আমার স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড রয়েছে। ১ লক্ষ টাকা কেন দেব?” কিন্তু হাসপাতাল সেই বক্তব্য মানতে চায়নি। কমিশনে করা অভিযোগে বলা হয়েছে, বজবজের হাসপাতাল রোগীকে বলে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড অন্যান্য অসুখের ক্ষেত্রে কাজ করলেও করোনার ক্ষেত্রে টাকা দিতেই হবে। বাধ্য হয়েই ওই হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জ নিয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভরতি হন প্রৌঢ়। সেখানেই করোনামুক্ত হন তিনি। এরপরেই বজবজের ওই বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে কমিশনে অভিযোগ করেন। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসার জন্য সরকার নির্ধারিত প্যাকেজ অনুযায়ী, হাসপাতালগুলিকে ক্যাশলেস সিস্টেমে সরাসরি টাকা দেওয়া হয়। কোনওভাবেই রোগীর কাছ থেকে টাকা নেওয়া যায় না। বজবজের ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে, করোনা আবহে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের অধীনে বহু মানুষকে তারা নিখরচায় চিকিৎসা দিয়েছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে কেন ১ লক্ষ টাকা চাওয়া হল তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য কমিশন
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.