Advertisement
Advertisement

Breaking News

বিজেপিকে ছাপ্পা ভোটের সুযোগ করে দিল খোদ তৃণমূল প্রার্থী! হইচই কাঁকসায়

‘বিশ্বাসঘাতক’ প্রার্থীকে নিয়ে বিড়ম্বনায় তৃণমূল।

WB panchayat polls: Kanksa TMC candidate accused of helping BJP

ফাইল ছবি

Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:May 16, 2018 7:15 pm
  • Updated:May 16, 2018 7:15 pm

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর:  তৃণমূলের দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ। সবকিছু জেনে বুঝেও অভিযুক্ত প্রার্থীকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না শাসক তৃণমূল। কেননা তাহলেই প্রার্থী তাঁর অনুগামীদের নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। এর জেরে বিপদে পড়বে দলই। তাই ইচ্ছে না থাকলেও বিশ্বাসঘাতক প্রার্থীকে প্রায় গলার কাঁটার মতোই সহ্য করতে হচ্ছে তৃণমূলকে। দলের সমূহ ক্ষতি আটকাতে একপ্রকার বিড়ম্বনায় তৃণমূল কংগ্রেস। অভিযুক্ত প্রার্থীর নাম রমেন্দ্রনাথ মণ্ডল। তিনি কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতিতে ইতিমধ্যেই জয়ী হয়েছেন। অভিযোগ, ভোটের দিন রমেনবাবু নাকি বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন বিরোধী বিজেপিকে। এই অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমাণ পেয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।

 [রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসায় বলি আরও ১, মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৪]

Advertisement

জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের কাঁকসায় তৃণমূলের অন্তর্কলহ প্রায় সর্বজনবিদিত। অভিযোগ, সমিতিতে জয়ী প্রার্থী রমেনের কৃপায় এই কলহেরই পুরো ফায়দা নিয়েছে বিজেপি। ভোটের দিন কাঁকসা জেলা পরিষদের এক নম্বর আসনের জন্যে মোট সাতটি বুথের দায়িত্ব পান রমেনবাবু৷ ছ’টি বুথ নিয়ে দলের কোনও অভিযোগ না থাকলেও ৬০ নম্বর বুথ নিয়েই মূল অভিযোগ৷ অভিযোগ,  এই বুথে থাকা দলীয় এজেন্টকে সকাল ন’টার সময়ই আচমকা তুলে নেন রমেন মণ্ডল৷ বিজেপির হয়ে ছাপ্পা দেওয়ারও ব্যবস্থা করে দেন বলে অভিযোগ৷ দলের কাছে এই ‘বিশ্বাসঘাতকতা’র খবর যেতেই তাঁকে বুথ থেকে সরে যেতে বলা হয়৷ কিন্তু তারপরও সক্রিয় ছিলেন রমেন মণ্ডল। বিকেলের দিকে এই বিপর্যয় আটকাতে দলের মহিলা সদস্যরা এলাকায় ঢুকতে গেলে তাদের তাড়িয়ে দেয় বিজেপি-সিপিএমের কর্মী সমর্থকরা৷ স্থানীয় তৃণমূলের অভিযোগ, এই ঘটনায় রমেনবাবুর প্ররোচনা ছিল৷ সবমিলিয়ে কাঁকসায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এখন চরমে। প্রার্থী রমেন্দ্রনাথ মণ্ডলকে নিয়ে নিয়ে ক্ষোভ দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। অর্থের বিনিময়ে প্রার্থী করারও অভিযোগ উঠেছে ওই কেন্দ্রে৷ সেখানে দলীয় প্রার্থীর এহেন দ্বিচারিত রীতিমতো বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

Advertisement

এদিকে দলীয় প্রার্থীর এই কীর্তির খবর পৌঁছেছে জেলা নেতৃত্বের কাছে। তবে এই ‘বিশ্বাসঘাতক’এর শাস্তি কী হবে তা নিয়ে চরম দোটনায় পড়েছে দল৷ দল বহিষ্কার করলে নির্দল পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য থেকে যাবেন রমেনবাবু৷ বিরোধীদের টোপ গিললে বিনা যু‌দ্ধে বিজেপি আস্ত একটা সদস্য লাভ করবে৷ এই বিষয়টাই ভাবাচ্ছে দলকে৷ বলাবাহুল্য, কাঁকসার গোপালপুরের ১২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য রমেন্দ্রনাথ মণ্ডল৷ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন তিনি৷ গতবছরও সিপিএমকে হারিয়ে কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধক্ষ্য ছিলেন। এবার দলের গ্রাম পঞ্চায়েতের মহিলা প্রার্থী কাঞ্চন ব্যাপারির সঙ্গে তাঁর বিবাদ চরমে ওঠে৷ প্রচার শেষেও দু’জনের অনুগামীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়৷ এই সংঘর্ষে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থী কাঞ্চনদেবীকে হেনস্তা, মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ৷ সবখবরই জানত তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই রমেন মণ্ডল নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভেরও অন্ত নেই।

[কোচবিহারে অবাক কাণ্ড! ব্যালট বাক্স কুড়িয়ে পেয়ে বানানো হল মুড়ির টিন]

এই প্রসঙ্গে অভিযুক্ত প্রার্থী রমেন মণ্ডল বলেন, “আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক৷ দল যা সিদ্ধান্ত নেবে তা মানতে বাধ্য৷ তবে আমাকে শাস্তি দেওয়ার আগে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হোক৷”  রমেনবাবুর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ,  তিনি ভোটের দিন যা করেছেন তা দলের জেলা নেতৃত্বের নির্দেশ মেনেই করেছেন৷ দলের তরফে সংশ্লিষ্ট নেতাদের খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়েছে। যাঁদের নির্দেশে বিজেপিকে সহায়তা করেছিলেন রমেন মণ্ডল। দলের সভাপতি ভি শিবদাসন দাশু বলেন, “বিজেপিকে সাহায্য করেছেন রমেনবাবু৷ দলের কাছে এই অভিযোগের পক্ষে প্রমাণও এসেছে৷ পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল প্রকাশের পরই উপযুক্ত ব্য়বস্থা নেওয়া হবে। টাকা নিয়ে প্রার্থী করারও অভিযোগ এসেছে৷ তাও নিয়ে তদন্ত করবে দল৷”  দলের জয়ী প্রার্থীকে বহিষ্কার করলে ভবিষ্যতে বিপদের সম্ভাবনা প্রবল। তৃণমূলের এই বিপদে পালটা চাল দিয়েছে বিজেপিও৷ বিজেপির আসানসোল জেলা সভাপতি লক্ষণ ঘোরুই জানান, “ কাঁকসায় তৃণমূল নিজেদের গোষ্ঠী কোন্দল সামলাতে ব্যর্থ হয়েছে৷ প্রার্থী নিয়েও সন্তুষ্ট নয় দলের কর্মীরা৷ তলে তলে অনেকে শুধু যোগাযোগই রাখছে না বিজেপিকে সাহায্যও করছে৷ এবার ঠগ বাছতে গাঁ উজার হয়ে যাবে৷”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ