রাজকুমার কর্মকার, আলিপুরদুয়ার: আলিপুরদুয়ারে ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের শিক্ষক নেতার বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগে শিক্ষক নেতা কিরণ ছেত্রীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে উত্তাল স্থানীয় চা বাগান এলাকা। দলমত নির্বিশেষে কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন চা শ্রমিকরা। একদিনের কাজ বন্ধ হওয়ার অর্থ বড়মাপের আর্থিক ক্ষতি। স্বভাবতই মাথায় হাত বাগান ম্যানেজারের। ঘটনাস্থল আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রাম ব্লকের সংকোশ চা বাগান। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের অভিযোগ, গত সোমবার পঞ্চায়েত ভোটে বুথে ঢুকে অবাধে ছাপ্পা দিয়েছেন কিরণ ছেত্রী। তাঁর বাড়ির এলাকায় পড়ে ১০/৪৭ নম্বর বুথ এলাকায়। তবে তিনি সকাল থেকেই ছিলেন ১০ /৪৪ নম্বর বুথ চত্বরে। সময় বুঝে বুথে ঢুকে ছাপ্পা ভোট দেন বলে অভিযোগ। এর একটা বিহিত চান এলাকাবাসী। তাই বাগানের কাজ বন্ধ রেখে দলমত নির্বিশেষে তৃণমূলের শিক্ষক নেতার গ্রেপ্তারির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছেন।
[নির্দল কাঁটায় বিদ্ধ তৃণমূল, বিরোধিতা করে জিতলেও দলে না ফেরানোর সিদ্ধান্ত মমতার]
এদিকে বিক্ষোভের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে কুমারগ্রাম থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চলছে টহলদারি। তবে বিক্ষোভ থামানো যায়নি। এই প্রসঙ্গে আলিপুরদুয়ার জেলার পুলিশ সুপার আভারু রবীন্দ্রনাথ বলেন, শিক্ষক নেতার গ্রেপ্তারির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ১০ /৪৪ নম্বর বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি করেছে বিক্ষোভকারীরা। এই বিষয়টি নির্বচন কমিশনের এক্তিয়ারে পড়ে পুলিশের নয়। আইন-শৃঙ্খলার বিষয়টি দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হয়েছে। স্থানীয় আরএসপি নেতা দীপক দাস বলেন, কিরণ ছেত্রী একসময় সিপিএমের হার্মাদ বাহিনীর সদস্য ছিলেন। রীতিমতো এলাকার ত্রাস ছিল এই কিরণ। এলাকার আরএসপি নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণের জন্যই কিরণকে তৈরি করেছিলেন তৎকালীন সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব। পরিবর্তনের পর এই কিরণ তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করে। এখন বাম নেতাকর্মীদের পাশাপাশি তা আক্রমণের তালিকায় রয়েছেন নিরীহ চা শ্রমিকরা।
[জীবনের নয়া প্রাপ্তি, প্রথমবার ভোট দিলেন অশীতিপর বৃদ্ধা]
এদিকে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের শিক্ষক নেতা কিরণ ছেত্রী। তাঁর দাবি, সোমবার নির্বাচন চলাকালীন নিজের এলাকার বাইরেই যাননি তিনি। ছাপ্পা ভোট দেওয়ার প্রশ্নই আসছে না। একই কথা বলেছেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মোহন শর্মা। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের দিন পর্যবেক্ষকরা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেরিয়েছেন। কোথাও কিছু অনিয়ম হলে তাঁরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন। আমাদের দলের নেতাকর্মীরা কোথাও কোনও ছাপ্পা ভোট দেওয়া সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।’