ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, বারাসত: পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী ছিলেন। বড় ব্যবধানে জিতলেনও। কিন্তু সেই জয় নিজে দেখতে পেলেন না হাবড়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল প্রার্থী বিপ্লব সরকার। বৃহস্পতিবার রাতে যখন তাঁর আসনের ফল ঘোষণা হচ্ছে, তখন তিনি কোমায়। ভোটের দিন দুষ্কৃতী হামলা হয় তাঁর উপর। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আইসিইউতে ভরতি করা হয় তাঁকে। শুক্রবার সকালে জয়ের উচ্ছ্বাসে যখন মাতোয়ারা গোটা জেলা, তখন কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বিপ্লববাবু। ভোটের লড়াইয়ে জিতেও, জীবনের লড়াইয়ে হেরে গেলেন হাবড়ার এই তরুণ তৃণমূল নেতা।
[২০ বছরের পুরনো পঞ্চায়েত বেদখল, দুধকুমারের নেতৃত্ব নিয়ে উঠছে প্রশ্ন]
ভোটের কাজ সেরে সোমবার হাবড়ার বেড়গুম দুই পঞ্চায়তের জামতলায় বাড়ির কাছের পার্টি অফিসে এসে বসেছিলেন বিপ্লব। সঙ্গে ছিলেন ওই এলাকারই তৃণমূলের পর্যবেক্ষক আইনজীবী অলোক দাসও। তৃণমূলের অভিযোগ, আচমকা সেই পার্টি অফিসে হামলা চালায় বিজেপি। বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী লাঠি, বাঁশ নিয়ে ওই পার্টি অফিসে ঢুকে পড়ে। বিপ্লবকে পার্টি অফিস থেকে টেনে বের করে, রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, তাঁর সারা শরীর রক্তাক্ত হয়ে যায়। আশঙ্কজনক অবস্থায় তাঁকে প্রথম হাবড়া হাসপাতাল, সেখান থেকে বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে পরে কলকাতার বাইপাস সংলগ্ন এক বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। তাতেও বিপ্লবকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
[মাত্র দুই ভোটে হেরেছে প্রার্থী, আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বিজেপির]
এদিনই হাবড়া পৃথিবা অঞ্চলের যশুরে দুই তৃণমূল কর্মীকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে একজন উজ্জ্বল সুর ঘটনাস্থলেই মারা যান। অপরজনকে বারাসত হাসপাতালে ভরতি করা হয়। মঙ্গলবার সকালে সেখানেই মৃত্যু হয় সুশীল দাস নামে ওই যুবকের। ওই এলাকার বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সরাসরি বিজেপি-র বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেন, “পশুর মতো কাজ করেছে বিজেপি। হাবড়ায় আমাদের তিনজন কর্মীকে খুন করা হল। এমনকী প্রার্থীকেও ছাড়েনি।”