বিপ্লব দত্ত ও পলাশ পাত্র: যে জিতবে সেই হবে প্রধান। যেনতেন প্রকারে তাই জিতে আসতে সিপিএমের ঘরেও পদ্ম ফুটেছিল। ১৫ আসনের বেতাই ১ পঞ্চায়েতের নফরচন্দ্রপুর গ্রামের ১৯০ নম্বর বুথে তৃণমূল প্রার্থী বুড়িবালা সর্দার আর বিজেপি প্রার্থী অর্পিতা সর্দারকে নিয়ে জোর আলোচনা হয়েছিল। কারণ পঞ্চায়েতের প্রধান পদটি উপজাতি মহিলা সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছে। এই পঞ্চায়েতেরই প্রাক্তন প্রধান সিপিএময়ের সনাতন সর্দারের মেয়ে হলেন অর্পিতা সর্দার।
এই পঞ্চায়েতে ভারত-বাংলাদেশের কাঁটাতার লাগোয়া গ্রাম নফরচন্দ্রপুর শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করল বুড়িবালা সর্দার। ৩৩ ভোটে হারিয়ে দিল বেতাই কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী অর্পিতাকে। বুড়িবালার প্রাপ্ত ভোট ৩৯১, অর্পিতার ৩৫৮। তাই বেতাই এক পঞ্চায়েতে বিজেপি ১১ ও তৃণমূল মাত্র ৪ টি আসন পেলেও প্রধান হতে চলেছেন বুড়িবালা। আদিবাসী অধ্যুষিত এই গ্রামে প্রায় পনেরোশো মানুষ বাস করে। তার মধ্যে ভোটার ৮৭৫ জন। পুরুষ ৪৫৫, নারী ৪২০ জন। বেতাই-১ পঞ্চায়েতের প্রধান পদটি উপজাতি মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায় ১৯০ বুথের আসনটি চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। গত পঞ্চায়েতে বিজেপির একটি আসনও এখানে পায়নি। সিপিএম দুটি ও বাকি আসনগুলি তৃণমূল দখল করে। ঘটনা প্রসঙ্গে তেহট্ট এক-এর জয়েন্ট বিডিও বিধান বিশ্বাস বলেন, “এই পঞ্চায়েতে প্রধান পদটি উপজাতি মহিলা সংরক্ষিত। কাজেই ১৯০ বুথ থেকে যে জিতবে সেই প্রধান হবে। এক্ষেত্রে বুড়িবালা সর্দার জেতায় তিনিই প্রধান হবেন।”
[কর্ণাটকের মসনদে জোট না বিজেপি? উত্তর মিলবে গোধূলি লগ্নে]
গত দুবারের পঞ্চায়েত সদস্য বুড়িবালা সর্দার এই আসনে নিঃসন্দেহে হেভিওয়েট প্রার্থী ছিলেন। উল্টোদিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে ছিল বিরোধী প্রার্থী একজনই, কলেজ ছাত্রী অর্পিতা সর্দার। এই পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান (১৯৯৮ সালে) কমরেড সনাতন সর্দারের মেয়ে অর্পিতা সর্দার। বেতাই কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রীটি কমরেড বাবার পাঠশালায় রাজনীতির পাঠ নেন। এবার অবশ্য বিজেপি প্রার্থী হয়ে লড়াই করলেন। সমানে সমানে টক্কর হলেও শেষ হাসি হাসলেন বুড়িবালাদেবী। বছর তিনেক আগে নদিয়ার জেলাশাসক বিজয় ভারতী সীমান্তের এই গ্রামটিতে গিয়ে মডেল গ্রামের জন্য চিন্তা ভাবনা করেন। তারজন্য প্রচুর কাজ করা হয়। রাস্তা, পানীয় জল, বিশ্রামগার, দুটি অঙ্গনওয়াড়ি স্কুলও হয়। এখানে রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জুনিয়র হাই স্কুল। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, বৈদ্যুতিকীরণ থেকে একশো দিনের কাজে জেলায় ছাপ রেখেছে এই গ্রাম। এই কারণে একে মডেল করার জন্য চেষ্টা করা হয়। তবে কিছু কাঁটা রয়ে গিয়েছে। গোটা গ্রামে বসবাস করা মাহাতদের এস টি সার্টিফিকেট এখনও দেওয়া হয়নি। এই নিয়ে একটা ক্ষোভ রয়েছে। এই সমস্যার সমাধান চান বুড়িবালাদেবী। তিনি বলেন, “অন্য জায়গায় তারা সার্টিফিকেট পেলেও এখানে পায়নি। আমি এই কাজটা করতে চাই। এর পাশাপাশি গ্রাম ও পঞ্চায়েতের উন্নয়নে সকলকে নিয়ে কাজ করতে চাই। কোনও ভেদাভেদ রাখতে চাই না। ”
[বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছে তৃণমূলের কর্মীরা, দাবি দিলীপের]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.