Advertisement
Advertisement
WB Panchayat Election

Panchayat Election 2023: যুদ্ধক্ষেত্র ভাঙড়! মনোনয়নের শেষ লগ্নে বোমাবাজি, গোলাগুলি, সংঘর্ষ, প্রাণহানি

দিনভর ভাঙড়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখে এল সংবাদ প্রতিদিন।

WB Panchayat Election: Battlefield Bhangar, Bombing, shooting, clashes, loss of life in the final day of nomination | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:June 15, 2023 9:18 pm
  • Updated:June 15, 2023 9:18 pm

পারমিতা পাল, ভাঙড়: আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Election) প্রাক্কালে ভাঙড় আর ভয় এখন সমার্থক। মনোনয়নের শেষ দিন সকালে যখন ভাঙড়ে (Bhangar) এসে পৌঁছলাম, বিডিও অফিসের সামনে তখন প্রচুর জমায়েত। এই বিডিও অফিস মনোনয়ন কেন্দ্র। আর গত দু’দিন ধরে এখানকার যেমন পরিস্থিতি প্রত্যক্ষ করেছে গোটা রাজ্য, তার চেয়ে একটু আলাদা ছবি। এদিন বিডিও অফিসের সামনে ঢাল-তলোয়ার, বন্দুক, টিয়ার গ্যাস হাতে নিয়ে দাঁড়িয়েছিল পুলিশ। জমায়েত হলে তা হঠিয়েও দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু পুলিশ সরতেই যে কে সেই। ফের জমায়েত, ফের অশান্তি-বিশৃঙ্খলা। এভাবেই দিনভর অশান্তির আগুনে ভাঙড়ে প্রাণ গেল মোট ৩ জনের – ২ তৃণমূল কর্মী ও এক আইএসএফ প্রার্থীর। বৃহস্পতিবার এমনই জ্বলন্ত ভাঙড়ের ছবি স্মৃতিতে নিয়ে ফেরা হল। বোঝা গেল, এ রাজ্যে প্রাক নির্বাচনী চিত্রটা বদলায়নি এতটুকু।

Advertisement

বিডিও অফিসের আশেপাশের গলিতে যাদের চোখে পড়ল, তাদের বেশিরভাগেরই কাঁধে গামছা। খানিক উঁকিঝুঁকি মারতে বোঝা গেল, না, তপ্ত দুপুরে ঘাম মোছার জন্য নয়। এই গামছা আসলে পুঁটলি, যাতে ভরতি বোমা! প্রথমটায় খানিকটা অবাক হলেও পরে চর্মচক্ষে যে সব ছবি দেখলাম, তাতে আর সংশয় নেই যে এই ওই গামছায় বোমা সরবরাহ হয়েছে। রাস্তার দিকে তাকিয়ে চোখে পড়ল যাত্রীবাহী বাসগুলিতে চলছে চেকিং। পুলিশের চেকিং নয়। লাল কাপড়ে মুখ ঢেকে চলছে যাত্রীদের ভীত সন্ত্রস্ত করে তোলা। যাত্রীদের অভিযোগ, এরা সকলে রাজনৈতিক দলের ক্যাডার।  তল্লাশিকারীদের অভিযোগ, ওইসব বাসে নাকি বোমা, অস্ত্র আসছে, দুষ্কৃতীরা রয়েছে। সংবাদমাধ্যম এগিয়ে গেলে ক্যামেরা বন্ধ করে দেওয়ার ‘হুকুম’ এল। সংবাদমাধ্যমই তখন তাঁদের কাছে মূল ‘ভিলেন’ হয়ে গেল! কী বিচিত্র!

Advertisement

[আরও পড়ুন: মনোনয়নে হিংসায় শাহকে নালিশ সুকান্তর, উদ্বিগ্ন জাতীয় তফসিলি জাতি কমিশন]

ভাঙড়় ২-এর চিত্র আরও অন্যরকম। শ্মশান বললেও অত্যুক্তি হয় না। বিডিও অফিসের সামনে কেউ নেই। মনোনয়ন যে চলছে, বোঝার উপায়ই নেই। এই নীরবতার মাঝেই মুহুর্মুহু কানফাটানো বোমার শব্দ। ঠিক ঝড়ের পূর্ব মুহূর্তের পরিস্থিতি। মনোনয়ন কেন্দ্র থেকে কয়েক পা এগিয়ে বোঝা গেল, সকাল থেকেই বোমাবাজি, গোলাগুলি চলছে এখানকার বিজয়গঞ্জ বাজারে। একদল পুলিশ হাতে ঢাল, তলোয়ার নিয়ে দাঁড়িয়ে ‘নীরব দর্শক’। অশান্তি থামাতে তৎপরতা? শূন্য প্রায়। 

কিছুক্ষণ পর অশান্তির জেরে মাথা বাঁচাতে আশ্রয় নিতে হল বিডিও অফিস। সেখান থেকেই দেখলাম, দু’দিক থেকে দু’দল সশস্ত্র দুষ্কৃতী ধেয়ে আসছে। আগ্রাসী মুখগুলোয় একটাই চিহ্ন – আক্রোশ। সংবাদমাধ্যমের উপর প্রবল আক্রোশ। কেন তাদের ‘অ্যাকশন’-এর প্রতিটি মুহূর্ত দেখানো হচ্ছে সংবাদমাধ্যমে? এই তো প্রশ্ন। সব দেখেও চোখ রাখতে হবে বন্ধ। এই-ই তাদের শর্ত। 

[আরও পড়ুন: ‘উনি সিনিয়র, একসঙ্গেই কাজ করব’, নন্দীগ্রামে সুফিয়ান বিতর্ক উড়িয়ে বললেন কুণাল ঘোষ]

সেই পরিস্থিতি থেকে যে কীভাবে নিজেদের বাঁচিয়ে ফিরলাম ভাঙড় থেকে, তা আর বিশদে বলা নিষ্প্রয়োজন। সারাদিনের অভিজ্ঞতাটাই আমাদের বড় প্রাপ্তি। তবে ফেরার পর দিনশেষে মনে হচ্ছে, এই ছবিগুলো না দেখলেই বেশি ভাল হতো। ভ-এ ভোট, ভ-এ ভাঙড় আর ভ-এ ভয় – আজ মিলেমিশে একাকার। ভোট আসবে, যাবে। ‘ভয়’ হয়ত থেকেই যাবে ভাঙড়ের সন্ত্রস্ত ভূমিতে।

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ